দশ বিষয়কে কিয়ামতের আলামত বলেছেন নবিজি (সা.)
প্রিয় নবি হজরত মুহাম্মদ (সা.) কিয়ামত সম্পর্কে উম্মতকে সতর্ক করেছেন। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তা’আলা বলেছেন, ‘কিয়ামত সন্নিকটে’। কোরআনে আরও বর্ণিত হয়েছে—‘তারা শুধু এই অপেক্ষাই করছে যে, কেয়ামত অকস্মাৎ তাদের কাছে এসে পড়ুক। বস্তুত কেয়ামতের লক্ষণসমূহ তো এসেই পড়েছে। সুতরাং কেয়ামত এসে পড়লে তারা উপদেশ গ্রহণ করবে কেমন করে?’ (সূরা মুহাম্মদ, আয়াত : ১৮)
নবিজি (সা.) কিয়ামত সংঘটিত হওয়ার আগমুহূর্তের বেশ কিছু আলামতের কথা বলেছেন। এই আলামতগুলোর মধ্যে সর্বশেষ ও ভয়াবহ হলো দাজ্জালের আবির্ভাব ঘটা। দাজ্জাল কেয়ামতে ৪০ দিন আগে পৃথিবীতে আসবে এবং মানুষকে বিপৎগামী করতে সব ধরনের চেষ্টা চালাবে।
দাজ্জালের আবির্ভাবের বিষয়টি কোরআন-হাদিস সমর্থিত। সে মিথ্যা জান্নাত-জাহান্নামের চিত্র দেখিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করবে। হাদিসের বর্ণনামতে, ‘দ্রুতগামী বাতাস বৃষ্টিকে যেভাবে চালিয়ে নেয়, দাজ্জালের চলার গতিও সেরকম হবে।’(মুসলিম- কিতাবুল ফিতান)।
সহিহ মুসলিমে হুজাইফা (রা.) সূত্রে বর্ণিত, একদিন রাসুল (সা.) তাঁদের কাছে এলেন—তখন তাঁরা কিয়ামত সম্পর্কে আলোচনা করছিলেন। নবী (সা.) বললেন, যত দিন তোমরা ১০টি আলামত না দেখো, তত দিন কিয়ামত হবে না। সেই ১০টি আলামত হলো: ১. ধোঁয়া (দুখান)। ২. দাজ্জালের আগমন। ৩. ভূগর্ভ থেকে নির্গত দাব্বাতুল আরদ নামক অদ্ভুত এক প্রাণীর আগমন। ৪. পশ্চিম আকাশে সূর্যোদয়। ৫. ইসা ইবনে মারইয়াম (আ.)-এর আগমন। ৬. ইয়াজুজ-মাজুজের আবির্ভাব। ৭. পূর্বে ভূমিধস। ৮. পশ্চিমে ভূমিধস। ৯. আরব উপদ্বীপে ভূমিধস। ১০. সর্বশেষে ইয়েমেন থেকে একটি আগুন বের হয়ে সব মানুষকে সিরিয়ার দিকে হাঁকিয়ে নিয়ে যাবে।
শাইখ উছাইমীনকে প্রশ্ন করা হয়েছিল কেয়ামতের বড় বড় আলামতগুলো কি ধারাবাহিকভাবে আসবে? জবাবে তিনি বলেন, কেয়ামতের আলামতগুলোর মধ্যে কোনো কোনোটির ধারাবাহিকতা জানা গেছে, আর কোনো কোনোটির ধারাবাহিকতা জানা যায়নি। ধারাবাহিক আলামতগুলো হচ্ছে—ঈসা বিন মরিয়মের অবতরণ, ইয়াজুজ-মাজুজের বহিঃপ্রকাশ ও দাজ্জালের আত্মপ্রকাশ। প্রথমে দাজ্জালকে পাঠানো হবে। তারপর ঈসা বিন মরিয়ম এসে দাজ্জালকে হত্যা করবেন। তারপর ইয়াজুজ-মাজুজ বের হবে।

Comments are closed.