‘চীনকে নিষ্পেষণ করার চেষ্টা করলে মাথা রক্তাক্ত করা হবে’

বেইজিংয়ের তিয়ানানমেন স্কোয়ার যেন মানুষের ঢেউয়ে উত্তাল হয়ে উঠেছে। সেখানে জনতার উদ্দেশে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির (সিসিপি) শততম বর্ষপূর্তিতে গলা ছেড়ে বক্তব্য রাখলেন প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। যুক্তরাষ্ট্রের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, চীন অন্য কোনো দেশকে চাপে ফেলে না। কেউ যদি চীনকে চাপে ফেলতে চায় তাদেরকে তিনি হুঁশিয়ারি দিলেন। বললেন, তাদের মাথা রক্তাক্ত করে দেয়া হবে স্টিলের গ্রেট ওয়ালের ওপাড়ে। এ সময় জনতার উল্লাসে যেন ফেটে পড়ছিল তিয়ানানমেন স্কোয়ার। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। বৃহস্পতিবার সিসিপির শততম বর্ষের অনুষ্ঠানে সামরিক যুদ্ধজাহাজ ফ্লাই-পাস্টে অংশ নেয়।

কামান থেকে স্যালুট জানানো হয়। বাজানো হয় দেশাত্মবোধক গান।

অনুষ্ঠানে প্রায় এক ঘন্টা বক্তব্য রাখেন প্রেসিডেন্ট শি। এ সময় তিনি আধুনিক চীনে তার দলের ভূমিকা কি সে সম্পর্কে বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মূলে তার দল। জনগণের কাছ থেকে তাদেরকে আলাদা করার চেষ্টা করলে তা ব্যর্থ হবে। তিনি বলেন, শুধু সমাজতন্ত্র রক্ষা করতে পারে চীনকে। চীনের সমাজতন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত যেসব চরিত্র তারাই পারে চীনকে উন্নত করতে। চীনকে কখনোই কাউকে উৎপীড়ন, জুলুম অথবা পরাধীনে নিতে দেবো না। যদি কেউ সেটা করার সাহস দেখায় তাহলে গ্রেট ওয়ালের ওপাড়ে তাদের মাথা রক্তাক্ত করা হবে।

চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমিয়ে আনার জন্য যুক্তরাষ্ট্র চেষ্টা করছে বলে বার বার অভিযোগ করেছে চীন। ফলে শি জিনপিং যেসব মন্তব্য করেছেন, তা তিনি ওয়াশিংটনকে লক্ষ্য করে করেছেন বলে মনে করা হয়। এ সময় তিনি তাইওয়ানের উল্লেখ করে বলেন, চীন তার দ্বীপগুলোকে একীভূত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের এই সমাধানকে কারো খাটো করে দেখা উচিত নয়। চীনের মানুষের ইচ্ছা ও সক্ষমতা তাদের জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও ভূখ-ের অখ-তা রক্ষা করবে। হংকং এবং ম্যাকাউয়ের উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা উচ্চ মাত্রায় স্বায়ত্তশাসন ভোগ করছে। তাদেরকে যথাযথভাবে ‘একদেশ দুই নীতি’ বাস্তবায়ন করতে হবে।

১৯২১ সালে চাইনিজ কমিউনিস্ট পার্টি (সিসিপি) প্রতিষ্ঠিত হয়। দীর্ঘ গৃহযুদ্ধের পর ৭২ বছর আগে তারা ক্ষমতায় আসে। আজ তার শততম বর্ষ পালিত হচ্ছে। এর আগে বেইজিংয়ে বার্ডস নেস্ট স্টেডিয়ামে ‘দ্য গ্রেট জার্নি’ শিরোনামে একটি আর্ট পারফরমেন্স অনুষ্ঠিত হয় সোমবার। এতে দল ও দেশ উভয় বিষয়ে ইতিহাস তুলে ধরা হয়। কিন্তু সেই ইতিহাসে কালচারাল রেভ্যুলুশন, ১৯৮৯ সালে তিয়ানানমেন স্কোয়ারের বিক্ষোভ, হংকংয়ে গণতন্ত্রপন্থিদের বিক্ষোভের কথা ছিল না। এপ্রিল থেকে সিনেমা হলগুলোকে নির্দেশ দেয়া হয় প্রচারণামূলক ছবি দেখাতে। এসব ছবি ‘রেড ফিল্ম’ হিসেবে পরিচিত। সপ্তাহে দু’বার এসব ছবি দেখাতে নির্দেশ দেয়া হয়। এ ছাড়া যে সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়েছে তার পুরোটাতে চীনের অর্জন তুলে ধরে তার প্রশংসা করা হয়েছে।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.