×
নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত : তারিখ - ২০২৫-০১-০১, সময় - ০৯:৫২:৪২বহির্বিশ্বের দাসত্ব শিকল থেকে মুক্ত হয়ে শক্ত পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে লাল সবুজের দেশ। ধ্বংস হয়ে যাওয়া অর্থনীতি পুনরুদ্ধার করে রচিত হবে স্বনির্ভর বাংলাদেশের রূপকল্প। অতীতের দুঃখ দুর্দশার স্মৃতি মুছে রচিত হবে নতুন অধ্যায়। রাজনৈতিক ঐক্যের হাত ধরে তৈরি হবে ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য। ২০২৫ সালে এমন প্রত্যাশা সাধারণ ছাত্র জনতার।
১৯৭১ সালে যে আকাঙখা নিয়ে মুক্তি সংগ্রামে ঝাপিয়ে পড়েছিল মুক্তিকামী জনতা, সেই একই মুক্তির আশায় গেল বছরও রক্তে লাল রঞ্জিত হয়েছে প্রিয় মাতৃভূমির জমিন।
৫২টা গ্লানিময় বছর শেষে করে ২০২৪ এসে দাঁড়িয়েছিল মানুষের ভোটাধিকার হরণের এক ডামি নির্বাচনের মধ্য দিয়ে। এরপর ভঙ্গুর অর্থনীতিতে মানুষের নাভিশ্বাস আর ফ্যাসিবাদের যাঁতাকলে পড়ে কত শত অধিকার বঞ্চিত হতে থাকলো প্রজাতন্ত্রের মালিক নামের সাধারণ জনগণ।
তবে সব বঞ্চনার কড়ায় গন্ডায় হিসেব বুঝিয়ে দিতে বছরের ঠিক মাঝামাঝিতে তরুণ ছাত্র জনতার রাজপথের লড়াই ছিল এক বিস্ফোরিত গণঅভ্যুত্থাণের দ্রোহযাত্রা। এর মাঝে কত প্রাণ অকালে ঝরেছে, কত দেহ ক্ষত বিক্ষত হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করে নিয়েছে, তবুও তাদের একটাই প্রত্যয় – মাতৃভূমি অথবা মূত্যু।
যে প্রজন্ম বড় হয়েছে দীর্ঘ সময়ের দুঃখ স্মৃতি নিয়ে , তারা চান আর যাতে পুনরাবৃত্তি না হয় সেই রক্তাক্ত সংঘাতের বিষাদময় অধ্যায়। ইতিহাসের পাতার মধ্য দিয়ে হেটে যাচ্ছে যে প্রজন্ম, তারা বলছেন- এই যে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের সূচনা হলো, সে উত্তরণটা যেন আরো বেশি স্থিতিশীল হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, দীর্ঘ সময় অতীতের দুঃখ স্মৃতি নিয়ে আমাদের এ প্রজন্ম বড় হয়েছি। আমরা চাই ২৪ পরবর্তী সময়ে ২৫ সালে যখন আমরা পা রাখবো তখন অতীতের যে কনফ্লিক্ট, আমাদের যে ব্লাডশেড আমাদের যে অধিকার ক্ষুণ্ন হয়েছে এই স্মৃতিগুলোর আর পুনরাবৃত্তি আমরা চাই না। আমরা চাই ২৫ টা আমাদের শুরু হোক ঐক্যের মধ্য দিয়ে। সংস্কারের মধ্য দিয়ে। এবং ঐক্য ও সংস্কারের সংমিশ্রণে আমাদের গণতান্ত্রিক যে যাত্রা নির্বাচনের দিকে ২৫ মধ্য দিয়ে আমরা সেখানে যেতে চাই।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা বলেন, ‘আই জাস্ট হোপ ২০২৫ সালে আমাদের যে নব উত্তরণ হয়েছে সেটাকে আমরা আরো স্ট্যাবল ফরমেশনের মধ্যে দেখতে পারবো।’
২০২৫ সালে তাদের প্রত্যাশা, সমাজে থাকবে না কোন বৈষম্য, মানুষ মানুষের মর্যাদা পাবে। প্রতিষ্ঠিত হবে ন্যায় বিচার। ফিরবে অর্থনীতির স্বনির্ভরতা। আর বিশ্বের দরবারে শক্তিশালী পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে বাংলাদেশ।
উমামা ফাতেমা বলেন, যখন ইউনূস ক্ষমতা নেন তখন তাদের কাছে কিন্তু শ্যাটারড দেশ। তাদের কিন্তু টুকরোগুলো জোড়া লাগাতে হচ্ছে। আমরা আশা করি ২০২৫ সালে বাংলাদেশে যুগান্তকারী একটা পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে। অন্ততআখতার হোসেন বলেন, একটা পয়েন্ট আছে এ দেশটাকে একটা মিনিমাম রাজনৈতিক বন্দোবস্তের মধ্যে নিয়ে যেতে হবে। এটা হচ্ছে আমাদের পলিটিক্যাল কমিটমেন্ট। যেটা আসলে রাজনৈতিক সংগঠনগুলোও করেছিল। বিএনপি বলি জামায়াত বলি সব পলিটিক্যাল পার্টির কিন্তু সেই ২০২৩ সাল থেকে একটা কমিটমেন্ট ছিল। ফ্যাসিবাদের ব্পিক্ষে যারা ছিল তাদের মধ্যে ঐক্য অটুট থাকুক। কারণ পরবর্তী বাংলাদেশকে যদি আমরা বিনির্মাণ করতে চাই জাতীয় ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই। তবে গণহত্যার বিচারের আগে কোনো নির্বাচন কাঠামোর মধ্যে আমরা ঢুকতে চাই না।
রাষ্ট্র বিজ্ঞানী অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান বলেন, ২০২৪ এ মানুষের মুক্তির যে সূত্রপাত হয়েছে, তার পুর্নতা পাক ২০২৫ এসে। এক্ষেত্রে বিগত ফ্যাসিবাদী সরকারের বিকল্প হয়ে উঠতে হবে জনগণকে। তিনি বলেন, এই রাষ্ট্র জনগণের অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান বলেন, ‘২০২৪ সাল হচ্ছে মুক্তির বছর। কিন্তু মুক্তির বিষয়টি তো দুইদিনের ব্যাপার না। এটা মুক্তির সূত্রপাত হলো। দাবি ছিল এর কোনো বিকল্প নাই। জনগণকে এটা প্রমাণ করতে হবে তার একটা বিকল্প আছে। সে বিকল্প হচ্ছে সমগ্র জনগণ। আমরা যেমন এক পরিবারের জায়গায় যেমন আরেক পরিবার চাই না এক নেতার পরিবর্তে আরেক নেতাও চাই না। জনগণের যে সম্পত্তি রাষ্ট্র সেটা যেন তাদের হাতে ফিরে আসে।’
জাতীয় ঐক্যের প্রশ্নে সলিমুল্লাহ খানবলেন, ফ্যাসিবাদী শক্তিকে বাইরে রেখেই জাতীয় ঐক্য সুসংহত করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধকে যারা বদভাবে ব্যবসায়ে পরিণত করেছিল তাদের বাদ দিয়ে ঐক্য করতে হবে। সবাইকে মিলে ঐক্য এটা কোনো জাতীয় ঐক্য নয়। ফ্যাসিবাদকে উৎখাত করার সংগ্রামে যারা যারা সংগ্রাম করেছিল তাদের সকলের কণ্ঠস্বর যেন আগামীতে দেশের নির্বাচন ব্যবস্থায় থাকে।সম্পত্তি, তা জনগণের হাতেই ফিরে আসতে হবে।
দালিলিক পরিবর্তন। এই যে এতো এতো প্রত্যাশা তার জন্যই প্রয়োজন জাতীয় ঐক্য। পঁচিশের প্রত্যাশা, অবশ্যই এই ঐক্য অটুট থাকুক ফ্যাসিবাদ বিরোধী সকল শক্তির মাঝে।
জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, ফ্যাসিবাদের বিরোধিতা পোষণে বাংলাদেশের সকল রাজনৈতিক দলগুলো একই সুরে কথা বলবে।