জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের (জিএম কাদের) ও
তার স্ত্রী শেরীফা কাদেরের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে আদালত।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এ সংক্রান্ত আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) ঢাকা মহানগর ভারপ্রাপ্ত সিনিয়র স্পেশাল জজ
আদালতের বিচারক ইব্রাহীম মিয়া এ আদেশ দেন।
মনোনয়ন বাণিজ্যের মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচারের অভিযোগে
জিএম কাদেরের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চালাচ্ছে দুদক। এর অংশ হিসেবে এ দম্পতির
বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করে সংস্থাটি।
দুদকের অভিযোগ বিষয়ে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনের পর
সংরক্ষিত নারী আসনে দলীয় মনোনয়ন দিতে ১৮ কোটি ১০ লাখ টাকার ঘুষ গ্রহণ করা
হয়, যার মূল সুবিধাভোগী ছিলেন তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জিএম কাদের।
অভিযোগে বলা হয়, চুক্তি অনুযায়ী অর্থ পরিশোধ না করায় অধ্যাপক মাসুদা
এম রশীদ চৌধুরীকে দলীয় পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় এবং তার স্থলে জিএম
কাদেরের স্ত্রী শরীফা কাদের সংসদ সদস্য হন।
এতে আরও বলা হয়, জিএম কাদের জালিয়াতির মাধ্যমে জাতীয় পার্টির
চেয়ারম্যান হন এবং দলীয় পদ বাণিজ্য ও মনোনয়ন বাণিজ্যের মাধ্যমে বিপুল অর্থ
সংগ্রহ করেন, যা পরে বিদেশে পাচার করা হয়। জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি
৩০১ সদস্যবিশিষ্ট হলেও বর্তমানে ৬০০ থেকে ৬৫০ জনকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে,
যা পদ বাণিজ্যের প্রমাণ।
২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে দাখিল করা হলফনামা অনুযায়ী, জিএম
কাদেরের নামে নগদ ৪৯ লাখ ৮৮ হাজার টাকা, ব্যাংকে ৩৫ লাখ ৯৫ হাজার টাকা এবং
৮৪ লাখ ৯৮ হাজার টাকা মূল্যের একটি জিপ গাড়ি রয়েছে।
আর তার স্ত্রী শরীফা কাদেরের নামে নগদ ৫৯ লাখ ৫৯ হাজার টাকা, ব্যাংকে
২৮ লাখ ৯ হাজার টাকা এবং ৮০ লাখ টাকা মূল্যের তারও একটি জিপ গাড়ি রয়েছে।
তার স্থাবর সম্পদের মধ্যে লালমনিরহাট ও ঢাকায় জমি ও ফ্ল্যাট রয়েছে।
১৯৯৬ সালে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া জিএম কাদের জাতীয় সংসদের
বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং ২০০৯-২০১৪ সাল পর্যন্ত
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী
ছিলেন।