চাঁদপুরের ইলিশের খ্যাতি দেশজুড়ে। দেশের বাইরেও রয়েছে এর ব্যাপক চাহিদা।
মাছের পাশাপাশি ইলিশের ডিমের চাহিদাও কম নয়। সাগর ও নদী থেকে ইলিশের
আমদানি কম হওয়ায় এবার বেড়েছে ডমের দামও। এক কেজি ডিম বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার
থেকে ৪ হাজার ২০০ টাকায়। দাম শুনেই অনেক ক্রেতা ফিরে যাচ্ছেন খালি হাতে।
মৎস্য ব্যবসায়ীরা জানান, ইলিশের ডিম সংরক্ষণ ও মাছগুলো লবণ দিয়ে
বিভিন্ন পর্যায়ে প্রক্রিয়াজাত করে প্রায় এক বছর সংরক্ষণের পর দেশের বিভিন্ন
জায়গায় পাঠানো হয়। তবে মাছ নরম হলেও ডিম তরতাজা থাকে। গত বছরের তুলনায়
এবার মাছ অনেক কম। ফলে বেশির ভাগ আড়তই বন্ধ হয়ে পড়েছে। তাই আমদানি কম হওয়ায়
ডিমের দাম বেড়েছে ।
রোববার (২৪ আগস্ট) দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, আড়তগুলোর কর্মচারীরা
নরম ইলিশ কেটে লবণ দিয়ে নোনা ইলিশ তৈরি করছেন। মাছের ডিমগুলো আলাদা করে
প্লাস্টিকের বক্সে করে সংরক্ষণ করছেন। তবে ঘাটে ১০ থেকে ১৫টি লোনা ইলিশ ও
ডিমের আড়ত থাকলেও মাত্র দুটি আড়ত চালু আছে। তাও আবার ইলিশ সরবরাহ কম থাকায়
অল্প কিছু পরিমাণ মাছ কাটতে দেখা গেছে। ফলে ডিমের দাম চড়া হওয়ার ক্রেতাদের
খালি হাতে ফিরে যেতে দেখা গেছে।
ইলিশের ডিম কিনতে আসা আমির হোসেন নামে একজন বলেন, ডিমের দাম অনেক
চড়া। আমি কিনতে চেয়েছিলাম। এক কেজি ডিম ৪ হাজার টাকা চেয়েছে। আমাদের মতো
মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য এটি কেনা কঠিন।
কুমিল্লা থেকে আসা রিফাত নামে এক ক্রেতা বলেন, ইলিশের ডিমের দাম প্রায় সাড়ে ৪ হাজার টাকা। আমার পক্ষে ডিম কেনা সম্ভব নয়।
চাঁদপুর মাছঘাটে ডিম কিনতে আসা আবু সুফিয়ান বলেন, ইলিশ মাছের অনেক
দাম। মাছের অতিরিক্ত দাম হওয়ায় আমরা চাঁদপুরের স্থানীয় বাসিন্দা হয়েও কিনতে
পারি না। বাসার সবাই ইলিশের ডিম অনেক পছন্দ করে। তাই চেয়েছিলাম ইলিশের ডিম
কিনতে কিন্তু ডিমেরও অনেক দাম। এক কেজি ইলিশের ডিমের দাম ৪ হাজার টাকা। এত
টাকা দিয়ে ডিম খাওয়ার সামর্থ্য আমাদের নেই। তাই খালি হাতে ফিরে যাচ্ছি।
ইলিশের আড়তদার মুসলিম মিয়া বলেন, এখন ইলিশের মৌসুম। এ সময়ে যে পরিমাণ
ইলিশ আসার কথা সেই পরিমাণ ইলিশ আসছে না। যার কারণে দামে বেশি। দেশের
বিভিন্ন জেলা থেকে লোকজন এসে লোনা ইলিশের আড়ত পরিচালনা করেন। এবার ইলিশ
আমদামি কম হাওয়ায় লোনা ইলিশের মাত্র দুটি আড়ত চালু আছে। সাইজ অনুযায়ী
ইলিশের ডিমের কেজি ৪ হাজার থেকে ৪ হাজার ২০০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে।
আড়তদার নুরে আলম বলেন, এ ঘাটে ইলিশ একেবারে কম আসে। এক মণ ইলিশ কাটলে
ডিম হয় ৪-৫ কেজি। প্রতি বছর ইলিশের মৌসুমে দেশের স্থান থেকে লোকজন এসে
ইলিশের লোনা করতো। এবার ইলিশ কম সরবরাহ কম থাকায় তারা আসছে না। অল্প কিছু
ইলিশ থেকে দু-একটি আড়তে ইলিশের লোনা করা হয়। যার কারণে ডিমের দাম বেশি।
ইলিশের আড়তদার নুর নবী বলেন, এ বছর ইলিশের আমদামি কম। তাই ইলিশের
ডিমের দাম অনেক বেশি। গত বছর ছিল ৩ হাজর টাকা কেজি। এবার ৪ হাজার টাকা
কেজি।
লোনা ইলিশ বিক্রেতা আলী আকবর বলেন, ইলিশ কম আসে, দাম বেশি । আগে ১৫টি
ঘরে ইলিশ লোনা করতো। এখন দুটি ঘরে লোনা ইলিশ তৈরি করে। তাই ডিমের দাম
বেশি।
চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. শবেবরাত সরকার
বলেন, চাহিদা অনুযায়ী মাছ কম। যার কারণে ডিমের দাম চড়া। বর্তমানে ৪ হাজার
থেকে ৪ হাজার ২০০ টাকায় এক কেজি ডিম পাইকারি মূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে।
মাছের আমদানি কমে যাওয়ায় ডিমের দাম বেড়ে গেছে।
এ জাতীয় আরো খবর..