×
নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত : তারিখ - ২০২১-০৯-২৯, সময় - ০৫:০৭:৪২করোনাভাইরাস মহামারির মোকাবেলায় দেশে শুরু হওয়া টিকাদান কর্মসূচির আওতায় গত মঙ্গলবার পর্যন্ত প্রথম ডোজ টিকা পেয়েছে মোট জনসংখ্যার প্রায় ১৯ শতাংশ। প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ মিলে মোট টিকাদানের ১৪ শতাংশই হয়েছে মঙ্গলবার এক দিনে। ওই দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন উপলক্ষে বিশেষ কার্যক্রমের আওতায় ৭৫ লাখসহ ৮০ লাখ ডোজ টিকা দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়। তবে ঢাকা সাড়া কম পাওয়ায় লক্ষ্য অর্জন পুরোপুরি সম্ভব হয়নি। গতকালও বিশেষ কার্যক্রমের আওতায় টিকা দেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরও বিষয়টিকে তাদের টিকাদানে সক্ষমতার বড় প্রমাণ বলে মনে করছে। অন্যদিকে এখন পর্যন্ত দেশে জনসংখ্যা বিবেচনায় বিভাগ হিসেবে সবচেয়ে বেশি টিকা পেয়েছে ঢাকা বিভাগের মানুষ আর জেলা হিসেবে রাঙামাটির মানুষ। যদিও দ্বিতীয় ডোজে সবচেয়ে এগিয়ে আছে চট্টগ্রাম বিভাগ।
ঢাকায় প্রধানত চারটি কারণে প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে বিশেষ টিকাদান কর্মসূচিতে তুলনামূলক সাড়া কম পড়েছে। এগুলো হচ্ছে সার্ভারের সমস্যা, গ্রামের তুলনায় ঢাকায় প্রচার কম হওয়া, নিয়মিত কেন্দ্রগুলোকে ক্যাম্পেইনের বাইরে রাখা এবং সিনোফার্মের চেয়ে অন্য টিকার প্রতি ঢাকার মানুষের আগ্রহ বেশি থাকা। টিকাসংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা এমন অভিমত ও তথ্য দিয়েছেন।
গতকাল ঢাকার বিভিন্ন কেন্দ্রে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যেসব কেন্দ্রে নিয়মিত হিসেবে ফাইজার দেওয়া হয়েছে, সেখানে ওই দিনও মানুষের ভিড় ছিল তুলনামূলক বেশি। আর ঢাকার বাইরে যেহেতু একটি টিকার (সিনোফার্মের) সুযোগই ছিল, তাই সেখানে মানুষ ওই টিকা নেওয়ার জন্যই ভিড় করছে বেশি। অবশ্য মানুষের এই প্রবণতা দূর করার আহ্বান জানিয়েছেন জনস্বাস্থ্যবিদরা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উপদেষ্টা ড. মুশতাক হোসেন বলেন, গ্রামের তুলনায় ঢাকার বিশেষ কার্যক্রমের প্রচার কম হয়েছে। অনেক মানুষই জানতে পারেনি। আবার নিয়মিত কেন্দ্রগুলো থেকে অনেক মানুষকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। টিকার পছন্দ-অপছন্দের বিষয়টি থাকলেও তা খুব বেশি মানুষের ছিল না।
যদিও গত মঙ্গলবার দেশজুড়ে টিকা উৎসবের পরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম বলেন, এক দিনে রেকর্ডসংখ্যক টিকা দেওয়ার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ কভিডের টিকা দেওয়ায় নতুন সক্ষমতা অর্জন করল। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনে বিশেষ কার্যক্রমের আওতায় ৭৫ লাখ টিকাদানের ঘোষণা দেওয়া হয়। লক্ষ্যমাত্রার শতভাগ অর্জন না হলেও ৯০.১২ শতাংশ লক্ষ্যে পৌঁছানোও বিশাল একটি অর্জন। পর্যাপ্ত টিকা নিশ্চিত হলে কত দ্রুত দেশের ৮০ শতাংশ মানুষকে টিকার আওতায় আনা যাবে সে সক্ষমতার প্রমাণ মিলেছে।
গত মঙ্গলবার বিশেষ কার্যক্রমে ঢাকার অনেক কেন্দ্রেই টিকাদানের গতি ছিল খুবই কম। সব মিলিয়ে ১৭৬ কেন্দ্রে টিকা দেওয়া হয়েছে মোট ৯১ হাজার ২৫০ ডোজ। এর মধ্যে প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে মাত্র ৭৬ হাজার ৪৭৭ জনকে। গড়ে প্রতি কেন্দ্রে টিকা দেওয়া হয়েছে মাত্র ৪৩৪ জনকে। কয়েকটি কেন্দ্রে টিকা দেওয়া হয়েছে ৫০-১০০ জনের মধ্যে। বেশির ভাগ কেন্দ্রেই ছিল ২০০-৫০০ জনের মধ্যে। এমনকি চারটি কেন্দ্রে টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছে যথাক্রমে ৫০, ৭৭, ৮৯ ও ৯৯ জন করে। সাতটি কেন্দ্রে টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছে ১০০-২০০ জনের মধ্যে।
মঙ্গলবার পর্যন্ত দেশে মোট টিকা দেওয়া হয়েছে চার কোটি ৮১ লাখ ৩৯ হাজার
৭৫২ ডোজ। এর মধ্যে প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে তিন কোটি ১৫ লাখ ছয় হাজার ১৭ জনকে
এবং দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে এক কোটি ৬৬ লাখ ৩৩ হাজার ৭৩৫ জনকে। প্রথম ডোজ
পেয়েছে মোট জনসংখ্যার প্রায় ১৯ শতাংশ। আর দুই ডোজ মিলে মোট টিকার ১৪ শতাংশ
বা ৬৭ লাখ ৫৫ হাজার জনকে দেওয়া হয়েছে গত মঙ্গলবার এক দিনে। ওই দিন শুধু
প্রথম ডোজই পেয়েছে ৬৬ লাখ ২৫ হাজার ১২৩