×

  • নিউজ ডেস্ক

    প্রকাশিত : তারিখ - ২০২৫-১২-১৮, সময় - ১৪:০৯:৩০
আক্কেল দাঁত, যাকে থার্ড মোলারও বলা হয়। সাধারণত ১৮ থেকে ২৫ বছর বয়সের মধ্যে মাড়ির একেবারে শেষ প্রান্তে ওঠে থাকে এই দাঁত। এই দাঁত ওঠা বা এর সঙ্গে সম্পর্কিত ব্যথা একটি সাধারণ অভিজ্ঞতা।

দাঁতে তীব্র ব্যথা বা সংক্রমণের মতো সমস্যা দেখা দিলেও অনেকে এটি তুলতে দ্বিধা করেন।


এর কারণ মূলত দুটি—অস্ত্রোপচারের ভয় এবং আক্কেল দাঁত তুলে ফেললে ভবিষ্যতে কোনো ক্ষতি হবে কি না, সেই উদ্বেগ। আক্কেল দাঁত তুলে ফেলার প্রয়োজনীয়তা, এটি না তুললে কী হতে পারে এবং অপসারণের পর সম্ভাব্য ঝুঁকি নিয়ে বিজ্ঞান কী বলছে, তা জানুন আজকের প্রতিবেদনে।

 
আক্কেল দাঁত কেন সমস্যা সৃষ্টি করে

বর্তমানে অনেক মানুষের চোয়ালে সাধারণত আক্কেল দাঁতের জন্য পর্যাপ্ত জায়গা থাকে না। যখন এই দাঁত ওঠে, তখন তা প্রায়শই কিছু সমস্যার সৃষ্টি করে থাকে।


সেগুলো হলো—
আংশিক ওঠা : যখন দাঁতটি পুরোটা না উঠে মাড়ির হাড় বা অন্য দাঁতের সঙ্গে আটকে যায়, তখন তাকে ইমপ্যাক্টেড উইজডম টিথ বলা হয়। এটিই ব্যথার প্রধান কারণ।
সংক্রমণ : ইমপ্যাক্টেড দাঁতের চারপাশে খাদ্য কণা জমে সহজেই ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হয়, যা মাড়িতে ফোলা এবং তীব্র ব্যথা সৃষ্টি করে।
অন্য দাঁতে চাপ : আক্কেল দাঁত সামনের দাঁতে চাপ দিলে দাঁতগুলো বেঁকে যেতে পারে বা ক্ষয় হতে পারে।
 
আক্কেল দাঁত তুলে ফেললে কি কোনো ক্ষতি হতে পারে?

সঠিক ডেন্টাল সার্জারি এবং বিশেষজ্ঞের মাধ্যমে আক্কেল দাঁত তুলে ফেললে সাধারণত কোনো দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি হয় না, বরং অনেক ক্ষেত্রে এটি মাড়ি ও মুখ গহ্বরের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য।

দাঁত ফেলার উপকারিতা

ব্যথা ও সংক্রমণ মুক্তি : দাঁতটি তুলে ফেললে স্থায়ীভাবে ব্যথা, ফোলা এবং সংক্রমণের ঝুঁকি দূর হয়।
দাঁতের সারিবদ্ধতা রক্ষা : এটি সামনের দাঁতগুলোতে চাপ দেওয়া বন্ধ করে, ফলে দাঁতের সারিবদ্ধতা বা সোজা থাকা বজায় থাকে।
ওরাল হাইজিন উন্নত করা : মাড়ির শেষ প্রান্তে থাকায় এই দাঁত পরিষ্কার করা কঠিন। তুলে ফেললে ওরাল হাইজিন বজায় রাখা সহজ হয়।

সম্ভাব্য ঝুঁকি

আক্কেল দাঁত তোলার পর কিছু সাময়িক ঝুঁকি বা সমস্যা দেখা দিতে পারে, যা সময়ের সঙ্গে ঠিক হয়ে যায়। সেগুলো হলো—

শুষ্ক গর্ত : এটি সবচেয়ে সাধারণ জটিলতা, যেখানে দাঁত তোলার পর তৈরি হওয়া রক্তের ডেলা স্থানচ্যুত হয়ে যায়। এতে তীব্র ব্যথা হয়।
ফোলা ও রক্তপাত : অস্ত্রোপচারের পর সাময়িকভাবে মুখ ফোলা বা রক্তপাত হতে পারে।
সংলগ্ন স্নায়ুর ক্ষতি : খুব কম ক্ষেত্রে অপারেশনের সময় পার্শ্ববর্তী স্নায়ু সামান্য ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, যা ঠোঁট বা জিভের সাময়িক অসাড়তার কারণ হতে পারে।


কখন আক্কেল দাঁত তোলার প্রয়োজন নেই?
যদি আক্কেল দাঁত সম্পূর্ণ সুস্থ থাকে, কোনো সমস্যা সৃষ্টি না করে, সম্পূর্ণ সোজাভাবে ওঠে, পরিষ্কার করা সহজ হয় এবং অন্য দাঁতে চাপ না দেয় তাহলে অনেক ডেন্টিস্ট এটিকে না তোলার পরামর্শ দেন।

শেষকথা
আক্কেল দাঁত তুলে ফেলা একটি রুটিন ডেন্টাল পদ্ধতি এবং এর ফলে দাঁতের বা মুখের কোনো অপরিহার্য ক্ষতি হয় না। বরং, যদি এটি ইমপ্যাক্টেড হয় বা ক্রমাগত সংক্রমণ সৃষ্টি করে, তবে তুলে ফেলাই বুদ্ধিমানের কাজ। কারণ, এটিকে ফেলে রাখলে তা পার্শ্ববর্তী সুস্থ দাঁতকেও ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ডেন্টাল সার্জন বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস

নিউজটি শেয়ার করুন



এ জাতীয় আরো খবর..
ইউটিউবে আমরা...
ফেসবুকে আমরা...