×

  • নিউজ ডেস্ক

    প্রকাশিত : তারিখ - ২০২৫-১২-১৭, সময় - ০৬:২০:২২

আল্লাহ তায়ালা মানুষকে তার বাহ্যিক চেহারা, সামাজিক অবস্থান কিংবা আর্থিক সামর্থ্যের মাধ্যমে মূল্যায়ন করেন না। বরং তিনি মানুষকে মূল্যায়ন করেন কর্মের ভিত্তিতে। ইসলামের এই মৌলিক শিক্ষা ব্যক্তি ও সমাজ উভয় ক্ষেত্রেই আত্মসমালোচনা ও নৈতিক জবাবদিহির পথ তৈরি করে।

 

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের চেহারা ও ধন-সম্পদের প্রতি দৃষ্টিপাত করেন না; বরং তিনি দৃষ্টি দিয়ে থাকেন তোমাদের অন্তর ও আমলের প্রতি। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২৫৬৪)

হাদিসের এই বাণী আমাদের সামাজিক মূল্যায়নের মানদণ্ড নতুন করে ভাবতে বাধ্য করে।

 
 

মূল্যায়নের ভুল মানদণ্ড

যেকোনো সমাজেই মানুষকে পরিমাপ ও মূল্যায়নের প্রবণতা থাকে। কিন্তু সেই মূল্যায়ন যদি ভুল মানদণ্ডে দাঁড়ায়, তবে তা উদাসীনতা ও দায়হীনতার পরিবেশ তৈরি করে।

 
 

অনেক সময় আমরা মানুষকে তার আয়-রোজগার, গাড়ি-বাড়ি, সঞ্চয় কিংবা সামাজিক অবস্থান দেখে বিচার করি। আবার কেউ কেউ গায়ের রং, উচ্চতা-ওজন, বয়স, জন্মস্থান, ভাষা বা সংস্কৃতির ভিত্তিতে অন্যকে বিচার করেন ।

 

এসবের অধিকাংশের ওপর মানুষের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। জন্মস্থান বা গায়ের রং যেমন মানুষের পছন্দের বিষয় নয়, তেমনি সম্পদের ক্ষেত্রেও সবার সুযোগ-পরিস্থিতি এক নয়। তাই এসব বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে কাউকে বিচার করা ন্যায্য ও বিচক্ষণতা নয়।

সিদ্ধান্ত ও কর্মই আসল পরিচয়

মানুষের প্রকৃত পরিচয় গড়ে ওঠে তার সিদ্ধান্ত, বিশ্বাস ও পছন্দের মাধ্যমে। আমরা কী বিশ্বাস করব, কোন মূল্যবোধ গ্রহণ করব, জীবনের উদ্দেশ্য কী হবে—এসব সিদ্ধান্ত আমাদেরই। সময় কোথায় ব্যয় করব, সম্পদ কীভাবে ব্যবহার করব, পড়াশোনা বা পরিশ্রম করব কি না সবই আমাদের সিদ্ধান্তের ফল।

কারো বিপদে সাহায্য করব কি না, ব্যবসায় প্রতারণা করব নাকি সততা বজায় রাখব, উসকানিতে রাগ সংযত করব নাকি ক্ষোভ দেখাব প্রতিটি কাজের পেছনেই রয়েছে সচেতন বা অচেতন সিদ্ধান্ত। আমাদের আমল আসলে আমাদের সিদ্ধান্তেরই প্রতিফলন।

বিচার নয়, সচেতনতা জরুরি

ইসলাম আমাদেরকে মানুষকে তার পরিস্থিতি, চেহারা বা শ্রেণির ভিত্তিতে বিচার না করার শিক্ষা দেয়। কাউকে মূল্যায়নের আগে তার চিন্তা-চেতনা, বিশ্বাস ও কর্ম সম্পর্কে জানার চেষ্টা করা উচিত। একই সঙ্গে নিজের অনুকূল অবস্থান নিয়ে অহংকার না করে মনে রাখা জরুরি, আল্লাহর কাছে আসল মানদণ্ড হলো হৃদয়ের অবস্থা ও তার প্রতিফলন হিসেবে করা কাজ।

আল্লাহর দরবারে মানুষের পার্থক্য গড়ে দেয় তার অন্তরের নিয়ত এবং সেই নিয়ত থেকে উৎসারিত আমল। অর্থাৎ, বাহ্যিক চাকচিক্য নয়, সিদ্ধান্ত ও কর্মই মানুষের প্রকৃত মর্যাদা নির্ধারণ করে।

 

নিউজটি শেয়ার করুন



এ জাতীয় আরো খবর..
ইউটিউবে আমরা...
ফেসবুকে আমরা...