দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশ ভিয়েতনামের পূর্ব উপকূলের দিকে ধেয়ে যাচ্ছে
শক্তিশালী টাইফুন কাজিকি। এই টাইফুনের তাণ্ডবের আশঙ্কায় ৩ লাখেরও বেশি
বাসিন্দাকে উপকূলীয় এলাকা থেকে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করেছে দেশটির
কর্তৃপক্ষ। ইতোমধ্যে টাইফুনের প্রভাবে বিমানের এক ডজনেরও বেশি অভ্যন্তরীণ
ফ্লাইট বাতিল করেছে দেশটির বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ।
ভিয়েতনামের কৃষি ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ে বলেছে, উপকূল লাগোয়া পাঁচটি
প্রদেশের ৩ লাখ ২৫ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি বাসিন্দাকে স্কুল ও সরকারি বিভিন্ন
ভবনে সরিয়ে নেওয়া হবে।
এসব প্রতিষ্ঠান অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে রূপান্তর করা হয়েছে। এদিকে,
দেশটির জাতীয় বিমান সংস্থা ভিয়েতনাম এয়ারলাইন্স ও ভিয়েতজেট তাদের বেশ
কিছু ফ্লাইট বাতিলের ঘোষণা দিয়েছে।
আগামীকাল (সোমবার) ভিয়েতনামের পূর্ব উপকূলে টাইফুন কাজিকি আঘাত
হানতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ
সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, ‘‘পরিস্থিতি অত্যন্ত বিপজ্জনক এবং পর্যটন বা মাছ
ধরার নৌকা, এমনকি মাছ চাষের খামারগুলোর জন্যও নিরাপদ নয়।’’
যুক্তরাষ্ট্রের জয়েন্ট টাইফুন ওয়ার্নিং সেন্টার (জেটিডব্লিউসি)
বলেছে, টাইফুন কাজিকি বর্তমানে ধীরে ধীরে চীনের দক্ষিণ উপকূল বরাবর অগ্রসর
হচ্ছে। এই টাইফুনের কেন্দ্রে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৬৭
কিলোমিটার। তবে কাজিকির আঘাত হানার সময় বাতাসের গতিবেগ আরও বৃদ্ধি পেতে
পারে।
চীনের আবহাওয়া প্রশাসন বলেছে, ভিয়েতনামের হা তিনহ ও এনহে আনের কিছু
এলাকায় সোমবার ও মঙ্গলবার ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। টাইফুনের কারণে দেশটির
বিদ্যুৎ, পরিবহন খাতের সেবায় বিঘ্ন ঘটতে পারে।
চলতি বছরে ভিয়েতনামে পঞ্চম ক্রান্তীয় ঝড় হিসেবে আঘাত হানতে যাচ্ছে
টাইফুন কাজিকি। দেশটিতে চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে প্রাকৃতিক বিভিন্ন
দুর্যোগে শতাধিক মানুষ নিহত অথবা নিখোঁজ হয়েছেন। দেশটির কৃষি মন্ত্রণালয়
বলেছে, প্রাকৃতিক এই বিপর্যয়ে অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ ২ কোটি ১০ লাখ
মার্কিন ডলারেরও বেশি।
চীনের পর্যটন দ্বীপ হাইনানও টাইফুন কাজিকির কারণে জরুরি সতর্কতাকে
সর্বোচ্চ স্তরে উন্নীত করেছে। রোববার ওই দ্বীপের প্রায় ২০ হাজার
বাসিন্দাকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা
সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে। দ্বীপের প্রধান শহর সান্যার সব দর্শনীয় স্থান ও
ব্যবসা-বাণিজ্য স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে ভিয়েতনামের উত্তরাঞ্চলজুড়ে টাইফুন ইয়াগির
তাণ্ডবে ৩ দশমিক ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতি হয়। ওই
সময় দেশটিতে ইয়াগির তাণ্ডবে শত শত মানুষের প্রাণহানি ঘটে।
এ জাতীয় আরো খবর..