প্রান্তিক অঞ্চলে উচ্চ গতির ইন্টারনেট ব্যবস্থা নিশ্চিতের আহ্বান

২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত সাত মাসে দেশে শিশুর প্রতি নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে ১১৯৯টি। এছাড়াও ৪৬২ মেয়ে শিশু ধর্ষণের শিকার ও অর্ধশতাধিক শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র আগারগাঁও তে আয়োজিত ২০তম ”চাইল্ড পার্লামেন্ট’’ অধিবেশনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ, সেভ দ্য চিলড্রেন ইন বাংলাদেশ, অপরাজেয় বাংলাদেশ এবং ইয়েস বাংলাদেশ এর আয়োজনে উক্ত অনুষ্ঠানে ”চাইল্ড পার্লামেন্ট” (এনসিটিএফ) স্পীকার মরিয়ম আক্তার জ্বীমের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান।

সারা বাংলাদেশ থেকে ৬৪টি জেলার ১২৮ জন ”চাইল্ড পার্লামেন্ট” শিশু সাংসদ সদস্যরা এ অধিবেশনে অংশ গ্রহন করেন। অধিবেশনে চাইল্ড পার্লামেন্ট সদস্যরা  “ডিজিটাল বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা এবং শিশু সুরক্ষা” বিষয়ের উপর মন্ত্রীর নিকট বিভিন্ন সুপারিশমালা তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠানে সাংসদীয় বক্তব্যে শিশুরা প্রান্তিক অঞ্চলে উচ্চ গতির ইন্টারনেট ব্যবস্থা নিশ্চিতেরও আহ্বান জানান । তাদের সুপারিশ, আইসিটিতে পড়াশোনার সুযোগ বৃদ্ধির পাশাপাশি শিশুবান্ধব অনলাইন প্ল্যাটফর্ম এবং সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিতে পাঠ্যপুস্তকে প্রয়োজনীয় সংযুক্তি ও গণসচেতনতা বৃদ্ধি জরুরি।

এছাড়া, করোনা মহামারিতে অনলাইন শিক্ষাব্যবস্থায় ক্ষতিগ্রস্ত কম আয়ের পরিবারের পিছিয়ে পড়া শিশুদের জন্য সহজলভ্য ও সুলভমূল্যে ইন্টারনেট এবং ডিজিটাল ডিভাইস নিশ্চিতের আহ্বান জানায় শিশু সাংসদরা।

এবারের ”চাইল্ড পার্লামেন্ট” অধিবেশনে মূল আলোচনার প্রতিপাদ্য বিষয় ছিলো ”ডিজিটাল বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা এবং শিশু সুরক্ষা”। ন্যাশনাল চিলড্রেন’স টাস্কফোর্স (এনসিটিএফ) এর এডভোকেসি উইং-চাইল্ড পার্লামেন্ট এ পর্যন্ত মোট ১৯টি অধিবেশন সফলভাবে সম্পন্ন করেছে।

৮৬০ জন শিশুকে নিয়ে একটি জরিপ পরিচালনা করা হয় যার মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার বিশেষ অঞ্চলের শিশুদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, শিশুদের মধ্যে ডিজিটাল মাধ্যমের প্রবণতা, শিশু সুরক্ষা এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সরকারের কর্মসূচি এবং উদ্যোগের বিষয়গুলি তুলে ধরা হয়।

এছাড়াও এ ”চাইল্ড পার্লামেন্ট” অধিবেশনে ১৬টি বিশেষ অঞ্চল থেকে ৩২ (১৮ জন মেয়ে ও ১৩ জন ছেলে) চাইল্ড পার্লামেন্ট অংশগ্রহণ করে।

তারা জানান, মিডিয়া মনিটরিং ও জাতীয় পত্রিকার শিশু বিষয়ক উপরিস্থিতর রিপোর্ট অনুযায়ী করোনাকালীন সময়ে শিশুর প্রতি সহিসংতা আরো বেড়েছে। এ সময়ে সর্বমোট ৫৪৮ জন শিশু বিভিন্ন প্রকার নির্যাতনের শিকার হয়েছে। ২০২১ সালে জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত সাত মাসে শিশুর প্রতি নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে ১১৯৯টি। এছাড়াও ৪৬২ মেয়ে শিশু ধর্ষণের শিকার ও অর্ধশতাধিক শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে।

অধিবেশন শেষে পরিকল্পনা মন্ত্রী শিশু সাংসদ সদস্যদের প্রশ্ন উত্তর খন্ডন করে বলেন, সাইবার অপরাধ সর্ম্পকে আইন আছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা ও শিশু সুরক্ষার বিষয়ে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। সচেতনতার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, বাল্যবিবাহ রোধে আইন রয়েছে। তবে তারচেয়ে বেশি প্রয়োজন সকলের সচেতনতা ও সাহস। সাহস করে এই কুপ্রথা রুখে দাঁড়াতে হবে। বাংলাদেশ সরকার এই সমস্যা সমাধানে নিম্নআয়ের মানুষের আয় বৃদ্ধিতে কাজ করে চলেছে। ডিজিটাল লিটারেসি বৃদ্ধিতেও কাজ করে চলেছে বাংলাদেশ সরকার।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.