চীনের ১৪ প্রদেশে ছড়িয়েছে ডেলটা ভ্যারিয়েন্ট

চীনে নতুন করে ছড়িয়ে পড়েছে করোনা। শনিবার দেশটিতে ৫৫ জন শনাক্ত হয়েছে। এর আগের দিন শনাক্ত হয় ৬৪ জন। এ নিয়ে ২০ জুলাই থেকে গত ১০ দিনে দেশটিতে আক্রান্ত হয়েছে ২৬২ জন। আক্রান্তের অধিকাংশই ডেলটা ভ্যারিয়েন্টে সংক্রমিত। উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনা নিয়ন্ত্রণে বেশ সফল হলেও এখন ডেলটা ভ্যারিয়েন্ট ভাবাচ্ছে চীনকে। এদিকে চীনের মতো বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ছে এই ভ্যারিয়েন্ট। এ নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় দেশে দেশে লকডাউনের মতো কড়াকাড়ি আরোপ করা হচ্ছে। খবর রয়টার্স ও এএফপির।

চীনের স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, গতকাল করোনায় সংক্রমিত হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ২৫ জন স্থানীয়। এ ছাড়া আগের দিন ২১ জন স্থানীয় ব্যক্তি করোনায় সংক্রমিত হয়। নতুন শনাক্তদের অধিকাংশই করোনার ডেলটা ধরনে আক্রান্ত। তবে আক্রান্তদের সবাই ভালো আছে, তাদের সবার চিকিৎসা চলছে। চীনের ন্যাশনাল হেলথ কমিশনের মুখপাত্র মি ফেং বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ডেলটা ভ্যারিয়েন্ট আমাদের সামনে নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়ে হাজির হয়েছে। আশা করছি, পূর্ব অভিজ্ঞতা ও সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপের মাধ্যমে আমরা আবারও করোনাকে নিয়ন্ত্রণে আনতে পারব।

সম্প্রতি চীনে শনাক্ত করোনা রোগীর অধিকাংশই জিয়াংসু প্রদেশের বাসিন্দা। গত মাস থেকেই প্রদেশটিতে করোনার ডেলটা ধরনের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে। ২০ জুলাই ডেলটা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হওয়ায় জিয়াংসু প্রদেশের রাজধানী নানজিং শহরে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।

এদিকে ডেলটার মতো আরও মারাত্মক ভ্যারিয়েন্ট আসার বিষয়ে সতর্ক করে এখনই করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। জাতিসংঘের সংবাদভিত্তিক ওয়েবসাইট ইউএন নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, ডব্লিউএইচওর হিসাবে গত এক সপ্তাহে বিশ্বজুড়ে করোনা শনাক্তের সংখ্যা প্রায় ৪০ লাখ। এ ধারা অব্যাহত থাকলে আগামী দুই সপ্তাহে করোনায় সংক্রমিতের সংখ্যা ২০ কোটি ছাড়িয়ে যাবে। এখন পর্যন্ত বৈশ্বিক সংক্রমণের সিংহভাগের জন্য ডেলটা ধরনকে দায়ী করে ডব্নিউএইচও জানায়, গণটিকাদান কার্যক্রম চলার মধ্যেই বিশ্বের সব অঞ্চলে করোনা শনাক্তের হার বেড়েছে। বিশেষ করে গত মাসে কিছু অঞ্চলে নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ৮০ শতাংশ ছাড়িয়েছে। একই সময়ে আফ্রিকা মহাদেশে করোনায় প্রাণহানি ৮০ শতাংশ বেড়েছে।

ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালক টেড্রোস আধানম গেব্রিয়েসুস বলেন, ‘প্রতিটি দেশেই মহামারির প্রকৃত পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ। অনেক দেশেই করোনাবিষয়ক তথ্য অবমূল্যায়ন করা হয়েছে।’ ভাইরাসের বিস্তার নিয়ন্ত্রণের আগ পর্যন্ত আরও নতুন নতুন ভ্যারিয়েন্ট আসতে থাকবে বলে এ সময় সতর্ক করেন তিনি।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সিডিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনার ডেলটা ধরন শরীরকে ভয়াবহ মাত্রায় অসুস্থ করতে পারে। এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর টিকা নেওয়া ব্যক্তিদের চার দেয়ালের ভেতর মাস্ক পরার প্রয়োজন নেই বলে সিডিসি আগে যে নির্দেশনা দিয়েছিল, সেটিতে পরিবর্তন এনেছে সংস্থাটি। সিডিসি জানায়, করোনার ডেলটা ধরন মোকাবিলায় এখন টিকার সব ডোজ নেওয়া ব্যক্তিদেরও ইনডোরে মাস্ক পরার দরকার রয়েছে।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.