দক্ষিণ কোরিয়া এশিয়া তো বটেই, বিশ্ব ফুটবলেরই পরাশক্তি। বাংলাদেশ অ-২০
নারী ফুটবল দল সেই কোরিয়ার বিপক্ষে লড়ে যাচ্ছে। লাওসের ভিয়েনতিয়েনে এএফসি
অ-২০ নারী টুর্নামেন্টের বাছাই পর্বে গ্রুপের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশ-দক্ষিণ
কোরিয়া মুখোমুখি হয়েছে। প্রথমার্ধ শেষে দুই দলই ১-১ সমতায় রয়েছে।
খেলা শুরুর পর প্রথম আক্রমণই করেছে বাংলাদেশ। ফরোয়ার্ড মোসাম্মৎ
সাগরিকা প্রথম মুভেই গোলের উৎস রচনা করেছিলেন। কোরিয়ান গোলরক্ষক এগিয়ে আসায়
অবশ্য সেটা আর হয়নি। বাংলাদেশের গোলের জন্য বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি।
১৫ মিনিটে সংঘবদ্ধ আক্রমণে বাংলাদেশ লিড নেয়।
কাউন্টার অ্যাটাকে সাগরিকা ও শান্তি মারডি নিজেদের মধ্যে বল
দেয়া-নেয়া করে বক্সে প্রবেশ করেন। বক্সের বা দিক থেকে শান্তি বল বাড়ান।
কোরিয়ান গোলরক্ষকের হাতের নিচ দিয়ে বল সামনে আগায়। ফাঁকায় দাড়িয়ে থাকা
শ্রীমতী তৃষ্ণা রাণী টোকা দিয়ে বল জালে পাঠাতে ভুল করেননি। লাওসের
স্টেডিয়ামের গ্যালারীতে থাকা বাংলাদেশি প্রবাসীরা আনন্দে মেতে উঠেন।
বয়সভিত্তিক হলেও কোরিয়ার জালে বাংলাদেশের গোল, এটা ফুটবলে বড় আনন্দের
উপলক্ষ্যই।
বাংলাদেশ অবশ্য লিড বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারেনি। তিন মিনিট পরই কোরিয়া
খেলায় সমতা আনে। পিটার বাটলারের অধীনে বাংলাদেশ নারী দল হাই লাইন ডিফেন্স
করছে। সেন্টার লাইনের একটু নিচে থাকা বাংলাদেশের ডিফেন্স কোরিয়ার এক লং বল
পরাস্ত হয়। দ্রুতগতির কোরিয়ান ফরোয়ার্ডরা বাংলাদেশের ডিফেন্ডারদের পেছনে
ফেলে বক্সে বাংলাদেশের গোলরক্ষককে একা পেয়ে গোল করেন।
ম্যাচে সমতা আসার পর কোরিয়া বাংলাদেশকে চেপে ধরে। বাংলাদেশ দলের
অধিনায়ক আফিদা খন্দকারের উপর কিছু সময়ের জন্য ঝড় বয়ে যায়। তিনি অনেকটা
ঠান্ডা মাথায় পরিস্থিতি সামাল দিয়েছেন। আবার কিছু আক্রমণ দারুণ দক্ষতায়
প্রতিহত করেছেন গোলরক্ষক স্বর্ণা রাণী। প্রথমার্ধের ইনজুরি সময়ের শেষ
মিনিটে পোস্ট থেকে অনেক সামনে বেরিয়ে এসেছিলেন স্বর্ণা। কোরিয়ান ফরোয়ার্ডের
পায়ে বল থাকলেও তিনি প্রতিহত করতে সক্ষম হন। কোরিয়ার ফরোয়ার্ডরা গোল মিসও
করেছে একাধিক।
কোচ পিটার বাটলার প্রথমার্ধেই দুই জন খেলোয়াড় বদল করেছেন। গত ম্যাচে
অলিম্পিক গোল করা শান্তি মারডিকে আজ ২৫ মিনিটের মধ্যে উঠিয়ে নিয়েছেন।
কোরিয়াও একটি পরিবর্তন করেছে। বাংলাদেশ কোরিয়ার বিপক্ষে রক্ষণাত্মক কৌশলে
খেলেনি। সব দিক থেকে কোরিয়া এগিয়ে থাকলেও বাংলাদেশ জয়ের জন্যই খেলছে শুরু
থেকে। যা বাংলাদেশের নারী ফুটবলারদের মানসিকতা ও সাহসিকতার বড় উন্নতির
নির্দেশক।
এএফসি অ-২০ নারী টুর্নামেন্টের বাছাইয়ে ৩২ দল আট গ্রুপে খেলছে। আট
গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন ও সেরা তিন রানার্স আপ আগামী বছর থাইল্যান্ডে মূল পর্বে
খেলবে। বাংলাদেশ আজ কোরিয়ার বিপক্ষে ড্র করলে এইচ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হবে।
দুই দলেরই সমান সাত পয়েন্ট ও গোল ব্যবধান ১০ থাকবে। বাংলাদেশ কোরিয়ার চেয়ে
একটি বেশি গোল করায় গ্রুপ সেরা হবে। বাংলাদেশ হেরে গেলে তখন সেরা তিন
রানার্স আপ হওয়ার দৌড়ে থাকবে। এজন্য অবশ্য আজ গ্রুপের অন্য ম্যাচগুলোর
ফলাফলের জন্য খানিকক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে।
এ জাতীয় আরো খবর..