×

  • নিউজ ডেস্ক

    প্রকাশিত : তারিখ - ২০২৫-১২-২৩, সময় - ১১:১৮:১৯
যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকার মধ্যেই ফিলিস্তিনের গাজায় ব্যাপক হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল, এমনই অভিযোগ তুলেছে গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস। তাদের দাবি, ১০ অক্টোবরের পর থেকে যুদ্ধবিরতি চুক্তির শত শত লঙ্ঘনের ঘটনায় চার শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন এবং গাজায় মানবিক সংকট নজিরবিহীন পর্যায়ে পৌঁছেছে। খবর টিআরটি ওয়ার্ল্ড

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, গাজায় ১০ অক্টোবর যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৪১১ ফিলিস্তিনি নিহত এবং আরও ১ হাজার ১১২ জন আহত হয়েছেন। গাজার সরকারি মিডিয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, এই সময়ের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তির মোট ৮৭৫টি লঙ্ঘন নথিভুক্ত করা হয়েছে। সোমবার দেয়া এক বিবৃতিতে মিডিয়া অফিস জানায়, যুদ্ধবিরতির এসব লঙ্ঘনের মধ্যে বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে ২৬৫টি সরাসরি গুলিবর্ষণের ঘটনা, আবাসিক এলাকায় ৪৯ বার সামরিক অনুপ্রবেশ, ৪২১টি গোলাবর্ষণ এবং ১৫০টি বাড়িঘর ধ্বংসের ঘটনা রয়েছে।


বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়, যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় ইসরায়েল যে মানবিক দায়িত্ব পালনের কথা ছিল, তা তারা মানছে না। চুক্তি অনুযায়ী গাজায় ৪২ হাজার ৮০০টি ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশের কথা থাকলেও বাস্তবে ঢুকেছে মাত্র ১৭ হাজার ৮১৯টি ট্রাক। এ হিসাবে প্রতিদিন গড়ে ২৪৪টি ত্রাণবাহী ট্রাক গাজায় প্রবেশ করেছে, যা চুক্তিতে নির্ধারিত দৈনিক ৬০০ ট্রাকের তুলনায় অনেক কম। এতে চুক্তি মানার হার দাঁড়িয়েছে মাত্র ৪১ শতাংশ।

জ্বালানি সরবরাহের ক্ষেত্রেও একই চিত্র দেখা গেছে। যুদ্ধবিরতির আওতায় ৩ হাজার ৬৫০টি জ্বালানিবাহী ট্রাক প্রবেশের কথা থাকলেও গাজায় ঢুকতে দেয়া হয়েছে মাত্র ৩৯৪টি ট্রাক। এ হিসাবে প্রতিদিন গড়ে মাত্র পাঁচটি জ্বালানিবাহী ট্রাক গাজায় প্রবেশ করেছে, যেখানে চুক্তি অনুযায়ী প্রতিদিন ৫০টি ট্রাক ঢোকার কথা ছিল।

মিডিয়া অফিস জানায়, এর অর্থ হলো— চুক্তিতে নির্ধারিত জ্বালানির মাত্র ১০ শতাংশ সরবরাহ করা হয়েছে। এই সংকটের কারণে হাসপাতাল, বেকারি এবং পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা প্রায় পুরোপুরি অচল হয়ে পড়েছে, ফলে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ আরও বেড়েছে। বিবৃতিতে গাজায় ‘গভীর ও নজিরবিহীন মানবিক সংকটের’ সতর্কবার্তা দিয়ে বলা হয়, ইসরায়েল সীমান্ত ক্রসিং খুলতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে এবং তাঁবু, অস্থায়ী ঘর, কারাভ্যানসহ আশ্রয় সামগ্রী প্রবেশে বাধা দিচ্ছে।

মিডিয়া অফিসের মতে, এসব বিধিনিষেধ যুদ্ধবিরতি চুক্তি ও আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ইসরায়েলের ‘খামখেয়ালি নীতির’ কারণে সাম্প্রতিক শীতকালীন ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত ৪৬টি ভবন ধসে পড়েছে, এতে অন্তত ১৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

এই পরিস্থিতিতে গাজার মিডিয়া অফিস মধ্যস্থতাকারী দেশগুলো ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, যাতে দ্রুত ও নিরাপদভাবে মানবিক সহায়তা ও জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করা হয় এবং যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী আশ্রয় সামগ্রী প্রবেশের অনুমতি দেয়া হয়। তাদের মতে, এসব পদক্ষেপ না নিলে গাজায় চলমান মানবিক বিপর্যয় আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করবে।

নিউজটি শেয়ার করুন



এ জাতীয় আরো খবর..
ইউটিউবে আমরা...
ফেসবুকে আমরা...