×

  • নিউজ ডেস্ক

    প্রকাশিত : তারিখ - ২০২৫-০৭-২৪, সময় - ০৪:১৬:৪১

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশ থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে বহুদিনের সীমান্তবিরোধ নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। বৃহস্পতিবার বিতর্কিত সীমান্ত অঞ্চলে উভয় দেশের সেনাবাহিনী একে অপরের দিকে গুলি চালিয়েছে। দুই দেশই একে অপরের বিরুদ্ধে প্রথম গুলি চালানোর অভিযোগ তুলেছে।

এদিকে কম্বোডিয়ার সঙ্গে সীমান্তবিরোধের জেরে থাইল্যান্ডের সেনাবাহিনী একটি এফ-১৬ জঙ্গি বিমান মোতায়েন করেছে বলে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ সংঘর্ষে কমপক্ষে দুইজন থাই বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।

থাই সেনাবাহিনী জানায়, ছয়টি এফ-১৬ যুদ্ধবিমানের মধ্যে একটি বিমান কম্বোডিয়ার একটি সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা চালায়। উভয় দেশই বৃহস্পতিবার সকালে সংঘর্ষ শুরু করার দায় একে অপরের ওপর চাপিয়েছে।

থাই সেনাবাহিনীর উপ-মুখপাত্র রিচা সুকসুয়ানন বলেন, ‘আমরা পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী সামরিক লক্ষ্যে বিমানশক্তি ব্যবহার করেছি। তবে কম্বোডিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এ হামলার বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি।

সংঘর্ষের সূচনা হয় বৃহস্পতিবার ভোরে, থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার পূর্ব সীমান্তে অবস্থিত বিতর্কিত ‘তা মোয়ান থম’ মন্দির এলাকা ঘিরে। থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংকক থেকে প্রায় ৩৬০ কিলোমিটার দূরের এই সীমান্তে গোলাগুলি শুরু হলে উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়।

থাইল্যান্ডের সুরিন প্রদেশের কাভচিয়াং জেলার প্রশাসনিক প্রধান সুতথিরত চরোয়েনথানাসাক বলেন, ‘কম্বোডিয়ার দিক থেকে ছোড়া গোলাবারুদ সাধারণ মানুষের বাড়িঘরে পড়েছে। এতে দুইজন নিহত হয়েছেন এবং আশপাশের ৮৬টি গ্রাম থেকে ৪০ হাজার মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।’

কম্বোডিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী হুন সেন ফেসবুক পোস্টে জানান, থাইল্যান্ডের হামলায় কম্বোডিয়ার দুটি প্রদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এদিকে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সংঘর্ষে তাদের অন্তত দুই সেনা ও তিনজন বেসামরিক নাগরিক আহত হয়েছেন। গোলাগুলির মাঝে পড়ে এক বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া একটি পাঁচ বছর বয়সী শিশু আহতদের মধ্যে রয়েছে।

পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় থাই দূতাবাস তাদের নাগরিকদের কম্বোডিয়া ত্যাগের নির্দেশ দিয়েছে।

গত বুধবার থাইল্যান্ড কম্বোডিয়ায় নিযুক্ত তাদের রাষ্ট্রদূতকে ফিরিয়ে নেয় এবং ব্যাংককে নিযুক্ত কম্বোডিয়ান রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কারের ঘোষণা দেয়। এর আগে, বিতর্কিত সীমান্তে স্থাপিত একটি ভূমি মাইনে থাই সেনাবাহিনীর এক সদস্য পা হারান—যা গত এক সপ্তাহে দ্বিতীয়বারের মতো এমন ঘটনা।

থাইল্যান্ড দাবি করে, ওই মাইনটি সম্প্রতি বসানো হয়েছে। তবে কম্বোডিয়া এ অভিযোগ অস্বীকার করে জানায়, থাই সেনারা পূর্বনির্ধারিত রুটের বাইরে চলে গিয়ে পুরনো যুদ্ধকালীন মাইন বিস্ফোরণে আহত হয়েছেন।

উল্লেখ্য, ৮১৭ কিলোমিটার দীর্ঘ থাই-কম্বোডিয়া স্থল সীমান্তের বিভিন্ন অনির্ধারিত অংশ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে শত বছরের পুরনো বিরোধ রয়েছে। এর আগেও বহুবার এই বিরোধ সংঘর্ষে রূপ নিয়েছে, যার মধ্যে ২০১১ সালে এক সপ্তাহব্যাপী গোলাগুলিতে কয়েকজন নিহত হন। মে মাসে এক কম্বোডিয়ান সেনা নিহত হওয়ার পর সীমান্ত উত্তেজনা নতুন করে তীব্র হয়ে ওঠে, যা এখন পূর্ণ মাত্রার সশস্ত্র সংঘর্ষে রূপ নিয়েছে।

সূত্র : রয়টার্স

নিউজটি শেয়ার করুন



এ জাতীয় আরো খবর..
ইউটিউবে আমরা...
ফেসবুকে আমরা...