৩২ বছরে এমন বাজে দিন আসেনি বার্সেলোনার

প্রশ্ন উঠতে পারে, এত বাজে শুরু শেষ কবে হয়েছিল বার্সেলোনার। তা যে উঠবে, ফুটবল পরিসংখ্যানবিদেরা বেশ ভালোই জানতেন। সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের কল্যাণে জানা গেল, গত ৩২ বছরে এমন দুর্দিন দেখেনি বার্সা। শনিবার রাতে কাদিজের বিপক্ষে লিগ ম্যাচে ২-১ গোলে হারা দলটা ম্যাচ শেষে জেনেছে, ১০ ম্যাচ পর তাদের পয়েন্ট মাত্র ১৪। লিগের এই পর্যায়ে এসে এর চেয়ে কম পয়েন্ট সেই ১৯৮৭-৮৮ মৌসুমে পেয়েছিল দলটা। সেবার এই পর্যায়ে ১৩ পয়েন্ট পেয়েছিল বার্সেলোনা।

নতুন কোচ এসেছেন দলে, যিনি বার্সার সাবেক ‘গুরু’ ইয়োহান ক্রুইফের আদর্শে সুন্দর ফুটবল খেলাতে বিশ্বাসী। এত দিন ধরে যে সভাপতির কারণে দলের খেলোয়াড় থেকে শুরু করে সমর্থক সবাই বিরক্ত ছিলেন, তিনিও বিদায় নিয়েছেন। তাতে লিগে বার্সার ভাগ্যের উন্নয়ন ঘটছে কোথায়? উল্টো বার্সেলোনা এখনো সেই একইভাবে হাবুডুবু খাচ্ছে ব্যর্থতায়। ম্যাচের আগে পেলের অনন্য এক রেকর্ড ভাঙার আশায় ছিলেন লিওনেল মেসি। ৬৪৩ গোল—সান্তোসের হয়ে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৬৫৬ ম্যাচে পেলের গোলসংখ্যা। তাঁর ৬৪৩ গোলের এই কীর্তি অফিশিয়ালি এক ক্লাবের হয়ে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড, যা প্রায় অর্ধশতাব্দী ধরে কেউ ভাঙতে পারেনি। মেসি সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে বার্সার জার্সিতে ৬৭৮ ম্যাচে করেছেন ৬৪১ গোল। এই ম্যাচে যে রেকর্ডটা ভাঙেনি। বার্সাকে গোল করে জেতাতে পারেননি মেসি। ফলে রেকর্ডের অপেক্ষাটা বেড়েছেই।

ম্যাচের আট মিনিটেই পিছিয়ে পড়ে বার্সেলোনা। কাদিজের এক কর্নার থেকে আসা বলটা বুসকেতস বা গ্রিজমান, কেউই ঠিকঠাক ক্লিয়ার করতে পারেননি। দলের নতুন ডিফেন্ডার অস্কার মিঙ্গেসা ক্লিয়ার করতে গিয়ে উল্টো নিজেদের জালেই ঢুকিয়ে দিচ্ছিলেন। গোলরক্ষক টের স্টেগেন পড়িমরি করে বলটা আটকে দিলেও দলকে বিপদমুক্ত করতে পারেননি। বল চলে যায় সুবিধাজনক অবস্থানে দাঁড়িয়ে থাকা স্প্যানিশ স্ট্রাইকার আলভারো জিমেনেজের কাছে। সেখান থেকে গোল করেন ২৯ বছর বয়সী এই স্ট্রাইকার।

দ্বিতীয়ার্ধে জর্দি আলবার একটা শট আটকাতে গিয়ে উল্টো নিজেদের জালে ঢুকিয়ে দেন কাদিজের স্প্যানিশ ডিফেন্ডার পেদ্রো আলকালা। সমতায় ফেরার আনন্দে এর কিছুক্ষণ পরেই পানি ঢেলে দেন খোদ বার্সা গোলরক্ষক মার্ক আন্দ্রে টের স্টেগেন। কিছুদিন আগে আতলেতিকোর বিপক্ষে তাঁর ভুলেই ম্যাচ হেরেছিল বার্সেলোনা, এই ম্যাচেও সেই একই টের স্টেগেনকেই দেখা গেল।

জর্দি আলবার নিরীহদর্শন এক থ্রো-ইন নিজেদের অর্থেই সামলাতে পারেননি বার্সার ফরাসি ডিফেন্ডার ক্লেমঁ লংলে। বল চলে যায় টের স্টেগেনের দিকে। নিজে উদ্যোগী হয়ে বক্স থেকে বেরিয়ে এসে ক্লিয়ার করতে গিয়ে বিপত্তি বাধিয়ে ফেলেন টের স্টেগেন। অভিজ্ঞ স্প্যানিশ স্ট্রাইকার আলভারো নেগ্রেদো স্টেগেনের পা থেকে বল কেড়ে নিয়ে সুন্দর প্লেসমেন্টে এগিয়ে দেন দলকে। নেগ্রেদো এককালে নিজেও রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে খেলতেন, ফলে রিয়ালের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের নিজের গোলে হারাতে পেরে তাঁর নিজেরই বাড়তি আনন্দ হওয়ার কথা। পরে আরও ২৭ মিনিট পেলেও আর গোল করতে পারেননি মেসিরা।

প্রথম গোল যেমন-তেমন, এভাবে দ্বিতীয় গোল খাওয়াটা মানতেই পারছেন না বার্সা কোচ রোনাল্ড কোমান, ‘আমরা এভাবে গোল খেতে পারি না। এটা সম্পূর্ণ মনোযোগের অভাব। ম্যাচটা ভালো খেলিনি আমরা। প্রচুর পজেশন হারিয়েছি। নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারিনি বল।’

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.