বনের রাজার এ কি হাল!

সিংহকে বলা হয় পশুরাজ বা পশুদের রাজা। কিন্তু সুদানের রাজধানী খার্তুমের আল কুরেশি চিড়িয়াখানায় সিংহদের যা অবস্থা তা দেখে গোটা বিশ্বের মানুষের চক্ষু চড়ক গাছ!

প্রথম দেখায় মনে হবে যেন খাঁচার ভেতর শুয়ে আছে কয়েকটি রাস্তার কুকুর। রুগ্ন, শীর্ণকায় চেহারা। নিজ পায়ে ভর করে উঠে দাঁড়ানোর শক্তিটুকুও নেই পশুরাজের! নিস্তেজ শরীরে অকাল বার্ধক্য, কঙ্কালসার শরীর। মৃত্যুযন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে। খাদ্যের অভাবে, অযত্নে, অবহেলায় মরতে বসেছে বনের রাজা।

ওসমান সাহিন নামে এক ফেসবুক ব্যবহারকারী সিংহগুলোর ছবি এবং ভিডিও একের পর এক পোস্ট করতে থাকেন। সবাইকে আবেদন করেন সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসতে। সেই সব ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়। অনলাইনে প্রচারও শুরু হয়ে গিয়েছে– #SaveSickAndStarvingLionsInSudanPark।

ওসমান সালিহ চিড়িয়াখানা থেকে ওদের উদ্ধার করার আহবান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে। ওসমানের এই ‘হ্যাশট্যাগ’ এখন নেটরাজ্যে ট্রেন্ডিং। সোশ্যাল মিডিয়াজুড়ে চলছে প্রচার।

পাঁচ-পাঁচটা আফ্রিকান সিংহেরই এক পরিণতি! দীর্ঘ দিনের অর্ধাহার, অনাহারে তারা অপুষ্টির শিকার। দুর্বল শরীরে বাসা বেঁধেছে অসুখ। বনের পশুকে বনে ছেড়ে দেওয়ারও যে উপায় নেই। শরীরের যে হাল, অন্য পশুরা ছিঁড়ে খাবে। একমাত্র পুষ্টিকর খাবারই তাদের দিতে পারে নতুন জীবন। সুদান পার্ক কর্তৃপক্ষের অবশ্য সে ক্ষমতা নেই। দরকার আর্থিক সাহায্য।

চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের স্বীকারোক্তি, পাঁচটি সিংহই দুই-তৃতীয়াংশ ওজন হারিয়েছে।
দায়িত্বপ্রাপ্ত পশু চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সিংহগুলো চূড়ান্ত মাত্রার অপুষ্টিতে ভুগছে। দ্রুত অবস্থার উন্নতি না হলে পরিস্থিতি আরও মারাত্মক হতে পারে।

সাহিনের প্রচারের ফলে একের পর সাহায্য যেমন আসতে শুরু করেছে, তেমনি আল কুরেশি পার্কের অধিকার্তা এবং প্রশাসনের কর্তারাও উদ্যোগ নিচ্ছেন। বেশ কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিনিধিরা সিহংগুলোর জন্য তাজা মাংস এবং ওষুধ নিয়ে আল-কুরেশি পার্কে পৌঁছে যায়।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.