চাঁদের মাটিতে গাছের চারা!

বিজ্ঞানীরা প্রথমবারের মতো চাঁদের মাটিতে গাছের চারা জন্মাতে পেরেছেন। এর মধ্য দিয়ে এই উপগ্রহ মানুষের দীর্ঘমেয়াদে অবস্থানে সাফল্যের সম্ভাবনা উজ্জ্বল করেছে। চাঁদে বসবাস করবে মানুষ। সেই স্বপ্ন নিয়েই এগোচ্ছে নাসা। ২০২৫ সালে এই মিশন শুরু হবে তাদের। বিবিসি।

গবেষকরা ১৯৬৯-১৯৭২ অ্যাপোলো মিশনের সময় সংগৃহীত ধূলিকণার ছোট নমুনাগুলোতে এক ধরনের ক্রেস জন্মানোর চেষ্টা করেছিলেন। বিজ্ঞানীদের অবাক করে দিয়ে দুদিন পরই চাঁদের মাটি ফুঁড়ে উঁকি দিল গাছের চারা। এই গবেষণাপত্রের সহলেখক ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আনা-লিসা পল বলেন, ‘আমি আপনাকে বলতে পারব না যে, আমরা কতটা বিস্মিত হয়েছিলাম।’ তিনি জানান, ‘চন্দ্রপৃষ্ঠ থেকে আনা নমুনা হোক বা পৃথিবীর মাটি হোক- প্রত্যেক উদ্ভিদই জন্মানোর প্রায় ছয় দিন পর্যন্ত একরকম দেখায়। এরপর ধীরে ধীরে তার রূপ পালটাতে থাকে। চাঁদের মাটিতে জন্মানো চারাগুলো কিছুটা থিতু ছিল। সেগুলো ধীরে ধীরে বিকাশ লাভ করে এবং শেষ পর্যন্ত স্থবির হয়ে পড়ে।’

এ গবেষণার সঙ্গে জড়িত অন্যরাও বলছেন, এটি একটি যুগান্তকারী সাফল্য, যদিও এর মধ্যে পার্থিব প্রভাব থাকতে পারে। তবে এ প্রভাব কেমন, সেটা উল্লেখ করেননি।

নাসার প্রধান বিল নেলসন বলেন, ‘এই গবেষণা নাসার দীর্ঘমেয়াদি মানব অন্বেষণ লক্ষ্যগুলোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আমাদের ভবিষ্যতের মহাকাশচারীদের বসবাস এবং গভীর মহাকাশে কাজ করার জন্য খাদ্য উৎস বিকাশের জন্য চাঁদ এবং মঙ্গলে পাওয়া সংস্থানগুলোকে ব্যবহার করতে হবে।’ সেই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘এই মৌলিক উদ্ভিদ গবেষণাটি আমাদের বুঝতে সাহায্য করতে পারে, কীভাবে পৃথিবীর খাদ্য-দুষ্প্রাপ্য অঞ্চলে চাপের পরিস্থিতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে?’ গবেষকদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হলো, পরীক্ষার জন্য খুব বেশি চন্দ্রমাটি নেই।

১৯৬৯ সাল থেকে তিন বছরের মধ্যে নাসা মহাকাশচারীরা চন্দ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩৮২ কেজি (৮৪২ পাউন্ড) শিলা, মূল নমুনা, নুড়ি, বালি এবং ধূলিকণা নিয়ে এসেছিলেন। কয়েক দশক ধরে সংরক্ষিত মাটি থেকে ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক দলকে নমুনাগুলো থেকে পরীক্ষার জন্য প্রতি গাছে মাত্র ১ গ্রাম মাটি দেওয়া হয়েছিল।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.