‘কাঁড়ি কাঁড়ি অর্থ, বিশ্বসেরা সব তারকা নিয়ে বছর শেষে হতাশার গল্প।’— ফুটবলে এই কথা মানেই যে পিএসজির দিকে আঙুল তোলা হচ্ছে তা এক বছর আগেও এক বাক্যে মেনে নিতেন ফুটবল ভক্তরা।
বছরখানেক আগেও যে ক্লাবের ইতিহাসে ছিল না ইউরোপের মেজর কোন শিরোপা, তাদের মাথায় এখন মহাদেশের পাশাপাশি বৈশ্বিক শিরোপার মুকুট। আর সে মুকুটের প্রতিটি পালক নিজ হাতে বসিয়েছেন কিংবদন্তি স্প্যানিশ কোচ লুইস এনরিকে।
এবার পার্ক দেস প্রিন্সেসে আনন্দের বন্যা বইয়ে দেওয়া কোচকে আজীবন নিজেদের করে নিতে ফুটবল ইতিহাসের এক নজিরবিহীন প্রস্তাব দিতে চলেছে পিএসজি।
ইতোমধ্যেই ক্লাবের সঙ্গে ২০২৭ সালের গ্রীষ্ম পর্যন্ত চুক্তি বাড়িয়েছেন পিএসজির হয়ে ট্রেবলজয়ী ৫৫ বছর বয়সী কোচ। তবে এতে খুশি নয় ক্লাব, তাকে যে কর্তৃপক্ষ বাঁধতে চায় আজীবনের জন্য। তাই এনরিকের সামনে ‘লাইফটাইম কন্ট্রাক্ট’ বা আজীবন চুক্তির প্রস্তাব দেওয়ার কথা ভাবছে ক্লাব কর্তৃপক্ষ।
এমনকি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসন বা আর্সেনালের হয়ে আর্সেন ওয়েঙ্গারের মতো কিংবদন্তি ব্যক্তিত্বরাও কয়েক দশক ধরে বারবার নবায়নের মাধ্যমে দলে টিকে ছিলেন। সেদিকে এনরিকের এমন চুক্তি বাস্তবায়িত হলে নবায়নের আর কোন ঝামেলায় জেতে হবে না তাকে।
২০২৩ সালে ক্রিস্তফ গালতিয়েরের বিদায়ের পর বিধস্ত পিএসজির দায়িত্ব নেন এনরিকে। একে একে তারকাদের বিদায়ে সবাই ধরেই নিয়েছিলেন তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়বে পিএসজি। মেসি-নেইমারের পর ক্লাব থেকে বিদায় নেন এমবাপ্পেও।
তবে এনরিকে এরপর যা করেছেন তাই হয়তো আজীবন মনে রাখবে পিএসজি। এসেই জানিয়ে দিলেন তার স্কোয়াডে সবাই তারকা। প্রথম মৌসুমে দল গড়লেন, এরপর নিজের দ্বিতীয় মৌসুমের শুরু থেকেই তুললেন ঝড়। একের পর এক জায়ান্ট ক্লাব বধ করে নিজের সামর্থের প্রমাণ দিলেন তিনি।
আর তারকা? বার্সেলোনায় ধারাবাহিকতা নিয়ে ভুগতে থাকা উসমান দেম্বেলে এখন ব্যালন ডি’অর জয়ী! দলে টেনে নিজ হাতে তারকা বানিয়েছেন দিজিরে দুয়ে, ব্র্যাডলি বারকোলা আর খাভিচা কাভারেস্খেইয়াকে। অলিখিত শর্ত জুড়ে দিয়েছেন, মাঠে দিতে হবে শতভাগ না হয় থাকতে হবে বেঞ্চে। আর ভিতিনিয়া-নেভেস-রুইজ ত্রয়ী তো মাঝমাঠে প্রতিপক্ষের মূর্তিমান আতংকের নাম। সঙ্গে নুনো মেন্ডেস ও আশরাফ হাকিমির মতো দুই উইং ব্যাক এনরিকেকে দিয়েছে বাড়তি সুবিধা।
এমন সব আন্ডারডগ তারকা নিয়েই গত মৌসুমে ‘আরব্য রজনীর’ রূপকথার গল্প লিখেছেন তিনি। ২০২৫ পঞ্জিকাবর্ষে সম্ভাব্য সাত ট্রফির মধ্যে ছয়টি জিতেছেন তিনি! উঠেছেন সবকটি শিরোপা মিশনের ফাইনালে! একমাত্র ক্লাব বিশ্বকাপে চেলসির কাছে ফাইনালে হার চাঁদের কলংকের মতো হয়ে আছে।
এ জাতীয় আরো খবর..