৪ বছরে একবার প্রকাশিত হয় যে পত্রিকা!

চার বছর পর ‘লা বুজি দি স্যাপর’ নামের ট্যাবলয়েডের নতুন সংখ্যা প্রকাশিত হয়েছে। আর সেটি কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন ফ্রান্সের মানুষ। দৈনিক, সাপ্তাহিক, পাক্ষিক, মাসিক কিংবা ত্রৈমাসিক- এমন সব সংবাদপত্র বা ম্যাগাজিন সারা বিশ্বেই দেখা যায়। তবে বিশ্বে এই একটি পত্রিকাই আছে, যেটি বের হয় চার বছর পরপর।

বিবিসি লিখেছে, ২০ পৃষ্ঠার এই রম্য পত্রিকাটির অনন্য বৈশিষ্ট্য হলো, এর নতুন সংখ্যা প্রকাশ করা হয় কেবল ২৯ ফেব্রুয়ারি। অর্থাৎ চার বছর পরপর ফ্রান্সে এর দেখা মেলে। পত্রিকাটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৮০ সালে। এ পর্যন্ত মাত্র ১২টি সংখ্যা বের হয়েছে।

মানুষকে আনন্দ দিতে ফ্রান্সের একদল বন্ধু মিলে পত্রিকাটি প্রথম বের করেছিলেন। ৪.৯০ ইউরো বা ৪.২০ ডলার দামের ট্যাবলয়েডটির প্রচার সংখ্যা এখন ২ লাখ।

‘লা বুজি দি স্যাপর’ পত্রিকার সম্পাদক জিন ডি ইন্ডি বলেন, প্রথম সংখ্যা প্রকাশের দুই দিনের মধ্যে সব বিক্রি হয়ে গিয়েছিল। হকাররা আরও কপি চেয়েছিল। আমরা বলেছি- ঠিক আছে, কিন্তু মাত্র চার বছর লাগবে!

কয়েক বন্ধু মিলে এখনো পত্রিকাটি বের করেন ডি ইন্ডি।

রম্য পত্রিকা হলেও সাধারণ সংবাদপত্রের মতোই সাজানো ‘লা বুজি দি স্যাপর’। রাজনীতি, খেলাধুলা, আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী, শিল্পকলা, ধাঁধা এবং তারকাদের আলাপসহ সবকিছুই রয়েছে এতে। তবে প্রতিবেদনগুলো হাস্যরসাত্মক ধারাভাষ্যে ভরপুর। সম্পাদকের ভাষায়- এ পত্রিকা ‘এন্টি পলিটিক্যালি কারেক্ট’।

২০২৪ সালের সংখ্যার প্রথম পাতার মূল প্রতিবেদনের শিরোনাম – ‘সকলেই আমরা বুদ্ধিমান হব’। পরীক্ষা আর মানুষের বুদ্ধিবৃত্তিক পরিমাপের বিষয়গুলো এআইয়ের কারণে কিভবে বাতিল হয়ে যাচ্ছে, তা নিয়েই এ প্রতিবেদন।

দ্বিতীয় প্রধান প্রতিবেদনের শিরোনাম- ‘নারী হওয়ার আগে পুরুষের যা জানা দরকার’। পুরুষ থেকে রূপান্তরিত নারীরা যে চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিল করেন, সেই প্রসঙ্গ তুলে ধরা হয়েছে প্রতিবেদনে।

ফরাসি এই রম্য পত্রিকা অন্য ভাষায় অনূদিত হয় না জানিয়ে সম্পাদক ডি ইন্ডি বলেন, “আমরা বোকা সাজার চেষ্টা করি, কিন্তু রূঢ় হই না। মূলত আমরা মজা করি, কিন্তু সেটা কারো প্রতি নিষ্ঠুর না হয়ে।”

পত্রিকার নাম ‘লা বুজি দি স্যাপর’ রাখা হয়েছে ফ্রান্সের প্রথম দিকের কার্টুন ব্যক্তিত্ব লা সাপর ক্যামেমবার্টের নামানুসারে। তিনি ছিলেন একজন ফরাসি সৈনিক। আশির দশকে সৈনিক জীবনের নানা দিক কার্টুনের মাধ্যমে তিনি ফুটিয়ে তুলেছিলেন।

‘লা বুজি দি স্যাপর’ অনলাইনে প্রকাশিত হয় না। ফ্রান্সে কেবল নিউজ এজেন্ট বা হকার এবং পত্রিকা বিক্রির বুথগুলোতেই এটি পাওয়া যায়।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.