‘স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তির প্রাক্কালে তারুণ্যের শক্তিকে স্বীকৃতি দেয়ার এখনই ভালো সময়’

বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলার
বলেছেন, “বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তির প্রাক্কালে আমাদের ক্রমবর্ধমান আন্তঃসংযুক্ত বিশ্ব গড়ে তোলার ক্ষেত্রে তারুণ্যের শক্তিকে স্বীকৃতি দেওয়ার এরচেয়ে ভালো সময় আর হতে পারে না।” (১১ ফেব্রুয়ারি) এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের অর্থায়নে পরিচালিত ইংলিশ অ্যাক্সেস মাইক্রোস্কলারশিপ প্রোগ্রামের সর্বশেষ গ্রাজুয়েট ৪০ জন তরুণকে অভিনন্দন জানাতে গিয়ে তিনি একথা বলেন। রাষ্ট্রদূত মিলার মহামারির মধ্যেও কঠোর অধ্যবসায়ের মাধ্যমে সফলভাবে কোর্স সম্পন্ন করা ২০ জন তরুণী ও ২০ জন তরুণের প্রশংসা করেন এবং তাদেরকে ভবিষ্যতের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে ও লেখাপড়া চালিয়ে যেতে উত্‌সাহিত করেন।

ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস এক বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানিয়েছে।

উল্লেখ্য, ইংলিশ অ্যাক্সেস মাইক্রোস্কলারশিপ প্রোগ্রাম একটি দুই বছর মেয়াদী ইন্টারঅ্যাক্টিভ কর্মসূচি। এই কর্মসূচির মাধ্যমে আর্থিকভাবে পিছিয়ে থাকা ১৩ থেকে ২০ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের ইংরেজি ভাষা শেখানোর পাশাপাশি আমেরিকান সংস্কৃতি ও নেতৃত্ব দেয়ার দক্ষতার ভিত্তি গড়ে দেয়া হয়। এর ফলে শিক্ষার্থীরা উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণ ও কাজের সুযোগ পাওয়ার ক্ষেত্রে নিজেকে আরো বেশি যোগ্য করে তুলতে পারে। বর্তমানে মোট ১৩২ জন শিক্ষার্থী ঢাকা, রাজশাহী, সিলেট ও চট্টগ্রামে অ্যাক্সেস প্রোগ্রামে ভর্তি রয়েছে। এই বছর, ২০২১ সালে, আরো ২০০ জন শিক্ষার্থী এই প্রোগ্রামে ভর্তি হবে। ২০০৪ সালে শুরু হওয়া এই প্রোগ্রাম থেকে ইতোমধ্যে ১,২০০ এরও বেশি বাংলাদেশী শিক্ষার্থী সফলভাবে গ্রাজুয়েট হয়েছে। আজকের অনুষ্ঠানে গ্রাজুয়েট করা বাংলাদেশী শিক্ষার্থীরা  বিশ্বের ৮৫টিরও বেশি দেশ থেকে অ্যাক্সেস প্রোগ্রামের ৯৫,০০০ প্রাক্তন শিক্ষার্থীর  সারিতে যোগ দিয়েছেন।

অ্যাক্সেস প্রোগ্রামের আজকের গ্রাজুয়েট শিক্ষার্থীরা অনলাইন ক্লাসে অংশ নেয়া দক্ষিণ এশিয়ার অ্যাক্সেস শিক্ষার্থীদের প্রথম ব্যাচ যারা গত বছর কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবের পর সশরীরে ক্লাসে উপস্থিত থাকার পরিবর্তে অনলাইনে পাঠ নিয়েছেন। এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র  দূতাবাস আয়োজিত এই কার্যক্রমে ঢাকা অঞ্চলের বৃত্তিমূলক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের এটাই প্রথম ব্যাচ। দূতাবাসের পক্ষে অ্যাক্সেস প্রোগ্রাম বাস্তবায়নকারী অংশীদার সংস্থা গ্লোবাল এডুকেটরস ইনিশিয়েটিভ ফর সাসটেইনেবল ট্রান্সফরমেশন (জিইআইএসটি) ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন সশরীরে উপস্থিত থেকে করার উপযোগী ইন্টারঅ্যাক্টিভ এই কোর্সকে অনলাইন ইন্টার‍অ্যাক্টিভ কোর্সে রূপান্তর করা ও কোর্সের প্রয়োজনীয় উপকরণ তৈরিতে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলো।

অ্যাক্সেস প্রোগ্রাম ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের অন্যতম উদ্যোগ, যা যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মানুষের সাথে মানুষের বন্ধন জোরদার ও সম্প্রসারণ এবং শিক্ষা সংক্রান্ত যোগাযোগ বাড়াতে, স্থানীয়ভাবে শিক্ষার মান বাড়ানো এবং উদ্ভাবনমূলক শিক্ষার সুযোগের মাধ্যমে বাংলাদেশী তরুণদের ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে অনেক ধরনের কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।

গ্লোবাল এডুকেটরস ইনিশিয়েটিভ ফর সাসটেইনেবল ট্রান্সফরমেশন (জিইআইএসটি) ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের সঙ্গে যৌথভাবে অ্যাক্সেস প্রোগ্রাম পরিচালনা করে। জিইআইএসটি বাংলাদেশ-ভিত্তিক একটি অলাভজনক সংস্থা। যুক্তরাষ্ট্র সরকারের এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা এটি প্রতিষ্ঠা করেছে। সংস্থাটির অন্যতম প্রধান কাজ হলো শিক্ষক প্রশিক্ষণ ও ইংরেজি নির্দেশনা। সংস্থার সদস্যদের মধ্যে ১,০০০ জন শিক্ষার্থী, ৪০০ জন শিক্ষক এবং শিক্ষা ও উন্নয়ন খাতে কর্মরত ৫৮০জন পেশাজীবী রয়েছেন। বর্তমানে সংস্থাটি ভারত, নেপাল, ভিয়েতনাম, কলম্বিয়া, কম্বোডিয়া, গুয়েতেমালা, ইরাক, ইউক্রেন, তুরস্ক, রাশিয়া, লিথুয়ানিয়া, নাইজেরিয়া, জার্মানী, শ্রীলংকা, ভূটান ও ফ্রান্সে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়নে পরিচালিত শিক্ষক প্রশিক্ষণ কর্মসূচির প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের ১৪৩টি অংশীদার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে কাজ করছে।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.