‘সামরিক জান্তা গণহত্যা চালাচ্ছে, যাকে দেখছে তাকেই গুলি করছে’

সামরিক জান্তা মিয়ানমারে গণহত্যার মতো মানুষ হত্যা করছে। তারা যাকে দেখছে তাকেই গুলি করছে। এমন মন্তব্য করেছেন অভ্যুত্থানবিরোধী অন্যতম আয়োজক ইয়ে হতুত। বিলম্বে প্রাপ্ত খবরে বলা হয়েছে, শুক্রবার ইয়াঙ্গুনের কাছে বাগো শহর এলাকায় কমপক্ষে ৮০ জনকে হত্যা করেছে সামরিক জান্তা। এ তথ্য দিয়েছে অধিকার বিষয়ক গ্রুপ অ্যাসিসট্যান্স এসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স (এএপিপি) এবং দেশের ভিতরকার বিভিন্ন পত্রিকা। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। এতে আরো বলা হয়, এএপিপি এবং মিয়ানমার নাউ পত্রিকা বলছে, বাগো শহর ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে মানুষ। এর আগে পূর্বাঞ্চলীয় থাইল্যান্ড সীমান্তের কাছে বেসামরিক এলাকায় আকাশ থেকে বোমা ফেলার পর বহু মানুষ পালিয়ে থাইল্যান্ড যাওয়ার চেষ্টা করেন।

কিন্তু তাদেরকে পুশব্যাক করেছে থাই কর্তৃপক্ষ। এ সময় জাতিগত বিভিন্ন সশস্ত্র গ্রুপ অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভকারীদের সমর্থন দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। ফলে মিয়ানমারে গৃহযুদ্ধের এক প্রচ- ঝুঁকি রয়েছে বলে সতর্কতা দেয়া হয়েছে। এএপিপির মতে, ১লা ফেব্রুয়ারি সামরিক অভ্যুত্থানের পর সেখানে নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ৬১৮ জন। কিন্তু এ সংখ্যা নিয়ে আপত্তি রয়েছে সেনাবাহিনীর। তাদের দাবি, তারা অভ্যুত্থান করেছে অং সান সুচির নভেম্বরের নির্বাচনে জালিয়াতির কারণে। তবে সেনাদের এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। সামরিক জান্তার মুখপাত্র মেজর জেনারেল জাওয়া মিন তুন শুক্রবার রাজধানী ন্যাপিডতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। সেখানে তিনি বলেছেন, অভ্যুত্থানের পর বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন ২৪৮ জন। পুলিশ মারা গেছেন ১৬ জন। নিরাপত্তা রক্ষাকারীরা কোনো স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র ব্যবহার করেনি।

ওদিকে শনিবার পূর্বাঞ্চলে একটি পুলিশ স্টেশনে হামলা চালিয়েছে জাতিগত সশস্ত্র গ্রুপগুলোর জোট। শান রাজ্যের নাংমনে অবস্থিত পুলিশ স্টেশনে হামলা চালায় আরাকান আর্মি, তাং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি, মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক এলায়েন্স আর্মি। শান নিউজ জানিয়েছে এ হামলায় কমপক্ষে ১০ জন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। তবে শয়ে ফি মাআই নিউজ জানিয়েছে নিহতের সংখ্যা ১৪। ওদিকে মিয়ানমারের ক্ষমতাচ্যুত আইন প্রণেতারা শুক্রবার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের কাছে। ক্ষমতাচ্যুত আইনপ্রণেতাদের ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত জিন মার অং বলেছেন, আমাদের জনগণ তাদের অধিকার ও স্বাধীনতা ফিরে পেতে মূল্য দিতে প্রস্তুত। মিয়ানমার একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রের দ্বারপ্রান্তে বলে মন্তব্য করেছেন ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের সিনিয়র উপদেষ্টা রিচার্ড হোরসে।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.