সামরিক জান্তার গর্ভ থেকে বিএনপির জন্ম: নানক

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ থাকায় দলটি এখন নেতৃত্ব সঙ্কটে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক। দলটি এখন ‘অস্তিত্ব সঙ্কটে’ পড়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

নারায়ণগঞ্জের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জাতির কাছে একটি ‘বার্তা গিয়েছে’ উল্লেখ করে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘যে বার্তার কারণে ওই পরাজিত শক্তিরা উন্মাদ হয়ে গিয়েছে। সেই উন্মাদনায় এখন ওদের কিছুই ভালো লাগে না। ভালো লাগে না রোগের ঔষধ আমাদের কাছে নেই কিন্তু জনগণের কাছে রয়েছে। ‘

নানক বলেন, ‘এই দেশের জনগণ আগামী নির্বাচনেও ওদেরকে প্রত্যাখান করবে। কারণ ওদের দল হয়ে গেছে মাহুত ছাড়া হাতি। সে দলের কোনো নেতা নেই, দলটি এখন অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। তাই তারা এখন দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।’

বুধবার বিকেলে ধানমন্ডি আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে নির্বাচিত মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীর মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপির কট্টর সমালোচনা করে নানক বলেন, ‘যাদের জন্ম সামরিক জান্তার গর্ভ থেকে, তারা এখন মানুষকে গণতন্ত্র শিখায়। তারাই ১৯৯৬ সালে ১৫ ফেব্রুয়ারি ভোট চুরি করে বঙ্গবন্ধু সপরিবারের আত্মস্বীকৃত খুনী স্থান দিয়ে পবিত্র সংসদকে কলঙ্কিত করেছিল। সেই বেহায়ারা আবার আমাদের দেশের মানুষকে গণতন্ত্রের কথা বলে।’

বিএনপি নেতারা রাষ্ট্রপতি আহুত সংলাপ প্রত্যাখানের পর এখন নির্বাচন কমিশন গঠনে সার্চ কমিটির নাম প্রস্তাবের আহ্বানেও সাড়া দেয়নি। দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থা, নির্বাচন কমিশন নিয়ে বিস্তর সমালোচনা করছে দলটি।

এ বিষয়ে নানক বলেন, ‘সেই বেহায়ারা যারা যাদের জনক হল…. যাদের স্রষ্টা হল…. সামরিক ছাউনিতে উর্দি পোশাক পরে রাজনৈতিক দল গঠন করেছিল, সেই সেনা ছাউনিতে বসে সকল সেনা আইনকে উপেক্ষা করে আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তথাকথিত হ্যাঁ-না ভোট করে সেই তারা বাংলাদেশের মানুষকে গণতন্ত্র শিখায়, ভোট ব্যবস্থা শিখায়, নির্বাচনের ব্যবস্থা শিখায়।’

ইসি গঠন নিয়ে আওয়ামী লীগের এই সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বলেন, ‘বাংলাদেশের ৫০ বছরে যে আইন প্রণয়ন হয়নি, একটি নির্বাচন ব্যবস্থা পাকাপোক্ত হয়নি সেই নির্বাচন ব্যবস্থাকে পাকাপোক্ত করেছিলেন আমাদের নেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি এই নির্বাচন কমিশন গঠন আইন করে সেটির একটি স্থায়ী ব্যবস্থা করেছেন। এই নির্বাচন কমিশন আইন গঠন করতে গিয়ে বিরোধী দলের নেতারা (জাতীয় পার্টি) পর্যন্ত বক্তব্য দিয়েছেন এবং তারা সংশোধনী এনেছে। সেই সংশোধনী আঙ্গিকে যে সংসদে খসড়া বিল, সেই খসড়া বিলের যে নামকরণ ছিল তা বিরোধী দলের প্রস্তাবে সেই নামাকরণ পর্যন্ত পরিবর্তন করা হয়েছে।’

সভার শুরুতে জাহাঙ্গীর কবির নানকের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে মেয়র আইভীকে ফুলেল শুভেচ্ছা ও অভিনন্দনে জানানো হয়।

এরপর সেলিনা হায়াৎ আইভী নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে নিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে ফুলেল অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানান। সভার শুরুতে বক্তব্য রাখেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে টানা তৃতীয় বারের নির্বাচিত মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী। সভা পরিচালনা করেন ঢাকা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক ও নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন পরিচালনায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় টিমের সদস্য সচিব মির্জা আজম। এছাড়া বক্তব্য রাখেন দলের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম।

মতবিনিময় সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন- দলের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, আফজাল হোসেন, উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.