‘সংবিধানের বাইরে বিরোধী দলকে স্পেস নয়’

সংবিধানের বাইরে গিয়ে বিরোধী দলকে স্পেস দেওয়ার সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।

তিনি বলেছেন, আগামী নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু করতে সরকার আন্তরিক। নির্বাচন কমিশনও স্বাধীন।

মঙ্গলবার ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির আয়োজনে বিএফডিসি মিলনায়তনে স্বাধীনতা দিবস বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সালমান এফ রহমান বলেন, অনিয়মের কারণে একটি সংসদীয় আসনের উপনির্বাচন বাতিল করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন আগামীতে কোনো নির্বাচনে অনিয়ম হলে তাও বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। কমিশনের পক্ষ থেকে বিরোধীদের আলোচনায় অংশ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। তবে সংবিধানের বাইরে গিয়ে বিরোধী দলকে স্পেস দেওয়ার সুযোগ নেই। আমরা শুধু নির্বাচনে অংশগ্রহণের অনুরোধ করতে পারি। নির্বাচন পর্যবেক্ষণে বিদেশি পর্যবেক্ষকদের স্বাগত জানানো হবে।

তিনি বলেন, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির ফলে ব্যবসায়ীদের ক্ষতি হলেও আপাতত এর বিকল্প নেই। সরকার এখনও জ্বালানি খাতে ভর্তুকি দিচ্ছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে জ্বালানি সংকট তৈরি হয়েছে। তবে ভোলায় গ্যাসপ্রাপ্তি জ্বালানি নিরাপত্তার ক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে। যেসব দেশের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্য প্রতিযোগিতা রয়েছে সেসব দেশেও জ্বালানির দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা বলেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকার চেষ্টা করে যাচ্ছে। এ বিষয়ে ব্যবসায়ীদের সরকারের আলোচনা অব্যাহত রয়েছে। সম্প্রতি হঠাৎ ব্রয়লার মুরগির দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় সরকারের উদ্যোগে নিয়ন্ত্রণে আসছে।

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। তিনি বলেন, সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, পররাষ্ট্রনীতি সর্বক্ষেত্রেই বাংলাদেশর অবস্থান আগের তুলনায় অনেক সুদৃঢ়। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, খাদ্য নিরাপত্তা, নারীর ক্ষমতায়নসহ নানা ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে। পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, কর্ণফুলী টানেল আমাদের উন্নয়নের প্রতিচ্ছবি। তবে উন্নয়ন মানে শুধু দালান-কোঠা, রাস্তাঘাট, ব্রিজ, কালভার্ড তৈরি নয়। স্বাধীনতার প্রকৃত সুফল পেতে কেবল রাজনৈতিক মুক্তি পেলেই চলবে না। দরকার সুশাসন, মানবাধিকার, অসাম্প্রদায়িকতা, শোষণ ও বঞ্চনামুক্ত ন্যায়বিচার ভিত্তিক দুর্নীতিমুক্ত রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে তোলা। সম্পদ পাচার প্রতিহত করা। রাজনীতিবিদসহ স শ্রেণি পেশার মানুষকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হওয়া।

তিনি আরও বলেন, আমাদের বর্তমান বাস্তবতা হলো প্রধান দুই রাজনৈতিক দল কেউ কাউকে ছাড় দিতে চায় না। কেউ কারও মুখ দেখতে চায় না, আলোচনায় বসতে চায় না। তাই বাংলাদেশের অগ্রগতির জন্য সরকার ও বিরোধী দলসহ সব রাজনৈতিক দলগুলোকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। বিরোধী দল কেবল সরকারের বিরোধিতা না করে সরকারের ভালো কাজের প্রশংসা করা উচিত। আবার বিরোধী দলকে চাপে রাখার মানসিকতাও পরিহার করতে হবে। যেন বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো মুক্তভাবে তাদের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে পারে।

বিতর্ক প্রতিযোগিতায় লালমাটিয়া সরকারি মহিলা কলেজকে পরাজিত করে বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, অর্থনীতিবিদ তাহরিন তাহরীমা চৌধুরী, ড.এস এম মোর্শেদ, সাংবাদিক কাবেরী মৈত্রেয় ও ইকবাল আহসান প্রমুখ। প্রতিযোগিতা শেষে চ্যাম্পিয়ন ও রানারআপ দলকে ট্রফি ও সনদপত্র দেওয়া হয়।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.