ভোটারদের দুইবার ভোট দিতে বললেন ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নর্থ ক্যারোলিনার ভোটারদের দু’বার ভোট দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নির্বাচনী প্রক্রিয়া, নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঠিকমতো কাজ করছে কিনা তা পরীক্ষা করতেই রাজ্যটির অধিবাসীদের এ পরামর্শ দেন তিনি।

তার এমন পরামর্শ নর্থ ক্যারোলিনার নির্বাচনী কর্মকর্তাদের কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, নর্থ ক্যারোলিনার অধিবাসীদের দু’বার ভোট দেয়ার পরামর্শ দিয়ে পুরো দেশেই ভোট জালিয়াতির মতো অপরাধ উসকে দিচ্ছেন ট্রাম্প।

এদিকে বিরোধী ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী জো বাইডেনের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন ৮১ নোবেল বিজয়ী। বুধবার এক খোলা চিঠিতে তার প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেন তারা। শুধু তাই নয়, শতাধিক রিপাবলিকান নেতাও ডেমোক্রেটিক পার্টির এ বর্ষীয়ান নেতার প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। খবর সিএনএন ও রয়টার্সের।

করোনাভাইরাসের কারণে বিরোধী ডেমোক্রেটিক শিবির ‘মেইল ইন ভোট’ তথা ডাকে ভোট নেয়ার কথা বলছেন। কিন্তু এতে কারচুপি ও জালিয়াতি হতে পারে বলে এর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন ট্রাম্প।

নভেম্বরে নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে বুধবার নর্থ ক্যারোলিনার উইমিংটনে যান ট্রাম্প। দু’বার ভোট প্রদান আইনত অবৈধ এবং এতে ভোট জালিয়াতির সম্ভাবনা রয়েছে।

তা সত্ত্বেও এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে ট্রাম্প বলেন, ‘ভোটারদের একবার সরাসরি ভোট কেন্দ্রে গিয়ে আরেকবার মেইলের মাধ্যমে ভোট দেয়া উচিত।’ নির্বাচনের দিন প্রথম ভোট গণনা হয়েছে কিনা তা জানতে দ্বিতীয়বার ভোট দেয়াকে জরুরি উপায় হিসেবে বর্ণনা করেছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘মেইলের মাধ্যমে তাদের ভোটটি পাঠাতে দিন এবং ভোট কেন্দ্রে গিয়েও তাদের ভোট দিতে দিন।’

নর্থ ক্যারোলিনার আইন অনুসারে, জালিয়াতির উদ্দেশ্যে কোনো প্রাইমারি নির্বাচন কিংবা প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে একবারের বেশি ভোট দেয়া বা কাউকে একবারের বেশি ভোট দিতে উৎসাহ দেয়া অপরাধ। বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের এ পরামর্শে নির্বাচনের দিন ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হতে পারে।

ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার পালিটিক্যাল সায়েন্সের অধ্যাপক রিক হাসেন বলেন, ট্রাম্প দেশের নাগরিককে আইন লঙ্ঘন করতে অনুপ্রাণিত করছেন।

এর ফলে নীতিগত দিক থেকে নির্বাচনে বিশৃঙ্খলা হতে পারে। কেউ কেউ দেশের নাগরিককে প্রেসিডেন্টের কথায় কান না দেয়ার জন্য আনুরোধ জানিয়েছেন। এক টুইটারে আমেরিকান সিভিল লিবার্টিস ইউনিয়ন বলেছে,

দু’বার ভোট দেয়া অবৈধ ও দণ্ডনীয় অপরাধ। দয়া করে কেউ প্রেসিডেন্টের কথায় কান দেবেন না।

এদিকে বাইডেনকে সমর্থন জানিয়ে নোবেল বিজয়ীরা বলেছেন, ‘বর্তমানে বিজ্ঞানের প্রতি যতটা বেশি গুরুত্ব দেয়া দরকার আমাদের ইতিহাসে এতটা বেশি প্রয়োজন আর কখনও ছিল না।

দীর্ঘদিনের দায়িত্ব পালনকালে জো বাইডেন প্রমাণ করেছেন যে, তিনি বিশেষজ্ঞদের কথা শোনেন এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে তার সহযোগিতার হাত প্রসারিত।’

এছাড়া অভিবাসী লোকজন আমেরিকার বুদ্ধিবৃত্তিক জীবনযাত্রায় যে অবদান রেখেছেন তার প্রতি বাইডেনের আলাদা সম্মান রয়েছে বলে এসব নোবেল বিজয়ী উল্লেখ করেছেন।

চিঠিতে তারা স্পষ্ট করে বলেছেন, ‘আমেরিকার নাগরিক এবং বিজ্ঞানী হিসেবে আমরা জো বাইডেনের প্রেসিডেন্ট প্রার্থিতার প্রতি সর্বাত্মক সমর্থন দিচ্ছি।’ তবে জলবায়ু পরিবর্তন এবং করোনাভাইরাসের মহামারীর বিষয়ে তারা সুনির্দিষ্টভাবে কোনো কথা বলেননি।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.