বাংলাদেশের প্রথম বিটুমিন প্ল্যান্ট উদ্বোধন বসুন্ধরা গ্রুপের

যাত্রা শুরু করেছে বসুন্ধরা গ্রুপের অয়েল অ্যান্ড গ্যাস কোম্পানির বসুন্ধরা বিটুমিন প্ল্যান্ট। সড়ক নির্মাণে উন্নত বিটুমিনের যোগান দিতে ‘রোড টু দ্যা ফিউচার স্লোগানে’ গতকাল দুপুরে বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের পাঁনগাওয়ে প্ল্যানটির উদ্বোধন করা হয়েছে। উদ্বোধনের পর পরই উৎপাদন শুরু করেছে প্রতিষ্ঠানটি। দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানির লক্ষে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি করা হয়েছে বসুন্ধরা বিটুমিন প্ল্যান্ট। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বিশেষ অতিথি ছিলেন, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান, বসুন্ধরা গ্রুপের কো-চেয়ারম্যান সাদাত সোবহান তানভীর, ভাইস চেয়ারম্যান সাফিয়াত সোবহান সানভীর, ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর এবং ওয়ালিদ সোবহান, কেরানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন, সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন অফিসের কর্মকর্তা, বিটুমিন ব্যবসার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিক্রেতা, আমদানিকারক, ঠিকাদার, পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ও পরিবহণ মালিক সংস্থা, বসুন্ধরা গ্রুপের অন্যান্য ব্যবসার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পরিবেশক, কর্পোরেট গ্রাহকসহ সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীর ব্যক্তিবর্গ।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, আমরা এতদিন দেশীয় বিটুমিন পাইনি।

দেশের বাইরে থেকে আমদানি করতে হয়েছে। দেশের চাহিদার ৯০ ভাগই আমদানি নির্ভর। এগুলো আমাদের আবহাওয়ার সঙ্গেও মিলেনা। বসুন্ধরা গ্রুপ প্ল্যান্ট তৈরি করে এখন দেশের চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানি করবে। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার পিতার স্বপ্ন পূরণ করতে যাচ্ছেন। সেই স্বপ্ন পূরণে হাজারো মানুষের কর্মসংস্থানের যোগান দিতে দেশে যাঁরা এগিয়ে এসেছেন তাদের সন্মুখভাগে রয়েছে বসুন্ধরা গ্রুপ। বিটুমিন মূলত একটি হাইড্রোকার্বন পণ্য। সড়ক নির্মাণে এটি ব্যবহার করা হয়। দেশে এটি আমদানি নির্ভর পণ্য। দেশে বিটুমিনের চাহিদা প্রায় ৫ লাখ টন। শুধুমাত্র বিপিসির নিয়ন্ত্রণাধীন ইস্টার্ন রিফাইননারি ৭০ হাজার টন উৎপাদন করে। আর ৯০ ভাগই মধ্যেপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করতে হয়। উন্নয়ন কর্মকান্ড সম্প্রসারিত হওয়ার প্রতি বছর বিটুমিনের চাহিদা ১০ থেকে ১৫ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিদেশ থেকে যেসব বিটুমিন আমদানি করা হচ্ছে সেগুলো নিম্নমানের। এজন্য সড়ক নির্মাণ টেকসই হচ্ছে না। এসব চিন্তা মাথায় রেখে বসুন্ধরা গ্রুপ সর্বোচ্চ মানসম্পন্ন বিটুমিন উৎপাদনের পরিকল্পনা নিয়ে এই প্ল্যান্টটি তৈরি করেছে। এই প্ল্যান্ট থেকে বছরে সাড়ে আট লাখ টন বিটুমিন ও পিচ উৎপাদন হবে।
বসুন্ধরা গ্রুপ জানিয়েছে, সড়কে ব্যবহারের জন্য পেনেট্র্যাশন গ্রেডের বিটুমিন উৎপাদন ছাড়াও বসুন্ধরা বিটুমিন প্ল্যান্টে প্রিমিয়াম মানের পিচ উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে। ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী কাটব্যাক, ইম্যুলসিফাইড, অক্সিডাইজড ও পলিমার(এনবিএস, রাবার পাউডার) উৎপাদন ও সরবরাহ করা সম্ভব হবে। সাধারণ পেনেট্র্যাশন গ্রেড(৬০-৭০/৮০-১০০) ও উন্নত গ্রেডের বিটুমিন চাহিদা অনুযায়ী উৎপাদন ও সরবরাহ করা সম্ভব হবে। সংশ্লিষ্টরা জানান, বর্তমানে বাংলাদেশ সড়ক ও জনপদ (সওজ) বিভাগের অধীনে ২২ হাজার কিলোমিটার সড়ক ও মহাসড়ক রয়েছে। যার বড় অংশই সম্প্রসারিত হচ্ছে। সরকার দেশের প্রতিটি জাতীয় সড়ক চার ও ছয় লেনে উন্নীত করার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেছে। এছাড়া জেলা পর্যায়েও সড়ক সম্প্রসারিত হবে। সারাদেশে স্থানীয় সরকারের অধীনে প্রায় ৩ লাখ ৫৪ হাজার কিলোমিটার রাস্তা রয়েছে যার মধ্যে প্রায় ১ লাখ ৫ হাজার কিলোমিটার পাকা রাস্তা। এসব রাস্তা পাকাকরণে বিটুমিনের ব্যাপক চাহিদা থাকবে।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.