দ্বিতীয় শতকে ঢাবি জাতির চাহিদা পূরণ করবে: উপাচার্য

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) নিজের ইতিহাসে দ্বিতীয় শতকে পদার্পণ করেছে। এ শতকে জাতি ও ইন্ডাস্ট্রির চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম হবে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। শুক্রবার (১জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

উপাচার্য বলেন, ‘এবারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর প্রতিপাদ্য ‘গবেষণা ও উদ্ভাবন: ইন্ডাস্ট্রি-অ্যাকাডেমিয়া সহযোগিতা’। এই প্রতিপাদ্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেয়। এটির মধ্য দিয়ে এই বিশ্ববিদ্যালয়কে আমরা দ্বিতীয় শতকে উপযুক্ত হিসেবে গড়ে তোলা ও বিশেষ করে আগামী এক শতকে এই বিশ্ববিদ্যালয়কে নির্মাণের প্রাথমিক যে ধাপ রয়েছে, সেই ধাপ সূচনা করার জন্য আমরা অঙ্গীকার ব্যক্ত করি। ইন্ডাস্ট্রির চাহিদা অনুযায়ী জাতির উন্নয়নের সহায়ক এমন ধরনের উদ্ভাবন ও গবেষণা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিচালিত হবে এবং এর মধ্য দিয়ে উপমহাদেশে খ্যাতিমান এই বিশ্ববিদ্যালয়টি যে অবদান রেখে আসছে সেই ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ণ থাকবে।’

আখতারুজ্জামান বলেন, ‘আগামী অক্টোবরের ২২ ও ২৩ তারিখে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হবে গবেষণা প্রকাশনা মেলা। জাতি এবং ইন্ডাস্ট্রির চাহিদা পূরণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সক্ষমতা তৈরি হচ্ছে।’

বিশ্বের বিভিন্ন উন্নত দেশের বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের উদাহরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘সেসব দেশের অনেক খ্যাতিমান অধ্যাপক শিল্প প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে গবেষণা কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে নোবেল পুরস্কার লাভ করেছেন।’ তিনি বলেন, ‘ইন্ডাস্ট্রি-অ্যাকাডেমিয়া সহযোগিতা বৃদ্ধিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাইদের কার্যকর ভূমিকা পালন করতে হবে।’ শিক্ষার্থীদের প্রায়োগিক জ্ঞান বৃদ্ধি ও স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে শিল্প প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রাম চালুর জন্য উপাচার্য শিল্প মালিকদের প্রতি আহ্বান জানান।

মূল প্রবন্ধে পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, শিক্ষক-গবেষক এবং শিল্পখাতের যৌথ গবেষণা ও উদ্ভাবনী কার্যক্রম গ্রহণ করা হলে উভয়পক্ষ তথা দেশ উপকৃত হবে। প্রয়োজনীয় দক্ষতাসম্পন্ন লোকবল তৈরি এবং শিল্পখাতে নানা উৎপাদন প্রক্রিয়ার উন্নতি ও সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ইতোমধ্যে একটি শিল্পখাত-অ্যাকাডেমিয়া সহযোগিতা প্ল্যাটফর্ম গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে। এক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনের জন্য বাস্তবতার মূল্যায়ন করে নির্দিষ্ট করণীয়সমূহ চিহ্নিত করা প্রয়োজন। এ ব্যাপারে সরকার বাস্তবতাভিত্তিক যথাযথ নীতিমালা ও আইন প্রণয়ন করতে পারে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন-বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, আবাসিক হলগুলোর শিক্ষার্থী, অ্যালামনাই সদস্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।

এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোর শোভাযাত্রা, জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং বিশ্ববিদ্যালয় ও হলসমূহের পতাকা উত্তোলন, পায়রা উড়ানো, বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ১০২ পাউন্ডের কেক কাটা ও সংগীত বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে থিম সং পরিবেশিত হয়। এরপর উপাচার্যের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ থেকে টিএসসি পর্যন্ত বর্ণাঢ্য র‌্যালি অনুষ্ঠিত হয়। এরপর বেলা ১১টায় টিএসসি অডিটোরিয়ামে পল্লী-সহায়ক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমেদ ‘গবেষণা ও উদ্ভাবন: ইন্ডাস্ট্রি-অ্যাকাডেমিয়া সহযোগিতা’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.