ঢাবি’র অপরাধবিজ্ঞানের অধ্যাপক জিয়া রহমান আর নেই

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ও অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. জিয়া রহমান ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি…রাজিউন)।

শনিবার (২৩ মার্চ) ভোরে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে মারা গেছেন তিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাকসুদুর রহমান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

অধ্যাপক জিয়া রহমান ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি অব ক্রিমিনোলজির বোর্ড ডিরেক্টর ছিলেন। এছাড়া তিনি ঢাবি’র সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড রিসার্চ ইন সোশ্যাল সায়েন্সের ডিরেক্টর ছিলেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলায়।

১৯৮২ সালে ঢাকার গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিক ও ১৯৮৫ সালে সরকারি বিজ্ঞান কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক সম্পন্ন করেন তিনি। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞানে ভর্তি হন। সেখানে ১৯৯০ সালে স্নাতক ও ১৯৯২ স্নাতকোত্তরের পর ২০০৩ সালে কানাডার ইউনিভার্সিটি অব ক্যালগ্যারি থেকে দ্বিতীয় মাস্টার্স ও ২০১১ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।

শিক্ষকতা জীবনের শুরুতে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক ও সহকারী অধ্যাপক ছিলেন জিয়া রহমান। পরে ১৯৯৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজ বিভাগে শিক্ষকতায় যোগ দেন। গণমাধ্যমে পরিচিত মুখ ছিলেন ড. জিয়া রহমান।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় তিন দশকের চাকরিজীবনে শিক্ষক সমিতি ও বিভিন্ন প্রশাসনিক পদে দায়িত্ব পালন করেছেন জিয়া রহমান। আওয়ামীপন্থী শিক্ষক নেতা হিসেবে তিনি পরিচিত ছিলেন। ২০২২ সালের জানুয়ারিতে তিনি সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন নির্বাচিত হন।

জিয়া রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের শহীদ মুনীর চৌধুরী ভবনে থাকতেন। রাতে অসুস্থ বোধ করলে নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক হাসান এ শাফীকে ফোন করেন তিনি।

অধ্যাপক শাফী গণমাধ্যমকে বলেন, জিয়া রহমান রাত সাড়ে তিনটায় আমাকে ফোন করে বলেন যে, উনার খুব খারাপ লাগছে, আমি যেন উনার বাসায় যাই। দ্রুত সেখানে যাই। তিনি নিজেই লিফটে করে নিচে নামেন এবং লিফটের দরজা খোলার পরপরই তিনি আমার গায়ের ওপর পড়ে যান। প্রথমে তাঁকে মেঝেতে শুইয়ে দিই, পরে দারোয়ানের সহায়তায় গাড়িতে তুলে হাসপাতালে নিয়ে যাই। গাড়িতে থাকা অবস্থায় তাঁর শ্বাস-প্রশ্বাস ছিল। সম্ভবত লিফটেই হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। চিকিৎসকরা চেষ্টা করেও বাঁচাতে পারেননি।

জিয়া রহমানের মৃত্যুর খবর পেয়ে ল্যাবএইড হাসপাতালে ভিড় করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. এ এস এম মাকসুদ কামালও হাসপাতালে ছুটে যান।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.