কেউ যেন সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদে সম্পৃক্ত না হয়: প্রধানমন্ত্রী

কেউ যেন সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদে সম্পৃক্ত না হয়, ইমামদের প্রধানমন্ত্রী
আগামী প্রজন্ম যাতে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও মাদকে সম্পৃক্ত না হয় সেদিকে খেয়াল রেখে ইমামদের ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সোমবার (৩০ অক্টোবর) নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের পূর্বাচলে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্রে জাতীয় ইমাম সম্মেলনে এ নির্দেশনা দেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইসলাম শান্তির ধর্ম। ইসলাম সহনশীল ধর্ম। এটা আমাদের নবী শিখিয়েছেন। তার বিদায় হজের বাণী আমরা অনুসরণ করি। আমাদের ছেলে-মেয়েরা যেনো সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও মাদকে সম্পৃক্ত না হয়, আপনারা (ইমাম) সেদিকে লক্ষ্য রাখবেন। সকলকেই এ দিকে লক্ষ্য রাখার জন্য আমি দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’

‘এই বাংলাদেশে অন্যান্য ধর্মের লোকও আছে। তারাও যেন নিজ নিজ ধর্ম যথাযথভাবে পালন করতে পারে। কেউ যদি অন্যায় করে, আল্লাহ বিচার করবেন। আমরা বলতে পারি না, কে মুসলমান, কে মুসলমান না। ইসলাম শান্তির ধর্ম। বিশৃঙ্খলা বা সহিংসতা পছন্দ করে না। আল্লাহর হুকুম ছাড়া গাছের পাতাও নড়ে না, আমরা বিশ্বাস করি। কোনো ধরনের সন্ত্রাস যেনো না হয়। তৃণমূল পর্যায়েও যেনো শান্তি থাকে, সেটাই চাই।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সব সময় বলে আসছি, আমরা শান্তি চাই। অশান্তি বা যুদ্ধ চাই না। যুদ্ধের ভয়াবহতা আমরা জানি। নিরীহ মানুষকে যেন হত্যা না করা হয়। তৃণমূলে যেন শান্তি বজায় থাকে। বাংলাদেশের মানুষের উন্নয়ন করাই আমার একমাত্র লক্ষ্য। আপনাদের দোয়া চাই। সারা বিশ্বব্যাপী যে যুদ্ধ চলছে, প্যালেস্টাই যে আক্রমণ চলছে, ছোট্ট শিশুদের যেভাবে হত্যা করা হচ্ছে আমরা আর তা চাই না। প্যালেস্টাইনে বাংলাদেশ সহায়তা পাঠিয়েছে। পৃথিবীর সব রাষ্ট্র প্রধানদের আমি অনুরোধ করেছি যুদ্ধ বন্ধের। আমরা যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই।’

ইসলামের কল্যাণে নেওয়া পদক্ষেপ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চাই, হজের সময় যেন হাজীরা কষ্ট না পায়। হজের ইমিগ্রেশন সহজ করতে ব্যবস্থা নিয়েছি। কাওমী মাদ্রাসার শিক্ষা সনদের স্বীকৃতি দিয়েছি। ৩৫ হাজার মসজিদে পাঠাগার করে দিয়েছি। ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় করেছি। ইমাম-মুয়াজ্জিনদের জন্য ইমাম-মুয়াজ্জিন কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন করেছি। ওলামারা বিপদে পড়লে সহযোগিতা নিতে পারে। যাকাত তহবিল প্রনয়ণ আইন করেছি।’

ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খানের সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য দেন সৌদি আরবের মসজিদ-ই-নববীর ইমাম শায়খ আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহমান আল বুয়াইজান, তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নাজিবুল বশর মাইজভান্ডারী, ঢাকা নেছারিয়া কামিল মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ কাফিলুদ্দিন সরকার সালেহী, ধর্ম সচিব মু. আ. হামিদ জমাদ্দার।

এছাড়া, অনুষ্ঠানে স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, ধর্ম মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হাফেজ রুহুল আমিন মাদানী, জাতীয় মসজিদের খতিব মুফতি রুহুল আমিন, বাংলাদেশে নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈসা বিন ইউসুফ আল দুহাইলানসহ মন্ত্রী পরিষদের সদস্য, সংসদ সদস্য ও সরকারের পদস্থ কর্মকর্তাসহ সারাদেশ থেকে প্রায় এক লাখ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ইমাম এ সম্মেলনে যোগ দেন।

এদিন জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ ইমাম ও বিশ্বজয়ী হাফেজদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি ষষ্ঠ পর্যায়ে ৫০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উদ্বোধন ঘোষণা করেন।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.