‘করোনা আক্রান্ত উন্নত-অনুন্নত দেশের সবাই ভয়ে আছেন’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, করোনা ভাইরাস সবকিছুই কঠিন করে তুলেছে। এমন একটা অস্বাভাবিক পরিবেশ সৃষ্টি করেছে, যে আমাদের দলের কেউ মারা গেলে তার পরিবারের কাছে ছুটে যাবো, একটু সান্তনা দেবো, সেই সুযোগ পাচ্ছি না। সংসদে আসার সময় আমাকে অনেক জায়গা থেকে আসতে নিষেধ করা হয়েছে। আমি বললাম গুলি, বোমা, গ্রেনেড কত কিছুইতো মোকাবিলা করে করে এ পর্যন্ত এসেছি। আর একটা অদৃশ্য শক্তি তার ভয়ে ভীত হয়ে থাকবো? আমার পরিবারের একজন সদস্য মারা যাবে, আর আমি আসবো না, এটা হতে পারে না।
রোববার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে শোক প্রস্তাবের উপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

বিশ্বের করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা ভাইরাস আক্রান্ত উন্নত-অনুন্নত দেশের সবাই ভয়ে আছেন। এই আতঙ্কটা এমন পর্যায়ে চলে যাচ্ছে, যেটা দুঃখজনক। তবে যে এলাকাটায় বেশি আক্রান্ত হচ্ছে, আমরা সঙ্গে সঙ্গে সেখানে লকডাউন করছি।

তিনি আরো বলেন, আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি অন্ততপক্ষে দেশের মানুষ যেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে। পাশাপাশি করোনার ভয়ে মানুষগুলোকে তো না খেয়ে মারতে পারি না। তাদের বেঁচে থাকার ব্যবস্থা নিতে হবে। তাদের জীবনযাত্রা যেন চলে সেই ব্যবস্থা করতে হবে। দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসবে বলে আশা করছি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দারিদ্র্যের হার মাত্র ১০ বছরের মধ্যেই আমরা কমিয়ে এনেছি। আমাদের জিডিপি বেড়ে গিয়েছিল। আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছিলাম। কিন্তু এমন একটা অদৃশ্য শক্তি করোনা ভাইরাস সারাবিশ্বটাকে স্থবির করে দিয়েছে। আমাদের কোনো নেতা-কর্মী মারা গেলে, আমরা ছুটে গেছি তার জানাজায়। আমরা কবরে ফুল দেই ও পরিবারের সঙ্গে দেখা করি, সমবেদনা জানাই। এখন এমনই অস্বাভাবিক পরিবেশ যে আমরা এবার সেটা করতে পারছি না। সেটাই হলো সবচাইতে বড় কষ্টকর। একটা আতঙ্ক, ভয়-ভীতি যেন সারা বিশ্বকে পেয়ে বসেছে। করোনা পরিস্থিতিতে মোকাবেলায় তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যুতে অপুরণীয় ক্ষতি হয়েছে উল্লেখ করে সংসদ নেতা ও প্রধনমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, রাজনীতিতে পাশে থেকে যারা সাহস ও সমর্থন দিয়েছেন, তারা একে একে আমাদের ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। নাসিম ভাইয়ের পর শেখ আব্দুল্লাহ ভাইও চলে গেলেন। বর্তমান করোনা যুদ্ধের সময় একইদিনে দুই সহযোদ্ধাকে হারানো খুবই কষ্টদায়ক।

রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত জীবনে প্রয়াত দুই নেতার অবদানের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি দেশে ফেরার পর পদে পদে আমাকে বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে। এসময় যে দু’জনকে আমি সব সময় পাশে পেয়েছি একই দিনে তাদের হারালাম।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.