অবশেষে মৃতের সংখ্যা সংশোধন করলো চীন

চীনের উহানে যে মৃতের সংখ্যা বলেছিল সরকার, তাতে ভুলত্রুটি নিয়ে সরব হচ্ছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সপ্তাহখানেক আগে নভেল করোনাভাইরাসের প্রথম উপকেন্দ্র এ শহরের লকডাউন তুলে নেয়ার পর থেকেই শুরু হয় বিতর্ক। অবশেষে স্থানীয় সরকার মৃতের সংখ্যা সংশোধন করলো।

হু্বেই প্রাদেশিক সরকার এবার জানিয়েছে, উহানে আসলে মারা গেছেন ৩ হাজার ৮৬৯ জন। এর আগে বলা হয়েছিল মৃতের সংখ্যা ২ হাজার ৫৭৯ জন। অর্থাৎ সংশোধিত হিসাবে মৃতের সংখ্যা বাড়ল ৫০ শতাংশ। আক্রান্তের সংখ্যাও সংশোধন করেছে কর্তৃপক্ষ। মোট আক্রান্ত ৩২৫ বাড়িয়ে ৫০ হাজার ৩৩৩ জনের কথা জানানো হয়েছে।

কর্মকর্তারা বলছেন, এই সংশোধনের কারণ হলো ইতিহাস ও ভুক্তভোগীদের প্রতি আমাদের জবাবদিহিতা। পাশাপাশি তথ্য ও উপাত্তের নির্ভুলতার বিষয়ে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা। সরকারের বহু সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের নিরলস প্রচেষ্টার ফলেই এ সংশোধিত সংখ্যাটি পাওয়া গেছে।

যেখানে কভিড-১৯ মহামারীতে সারা বিশ্বে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্ত হয়েছেন ২১ লাখ ৫০ হাজার মানুষ, প্রাণ হারিয়েছেন ১ লাখ ২৩ হাজারেরও বেশি।

গত ডিসেম্বরে হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম নভেল করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর দুতিন মাসের মধ্যে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা অবিশ্বাস্যরকম কমিয়ে আনতে সক্ষম হয় চীন। টানা ৭৬ দিন কঠোর লকডাউনে থাকার পর গত ৮ এপ্রিল উহান শহরে লকডাউন বিধিনিষেধ শিথিল করা শুরু হয়।

কিন্তু ইউরোপ ও আমেরিকায় এ ভাইরাস যেভাবে ছড়িয়ে পড়ছে এবং প্রাণিহানি ঘটাচ্ছে তাতে চীনের পরিসংখ্যান নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন গবেষক, বুদ্ধিজীবী ও রাজনীতিকরা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সক্ষম হওয়ায় শুরুর দিকে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংয়ের অকুণ্ঠ প্রশংসা করলেও যুক্তরাষ্ট্রে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার পর চীনের বিরুদ্ধে তথ্য গোপনের অভিযোগ তুলছেন। এমনকি পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিরুদ্ধেও।

এছাড়া নভেল করোনাভাইরাসের উৎপত্তি নিয়েও এখন চীনের দিকে আঙ্গুল তুলছে যুক্তরাষ্ট্র। এই অভিযোগের সুরে কথা বলতে শুরু করেছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁও।

এদিকে লকডাউন তুলে নেয়ার পর থেকে পশ্চিমা রাজনীতিকরা তো বটেই খোদ চীনা বুদ্ধিজীবীরাও করোনাভাইরাসে প্রাণহানির তথ্য গোপন করার অভিযোগ তুলছেন। অনেকে চীনের কমিউনিস্ট পার্টি এবং স্বয়ং প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংকে দোষারোপ করছেন।

সূত্র: বিবিসি ও সিএনএন

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.