আমি বাংলাদেশের শিক্ষাবিদদের সম্পর্কে হতাশ হইয়াছি

দেশে শিক্ষাবিদ ও চিন্তাবিদগণ যখন শিক্ষাব্যবস্থা লইয়া চিন্তা-ভাবনা করিতেছেন তখন আমি কেনই-বা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা গ্রহণ করিলাম ইহা একটি প্রশ্নই বটে। স্পষ্ট ভাষায়ই আমি বলিতে চাই, ইহার কারণ আমার হতাশা ও উপলব্ধি দুই-ই। আমি বাংলাদেশের শিক্ষাবিদদের সম্পর্কে হতাশ হইয়াছি।

তাহারা ঘুরাইয়া ফিরাইয়া এমন শিক্ষাব্যবস্থা কায়েম করিতে চান যেখানে ছাত্র-ছাত্রীরা অন্ধ হইয়া যাইবে-কাহাকে মাথায় তুলিয়া নাচিবে, আবার কাহাকেও ঘৃণা ও অবজ্ঞাভরে তুচ্ছ জ্ঞান করিবে।

সোজা কথায় ছাত্রছাত্রীরা শিক্ষাপ্রাপ্ত হইয়াও অজ্ঞ থাকিয়া যায়। মূর্খতার স্বভাব লাভ করিয়া যায়।

দ্বিতীয়ত আমি উপলব্ধি করিতে পারিয়াছি গণসচেতনতা ও গণআন্দোলনের সাথে সাথে আগামী দিনের জন্য ত্যাগী পুরুষ গড়িয়া তোলা দরকার। তাহারা শুধু ত্যাগীই নয়-সাধকও। তাহারাই চিন্তাবিদ, তাহারাই কর্মী, তাহারাই নেতা। এমন পুরুষই সমাজের জন্য কাম্য বটে।

কিন্তু তাহার আবির্ভাবের জন্য প্রকৃতির দিকে চাহিয়া থাকিলে চলিবে না, এহেন পরিবেশও বজায় রাখিতে হইবে। বাংলাদেশের জন্য তেমন ত্যাগী চিন্তাবিদ আজ যে কত জরুরী তাহা প্রকাশ করিবার ভাষা আমার জানা নাই।

মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী
৮ সেপ্টেম্বর ১৯৭০
আমার পরিকল্পনা : ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.