×
নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত : তারিখ - ২০২৪-১২-৩০, সময় - ১১:২৭:১১সুরমা নদী থেকে উৎপত্তি হওয়া ‘ভটের খাল’ নদীর পাড় ভাঙনের কারণে হুমকিতে পড়েছেন সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার তিন শতাধিক পরিবার। ভাঙনের কবলে পড়ে অনেক বাসিন্দা সরিয়ে নিয়েছেন ঘরবাড়িও।
নদীর পশ্চিম পাড়ে উপজেলার সৈদেরগাঁও ইউনিয়নের ব্রাহ্মণগাঁও, পূর্ব চাঁনপুর ও বেরাজপুরের বাসিন্দারা ভাঙনের মুখে রয়েছেন।
স্থানীয়রা বলছেন, ১০ বছর ধরে নদী তীরবর্তী গ্রামের কৃষিজমি, ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়েছে। অনেকেই নিজের ঘরবাড়ি হারিয়ে অন্যের বাড়িতে থাকছেন। গত বছর নদীর তীরে কিছু জিওব্যাগ দেওয়া হয়েছিল। তবে তুলনামূলকভাবে ‘কম’ জিওব্যাগ দেওয়ার কারণে ভাঙন রোধ করা সম্ভব হয়নি। চলতি বছর আরও কিছু জিওব্যাগ দেওয়া হলেও ভাঙন বন্ধ হয়নি। ১৫ দিন আগে ফের ভাঙন দেখা দিয়েছে; যার কারণে কয়েক পরিবারের ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্যের বাড়িতে উঠেছেন।
বর্তমানে নদী তীরের ৪০০ থেকে ৫০০ মিটার জায়গায় ভাঙন হচ্ছে বলে জানা গেছে। ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে নদীর তীরবর্তী তিনটি গ্রামের বাসিন্দারা তাদের ঘরবাড়ি-ফসলি জমি হারিয়ে একেবারে শেষ হয়ে যাবে, আশঙ্কা স্থানীয়দের।
সৈদেরগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য হোসাইন আহমদ রনি বলেন, নদী ভাঙনের কারণে এলাকার অন্তত তিন শতাধিক পরিবারের দেড় হাজার মানুষ ঝুঁকিতে রয়েছে। বর্তমানে নদী তীরবর্তী পাঁচ থেকে আটটি ঘর বিলীনের পথে রয়েছে। নদী ভাঙন বন্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া দরকার; তা না হলে অনেকে নিজেদের বসতভিটা ও কৃষিজমি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যাবে।’
দোয়ারাবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. শমশের আলী বলেন, নদীটির আট কিলোমিটার এলাকা খনন ও ভাঙন রোধে নদীপাড়ের ছয় কিলোমিটার এলাকায় পাকা ব্লক স্থাপনে একটি ডিপিপি রেডি করা হয়েছে। মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিলে দ্রুতই কাজ শুরু হবে।
ইতিহাস বলছে, ভটের খাল নদীর উৎপত্তিস্থল সুরমা নদী। গোবিন্দগঞ্জের উত্তর প্রান্ত দিয়ে বহে যাওয়া সুরমা নদী হতে পূর্বদিকে এই ভটের খাল নদী প্রবাহমান রয়েছে। গোবিন্দগঞ্জ বড়চাল হয়ে দোলার বাজার ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে মঈনপুর বাজারের সীমানা দিয়ে দুদিকে নদী বয়ে গেছে।
পশ্চিম দিকে রাউলী খাসগাঁও এবং পূর্ব-দক্ষিণ দিকে চেলারচর আনুজানী পর্যন্ত নদীর সীমানা। প্রায় ১৫ কলোমিটার লম্বা এ নদী। বর্ষা মৌসুমে জেলেরা নদীতে মাছ ধরে। এ সময় নদী কানায় কানায় পূর্ণ থাকে।
সরকারি নথিপত্রে একে ‘বটের খাল’ নদী বলা হলেও স্থানীয়দের কাছে এটি ‘ভটের খাল’ নদী হিসেবেই পরিচিত।
