×
নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত : তারিখ - ২০২৫-০৬-১০, সময় - ১২:৫৯:২২পরিবেশ আন্দোলনের সুইডিশ কর্মী গ্রেটা থুনবার্গকে মঙ্গলবার (১০ জুন) ইসরায়েল থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, গাজার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়া একটি নৌযান ইসরায়েলি নৌবাহিনী সোমবার আটকানোর পর থুনবার্গ ও তার সহযাত্রীদের বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ নেয়া হয়। ২২ বছর বয়সী গ্রেটাকে ফ্রান্সগামী একটি বিমানে তুলে দেয়া হয় এবং সেখান থেকে তিনি সুইডেনে ফিরে যাবেন বলে জানানো হয়।
ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ একটি ছবিও প্রকাশ করেছে যেখানে দেখা যায়, তিনি তেলআবিব থেকে উড়োজাহাজে উঠেছেন। উল্লেখযোগ্যভাবে, থুনবার্গ সাধারণত বিমানে ভ্রমণ এড়িয়ে চলেন অতিরিক্ত কার্বন নিঃসরণের অভিযোগে। খবর রয়টার্সের।
চারজন যাত্রী অবিলম্বে নিজ নিজ দেশে ফেরার প্রস্তাবে রাজি হলেও, বাকি আটজন তাদের বহিষ্কারাদেশ (জোরপূর্বক পাঠানো) চ্যালেঞ্জ করে আদালতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি মানবাধিকার সংস্থা ‘আদালাহ’। আদালতের শুনানি না হওয়া পর্যন্ত তাদের একটি বন্দি কেন্দ্রে আটক রাখা হবে।
মানবিক সহায়তার উদ্দেশ্যে শুরু এই অভিযাত্রায় ব্রিটিশ পতাকাবাহী ইয়টে চাল, শিশুখাদ্যসহ অল্প পরিমাণ মানবিক সহায়তা ছিল। অভিযানকারীরা জানিয়েছেন, তাদের উদ্দেশ্য ছিল গাজার চলমান মানবিক সংকট সম্পর্কে আন্তর্জাতিক জনমত তৈরি করা। গাজার উপকূলে পৌঁছানোর আগেই ইসরায়েলি বাহিনী তাদের আটক করে ইয়টটি আশদোদ বন্দরে নিয়ে যায় এবং ১২ সদস্যের দলটিকে রাতারাতি বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরে স্থানান্তর করা হয়।
ইসরায়েল এই অভিযানকে ‘হামাসপন্থি প্রচারণা’ বলে আখ্যা দিয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভাষায়, ‘নৌকাটিতে যে সামান্য সাহায্য ছিল, এবং যেটা তথাকথিত ‘সেলিব্রিটিরা’ খরচ করেনি, সেটুকু গাজার জন্য প্রকৃত মানবিক চ্যানেলের মাধ্যমে পাঠানো হবে।’
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ ঘটনায় কটাক্ষ করে বলেন, ‘ইসরায়েলের নিজেরই যথেষ্ট সমস্যা আছে, তাদের গ্রেটা থুনবার্গকে অপহরণ করার দরকার নেই। তিনি একজন রাগী তরুণী, ওর রাগ নিয়ন্ত্রণের ক্লাসে যাওয়া উচিত।’
২০০৭ সালে হামাস গাজার নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর থেকেই ইসরায়েল উপত্যকাটির ওপর সমুদ্রপথে অবরোধ জারি করে। এর উদ্দেশ্য, হামাসের হাতে অস্ত্র পৌঁছানো ঠেকানো। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের এক হামলায় ১,২০০-এর বেশি ইসরায়েলি নিহত হয় এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়। এর পরপরই ইসরায়েল ব্যাপক পাল্টা সামরিক অভিযান শুরু করে, যাতে এখন পর্যন্ত গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের মতে ৫৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং অধিকাংশ ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে।
মার্চে ইসরায়েল গাজার ওপর সম্পূর্ণ অবরোধ জারি করে, যার ফলে জাতিসংঘ জানিয়েছে, উপত্যকার ২৩ লাখ মানুষ এখন দুর্ভিক্ষের মুখে। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে সীমিত খাদ্য সরবরাহ অনুমোদন করা হয়েছে, যা একটি ইসরায়েল-সমর্থিত গোষ্ঠীর মাধ্যমে বিতরণ করা হচ্ছে, যাতে করে হামাসের হাতে সাহায্য না পৌঁছে।
