×

  • নিউজ ডেস্ক

    প্রকাশিত : তারিখ - ২০২৫-০৩-০৬, সময় - ০৭:২৩:০৭

দেশের সড়ক খাত দেখভালের দায়িত্ব পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী শেখ মইনউদ্দীন। তাকে বুধবার (৫ মার্চ) প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিশেষ সহকারী হিসেবে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া দেওয়া হয়েছে। তিনি প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদায় এ দায়িত্ব সামলাবেন।

বিগত দেড় দশকে বাংলাদেশে সড়ক, সেতু ও এ খাতের অবকাঠামো নির্মাণে প্রায় দেড় লাখ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। তবে অভিযোগ হলো, এ খাতের প্রকল্পগুলোর ব্যয় অত্যধিক। বাস্তবায়নে দীর্ঘ সময়ক্ষেপণ হয়েছে। বিপুল বিনিয়োগের পরও সড়ক অবকাঠামোর পূর্ণ সুফল পাচ্ছে না দেশবাসী।

যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যে প্রায় ২৫ বছর ধরে একই ধরনের কাজই করে আসছেন শেখ মইনউদ্দীন। তার জন্ম বাংলাদেশের খুলনায়। উচ্চমাধ্যমিক পড়ার পরই যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছিলেন তিনি। এখন তিনি যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন। শিগগিরই বাংলাদেশে এসে দায়িত্ব নেবেন।

সরকারের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মূলত শেখ মইনউদ্দীনকে সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সড়ক অবকাঠামো নির্মাণে অত্যধিক ব্যয়ের বিষয়টিতে রাশ টানা, নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করা এবং রাজধানী ঢাকাসহ গুরুত্বপূর্ণ সড়কে যানজট কমিয়ে আনার জন্য।

অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর বিদ্যুৎ, জ্বালানি, রেল, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নিয়োগ করা হয় সাবেক সচিব মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানকে। একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় ও বিভাগের দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু সরকারের কাজে বিশেষজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত করার চিন্তা থেকে মইনউদ্দীনকে বিশেষ সহকারী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে সরকারি সূত্র জানিয়েছে। আর এটি ফাওজুল কবির খানের ইচ্ছায়ই হয়েছে বলে জানা গেছে।

সরকারি সূত্র বলছে, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নেওয়া বড় প্রকল্পগুলোর অত্যধিক ব্যয় নিয়ে নানা সমালোচনা আছে। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার অত্যধিক ব্যয়ের কারণ অনুসন্ধান, এ থেকে বের হওয়া এবং টেকসই অবকাঠামো উন্নয়নে জোর দিতে চায়। এ জন্য বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং গণপরিবহন খাতে দায়িত্ব বিশেষজ্ঞদের দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

সরকারের কাছে জমা দেওয়া জীবনবৃত্তান্ত অনুযায়ী, শেখ মইনউদ্দীন ২০২৩ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের পরিবহন বিভাগের নিরাপত্তা ও পরিচালন বিভাগের প্রধান হিসেবে কর্মরত। এর আগে তিনি প্রায় সাত বছর ওই অঙ্গরাজ্যের পরিবহন বিভাগের কর্মসূচি ও প্রকল্প ব্যবস্থাপনা বিভাগের ব্যবস্থাপক ছিলেন। ২০০৫ সাল থেকে এক দশকের বেশি তিনি ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিভাগের প্রকৌশলী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

কোন প্রকল্প একান্ত প্রয়োজনীয়, কোনটি দরকারি এবং কোনটি দরকারি নয়, এটা চিহ্নিত করা হবে।

শেখ মইনউদ্দীন ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া থেকে পুরকৌশলে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন। অবকাঠামো ও পরিবেশ বিষয়ে তিনি বিশেষজ্ঞ। ক্যালিফোর্নিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে পুরকৌশল বিষয়ে মাস্টার্স এবং ইউনিভার্সিটি অব লুইজিয়ানা থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন শেখ মইনউদ্দীন। তাঁর শিক্ষাজীবনের মূল বিষয় ছিল পুরকৌশল, পরিবহন ও পরিবেশ। যুক্তরাষ্ট্রের প্রকৌশলীদের নানা পেশাগত সংঘের সঙ্গে তার যুক্ততা রয়েছে।

সরকারি সূত্র বলছে, কর্মজীবনে শেখ মইনউদ্দীন সরকারি ও বেসরকারি অর্থায়নে শত শত কোটি ডলারের প্রকল্প বাস্তবায়নে যুক্ত ছিলেন। তিনি গণপরিবহন ব্যবস্থাপনায়ও উদ্ভাবনী ভূমিকা রেখেছেন। এর মধ্যে ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলেস শহরে ‘ডায়নামিক লেন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’ চালু করতে নেতৃত্ব দেন তিনি, যা মহাসড়কের নিরাপত্তা বৃদ্ধি এবং যানজট নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। মহাসড়কের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং সদ্ব্যবহার বিষয়েও তার গবেষণা রয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন



এ জাতীয় আরো খবর..
ইউটিউবে আমরা...
ফেসবুকে আমরা...