সৌদি আরবের গ্র্যান্ড মুফতি শেখ আব্দুল আজিজ বিন আবদুল্লাহ আল শেখ ৮২
বছর বয়সে ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় সকাল ১১টার দিকে রিয়াদে নিজ বাসভবনে
তার মৃত্যু হয়।
রাজকীয় সৌদি আদালত এক বিবৃতিতে তার মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছে।
রিয়াদের ইমাম তুর্কি বিন আবদুল্লাহ মসজিদে আসরের নামাজ শেষে তার জানাজা
অনুষ্ঠিত হবে। বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ নির্দেশ দিয়েছেন, আসরের
নামাজের পর মক্কার মসজিদুল হারাম, মদিনার মসজিদে নববি এবং সারাদেশের
মসজিদগুলোতে তার জন্য সালাতুল গায়েবানা জানাজা আদায় করা হবে।
শেখ আব্দুল আজিজ আল শেখ ১৯৯৯ সাল থেকে সৌদি আরবের প্রধান মুফতির
দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। তিনি ছিলেন দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় কর্তৃপক্ষ,
সিনিয়র উলামা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং স্থায়ী কমিটি ফর ইলমি রিসার্চ অ্যান্ড
ইফতার প্রধান। এর আগে এই পদে ছিলেন শেখ মুহাম্মদ বিন ইব্রাহিম আল শেখ এবং
শেখ আব্দুল আজিজ বিন বাজ।
১৯৪৩ সালের ৩০ নভেম্বর মক্কায় জন্ম নেওয়া এই শীর্ষ ইসলামিক ব্যক্তিত্ব
অল্প বয়সে পিতৃহারা হন এবং শৈশবেই কোরআন হিফজ করেন। বিশের কোঠায় দৃষ্টি
হারালেও শারিয়াহ অধ্যয়ন অব্যাহত রাখেন তিনি। একাধারে তিনি শিক্ষক, ইমাম,
খতিব ও গবেষক ছিলেন। ইমাম তুর্কি বিন আবদুল্লাহ মসজিদ ও আরাফার নামিরা
মসজিদে বহু বছর খুতবা প্রদান করেছেন শেখ আব্দুল আজিজ আল শেখ।
তিনি শারিয়াহ বিষয়ে বহু গ্রন্থ রচনা করেছেন, যার মধ্যে রয়েছে ফতোয়ার
সংকলন, আকিদা সম্পর্কিত গ্রন্থ এবং হালাল-হারাম বিষয়ে রচনা। তার লেখনী ও
ফতোয়া ইসলামি গবেষণা ও ফিকহ চর্চায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। শেখ আব্দুল
আজিজ আল শেখ ঐতিহাসিকভাবে প্রভাবশালী ইসলামি-শেখ পরিবারভুক্ত, যেখান থেকে
ইসলামি চিন্তাবিদ ওতাহাবী আন্দোলনের নেতা মুহাম্মদ ইবনে আব্দ আল-ওয়াহাবের
বংশধররা উঠে এসেছেন। সৌদি আরবে ধর্মীয় নেতৃত্বে এই পরিবারের ভূমিকা
যুগান্তকারী।
গ্র্যান্ড মুফতির পদটি ১৯৫৩ সালে সৌদি বাদশাহ আব্দুল আজিজ প্রতিষ্ঠা
করেছিলেন। শেখ আব্দুল আজিজ দীর্ঘ দুই দশক এই পদে থেকে ধর্মীয়, সামাজিক ও
আইনি সিদ্ধান্তে প্রভাব রেখেছেন এবং মুসলিম বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী আলেম
হিসেবে স্বীকৃত হয়েছেন। তিনি ১৯৮১ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত টানা ৩৫ বছর
হজের খুতবা প্রদান করেছেন। ২০১৬ সালে বার্ধক্যজনিত কারণে তিনি এ দায়িত্ব
থেকে অবসর নেন।
সূত্র: গালফ নিউজ