‘৫৫ কেজি সোনা গায়েবে জড়িত কেউই ছাড় পাবে না’

ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কাস্টমসের গুদাম থেকে সাড়ে ৫৫ কেজি স্বর্ণ চুরির ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করতে সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করছে গোয়েন্দা পুলিশ। সেখান থেকে ফুটেজ গায়েব করা হয়েছে কিনা- তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান সংস্থাটির প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

এই স্বর্ণ চুরির ঘটনায় আটজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। বৃহস্পতিবার দুপুরে ডিবি কার্যালয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

এ বিষয়ে ডিবিপ্রধান হারুন বলেন, বদলি হওয়া ও বদলি হয়ে আসা এবং আগে পরে যারাই সেখানে যাতায়াত করেছেন তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

হারুন বলেন, প্রথমে পত্রপত্রিকাতে সংবাদ প্রকাশের পরই আমরা ৫৫ কেজি সোনা গায়েবের তথ্য পাই। মামলা হওয়ার পর থানা পুলিশ তদন্ত করছিল। আমরাও ছায়া তদন্ত করছিলাম। পরবর্তীতে মামলার তদন্তভার ডিবি পায়। কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে আমরা অনুরোধ করেছি- যারা গোডাউনের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন তাদের আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করতে চাই। এর প্রেক্ষিতে আটজনকে আমাদের কাছে পাঠানো হয়েছে। তাদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এর মধ্যে চারজন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা ও চারজন সিপাহী।

তিনি বলেন, আসলে বিমানবন্দরের মতো জায়গায়, যেখানে কঠোর নিরাপত্তা- সেখান থেকে সোনা গায়েবের ঘটনাটি আমরা বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছি। নিয়মানুযায়ী যারা বদলি হবেন আর নতুন যারা আসবেন তাদের কাছে সব কিছু বুঝিয়ে দেবেন পুরাতনরা। সেখানে কারা কারা গেছেন, অন্য কারো যোগাযোগ ছিল কিনা, দায়িত্ব হস্তান্তরে কোনো সমস্যা ছিল কিনা, সিসিটিভি লাগানো ছিল কিনা, নষ্ট ছিল কিনা। সন্দেহভাজনদের আমরা জিজ্ঞাসাবাদের আওতায় নিয়ে আসব।

ডিবিপ্রধান বলেন, যারা দায়িত্বে ছিলেন ও নতুন দায়িত্বে বদলি হয়ে এসেছেন সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। সব কিছু বিচার বিশ্লেষণ করলে বোঝা যাবে। প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক যে- বিমানবন্দরের মতো একটা জায়গায় এতগুলো সোনা চুরি হয়ে গেল, অথচ কেউ কিছু জানবে না?

কাস্টমসের শীর্ষ পর্যায়ের কোনো কর্মকর্তা জড়িত আছেন কিনা- জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সুস্পষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ঊর্ধ্বতন কেউ জড়িত থাকলেও ছাড় দেওয়া হবে না। ক্যাডার বা নন-ক্যাডার বলে নয়, অপরাধ তো অপরাধই। অপরাধী যেই হোক কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

অনুমতি ছাড়া যেখানে (কাস্টমস গোডাউন) যাওয়া যায় না, সেখানে ডিবি কর্মকর্তারা গেলেও অনুমতি লাগে। এ অবস্থায় ডিবির তদন্ত কাজ বাধাগ্রস্ত হবে কিনা? এ বিষয়ে সাংবাদিকরা ডিবিপ্রধানের কাছে জানতে চান। জবাবে তিনি বলেন, আমরা মনে করি- তারা তদন্তে আন্তরিক ও সহযোগিতা করবেন। আশা করছি, আমরা স্বাধীনভাবে তদন্ত করতে পারব।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.