হাজার কোটি ব্যয়ে নির্মিত শ্রীলঙ্কার লোটাস টাওয়ারের কাজ শুধু আলোকসজ্জা

শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোয় অবস্থিত ‘কলম্বো লোটাস টাওয়ার’। ৩৫৬.৩ মিটার দীর্ঘ টাওয়ারটি শুধু শ্রীলঙ্কার-ই নয়, বরং পুরো দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যেই সবচেয়ে উঁচু টেলিকমিউনিকেশন টাওয়ার।

দেশটির সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং বর্তমান প্রেসিডেন্ট গোটাবাইয়া রাজাপাকসের ভাই মাহিন্দ রাজাপাকসে ক্ষমতায় থাকাকালীন ২০১২ সালে প্রকল্পটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল, এমন তথ্য দিয়ে শ্রীলঙ্কার ইংরেজি দৈনিক ডেইলি মিরর এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছেঃ

১০৪.৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (প্রায় ৯৬৫ কোটি টাকা) ব্যয়ে নির্মিত লোটাস টাওয়ারের ৮০ শতাংশ অর্থায়ন-ই করেছিল চীন। বাকি ২০ শতাংশ শ্রীলঙ্কার টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন (টিআরসি) সরবরাহ করেছিল।

২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে শ্রীলঙ্কার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা লোটাস টাওয়ারের উদ্বোধন করেছিলেন। টাওয়ারটি নির্মাণে মূলত অর্থের অভাব ছাড়াও নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতা ছিল। উদ্বোধনের সময় সিরিসেনা অভিযোগ করেছিলেন যে, প্রকল্পটিতে কাজ করার জন্য চুক্তিবদ্ধ একটি চীনা প্রতিষ্ঠান রাষ্ট্রের ১১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার নিয়ে অদৃশ্য হয়ে গেছে।

রাজধানীর কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত দৃষ্টিনন্দন টাওয়ারটির তেমন কোন গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম এখনও পর্যন্ত চোখে পড়ে নি উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়ঃ

প্রকল্পটির মূল পরিকল্পনায় হোটেল, জাদুঘর, রেস্তোরাঁ, অডিটোরিয়াম, পর্যবেক্ষণ ডেক, শপিং মল, সম্মেলন কেন্দ্র সহ এটিকে একটি টেলিকমিউনিকেশন টাওয়ার হিসেবে গড়ে তোলার কথা ছিল। কিন্তু, উদ্বোধনের প্রায় তিন বছর অতিবাহিত হয়ে গেলেও টাওয়ারটি এখনো চালু হয়নি। টাওয়ারে প্রস্তাবিত উপরোক্ত কেন্দ্রগুলো স্থাপন করা হয়নি অথবা বলা যায় সেগুলো জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়নি।

এখন মনে হচ্ছে টাওয়ারটির একমাত্র উদ্দেশ্য হল ভেসাক (শ্রীলঙ্কার বড় ধর্মীয় উৎসব) এবং বড়দিনের মতো বিশেষ দিনগুলো উদযাপন করা কিংবা স্তন ক্যান্সার সচেতনতা দিবসের মতো দিনগুলোতে কলম্বোতে আলোকসজ্জা করা।

ডেইলি মিরর এর প্রতিবেদনে বলা হয়ঃ লোটাস টাওয়ার হলো শ্রীলঙ্কায় চীনের অর্থায়নে পরিচালিত এমন বেশ কয়েকটি প্রকল্পের মধ্যে একটি যেগুলোর এখনও পর্যন্ত কোনো প্রত্যাশিত ফল পাওয়া যায় নি। যদিও, এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে ঋণ হিসেবে চীন থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ নেওয়া হয়েছে।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.