সেলাই মেশিন নিয়ে ‘সবচেয়ে সুখী’ বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে হাত হারানো ওমর

ভোলার ওমরের বয়স ১৫ বছর। ওমর যখন ছোট ছিল, তখন সে একটি দুর্ঘটনায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে আহত হয়েছিল। ওমরের চিকিৎসকরা তখন তার হাত এবং বাহু রক্ষা করতে পারেননি। সংক্রমণের পর সেগুলো কেটে ফেলা হয়েছিল। অস্ত্রোপচার করার পর ওমর সুস্থ হয়ে উঠলেও তাকে তিন মাস হাসপাতালে কাটাতে হয়েছিল।

ওই দুঃসহ ঘটনার স্মৃতি চারণ করে ওমর বলে, “প্রথমদিকে এটি খুবই যন্ত্রণাদায়ক ছিল। তখন আমি কোনো কাজ করতে পারতাম না। কিন্তু আমি সব সময় চেষ্টা করে গেছি।”

ওমরের সব সময়ের পছন্দের বিষয় ছিল ফ্যাশন। ইউনিসেফের সহযোগিতায় পরিচালিত একটি প্রকল্পের মাধ্যমে একজন দর্জি হওয়ার স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে সক্ষম হয়েছে ওমর। ইউনিসেফ বাংলাদেশ সূত্রে জানা গেছে, ওই প্রকল্পটির আওতায় ওমরকে সেলাই দক্ষতার প্রশিক্ষণ এবং বিভিন্ন সরঞ্জাম প্রদান করা হয়েছিল।

সেই যে চলা, আর থেমে থাকেনি ওমর। তার গ্রাহকের সংখ্যা এখন অনেক। নিজের সেলাই মেশিন নিয়ে যখন ওমর কাপড় সেলাইয়ের কাজ করে তখন সে নিজেকে সবচেয়ে সুখী বলেই মনে করে।

জামার গলা এবং হাতার ডিজাইনের
প্রসঙ্গ বর্ণনা করতে গিয়ে ওমর বলে, “ডিজাইনের দক্ষতা অর্জন করে আমি বড় কিছু করতে চাই। এখন খুব সুন্দর সুন্দর ডিজাইন আছে। আমি আসলে এ ধরণের কাজ পছন্দ করি। সে কারণেই আমি সেলাইয়ের কাজ শিখতে চেয়েছিলাম।”

ইউনিসেফ বাংলাদেশ বলছে- এমন সংকল্প ওমরকে আজও চালিত করে। তার দৈনন্দিন কাজগুলো সে নিজেই করে এবং এর জন্য কারও সহযোগিতা প্রয়োজন হয় না। ঠিক অন্য কিশোরদের মতো সেও তার বন্ধুদের সাথে ফুটবল এবং ব্যাডমিন্টন খেলতে ভালোবাসে। 

এদিকে, শিশু সুরক্ষা কর্মসূচিতে অবদানের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছে ইউনিসেফ বাংলাদেশ। কর্মসূচিটির লক্ষ্য হলো প্রতিবন্ধী ব্যক্তিসহ শিশু এবং কিশোর-কিশোরীদের তাদের অধিকার সম্পর্কিত দাবি আদায়ের জন্য ক্ষমতায়িত করা।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.