‘সরকারে এসে রেলের উন্নয়নে ব্যাপক পদক্ষেপ নেয় আ.লীগ’

ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া থেকে কুমিল্লার লাকসাম পর্যন্ত ৭২ কিলোমিটার ডুয়েলগেজ ডাবল লাইন উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মধ্য দিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে নতুন যুগের সূচনা হলো। এর ফলে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে আর কোনো ট্রেনকে ক্রসিংয়ে পড়তে হবে না। কমে আসবে ট্রেনযাত্রার সময়।

প্রধানমন্ত্রী বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ডাবল লাইন ট্রেন চলাচলের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় এসে অলাভজনক বলে বিশ্বব্যাংকের পরামর্শে রেল বন্ধের পদক্ষেপ নিয়েছিল। আওয়ামী লীগ সরকারে এসে রেলের উন্নয়নে ব্যাপক পদক্ষেপ নেয়।

বিএনপি-জামায়াত যেন রেললাইন ক্ষতি করতে না পারে সেদিকে দেশের জনগণকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের জনগণ নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েছে বলেই এই কাজগুলো করা সম্ভব হয়েছে।

এটা জাতীয় সম্পদ, এটা জনগণকে রক্ষা করতে হবে।
তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত শুধু ধ্বংস করতে জানে, সৃষ্টি করতে জানে না, এরা কিছু দিতে জানে না। এরা নিজেদের আখের গোছাতে জানে, লুটপাট করতে জানে, দুর্নীতি করতে পারে, মানিলন্ডারিং করতে পারে। তাদের কাছ থেকে যেন দেশবাসী রক্ষা পায়।

শেখ হাসিনা বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া থেকে কুমিল্লার লাকসাম পর্যন্ত ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন উদ্বোধনের পর এই লাইনে ট্রেনের গতি হবে ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার। এই লাইনে রেলের গতি এনে দিয়েছি। চালকদের সতর্ক থাকতে হবে, কোন জায়গায় কতটুকু দ্রুতগতিতে চলবে সেটা ভাবতে হবে।

এটি আধুনিক ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন উল্লেখ করে সরকাপ্রধান বলেন, এর মাধ্যমে ঢাকা-চট্টগ্রাম সবটুকু লাইনই ডাবল লাইনে উন্নীত হলো। এতে যাত্রীরা আরাম আয়েশে চলতে পারবে।

পরিবহন খরচও কমে যাবে, এ পথে আগের চেয়ে এক ঘণ্টা সময় কম লাগবে। কক্সবাজার পর্যন্ত কাজ প্রায় শেষের দিকে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
কুমিল্লার লাকসাম রেলওয়ে স্টেশনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান প্রান্তে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম ও রেলপথ মন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন অংশ নেন। এছাড়া গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

আখাউড়া থেকে লাকসাম পর্যন্ত ৭২ কিলোমিটার ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন নির্মাণ হওয়ায় ৩২১ কিলোমিটার দীর্ঘ ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের পুরো অংশ ডাবল লাইনে উন্নীত হলো।

এখন থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে আর কোনো ট্রেনকে ক্রসিংয়ে পড়তে হবে না আশা করা হচ্ছে। ডুয়েল গেজ হওয়ায় এ পথে এখন মিটার গেজ ও ব্রড গেজ এ দুই ধরনের ট্রেনই চলাচল করতে পারবে।
লাকসাম থেকে আখাউড়া পর্যন্ত ৭২ কিলোমিটার রেলপথে ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন করতে ২০১৪ সালে ছয় হাজার ৫০৪ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন হয় একনেকে।

প্রকল্পের মোট ব্যয়ের মধ্যে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) দিয়েছে চার হাজার ১১৮ কোটি টাকা ঋণ। এক হাজার ৩৫৯ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে ইউরোপীয় ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক। আর এক হাজার ২৬ কোটি টাকার বেশি অর্থায়ন করেছে সরকার।

২০১৬ সালের ১ নভেম্বর শুরু হয় নির্মাণ কাজ। ২০২২ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর কুমিল্লা থেকে লাকসাম পর্যন্ত ২৫ কিলোমিটার অংশ ট্রেন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.