প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন আজ

দেশের দূরদর্শী ও বলিষ্ঠ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন আজ। তিনি ১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর গোপালগঞ্জের মধুমতী নদী বিধৌত টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন।

স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছার জ্যেষ্ঠ সন্তান ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি তিনি।

বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা এখন চতুর্থ দফায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। এর মধ্যে ২০০৯ সাল থেকে টানা তিন মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে রয়েছেন তিনি। দেশের ইতিহাসে এমন রেকর্ড আর কারও নেই।

আমাদের প্রধানমন্ত্রী বাঙালিয়ানার ধারক। সহজ নিরাভরণ জীবন যাপন করেন তিনি। কিন্তু রাষ্ট্র পরিচালনায় প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত দূরদর্শিতার পরিচয় দিয়ে চলেছেন। দেশের প্রতিটি খাত নিয়ে তার একটা পরিকল্পনা রয়েছে। সেই পরিকল্পনা মতো তিনি এগিয়ে চলেছেন। রাষ্ট্র পরিচালনায় তিনি অত্যন্ত মানবিক ও আন্তরিক। রাষ্ট্র পরিচালনার মতো ব্যস্ত সময়ের মধ্যেও তিনি প্রতিটি অগ্রগতির বিষয়ে খোঁজখবর রাখেন। রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে ব্যস্ততার মধ্যেও শেখ হাসিনা সাহিত্য চর্চা ও সৃজনশীল লেখায় নিজেকে সম্পৃক্ত রেখেছেন। প্রতি বছর বইমেলায় তার রচিত গ্রন্থ প্রায় নিয়মিতভাবেই প্রকাশিত হয়ে থাকে।

গণভবন সূত্রে জানা যায়, গভীর রাতে তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ার মধ্য দিয়ে দিন শুরু হয় তার। এরপরে কোরআন তেলাওয়াত করেন। ফজরের নামাজ শেষ করে চা-নাস্তা খাওয়ার পাশাপাশি সংবাদপত্র পড়েন। কখনো প্রয়োজনীয় নির্দেশনাও দেন।

বাংলাদেশের স্থপতি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের জ্যেষ্ঠ সন্তান শেখ হাসিনা ১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর গোপালগঞ্জের মধুমতী নদী তীরবর্তী প্রত্যন্ত গ্রাম টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তার ডাক নাম হাসু। দাদা শেখ লুত্ফর রহমান ও দাদি সাহেরা খাতুনের অতি আদরের নাতনি শেখ হাসিনার শৈশব-কৈশোর কেটেছে দাদা-দাদির কোলেপিঠে মধুমতী নদীর তীরে টুঙ্গিপাড়ায়। তারা পাঁচ ভাইবোন। অপর চার জন হচ্ছেন :শেখ কামাল, শেখ জামাল, শেখ রেহানা ও শেখ রাসেল। ভাইবোনদের মধ্যে শেখ হাসিনা ও রেহানা ছাড়া সবাই ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে ঘাতকদের হাতে নিহত হন। পরিবারের সবাইকে হারিয়ে বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের মানুষই যেন তার বৃহৎ পরিবারের পরিণত হয়েছে।

শেখ হাসিনার শিক্ষাজীবন শুরু হয় টুঙ্গিপাড়ার এক পাঠশালায়। ১৯৬৫ সালে আজিমপুর বালিকা বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯৬৭ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন ঢাকার বকশীবাজারের পূর্বতন ইন্টারমিডিয়েট গভর্নমেন্ট গার্লস কলেজ (বর্তমান বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা মহাবিদ্যালয়) থেকে। ঐ বছরই ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। কলেজে অধ্যয়নকালে তিনি কলেজছাত্রী সংসদের সহ-সভানেত্রী পদে নির্বাচিত হন। তিনি আইয়ুববিরোধী আন্দোলন ও ছয় দফা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। কারাবন্দী বাবার আগ্রহে ১৯৬৭ সালের ১৭ নভেম্বর পরমাণুবিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার সঙ্গে শেখ হাসিনা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। স্বাধীনতাযুদ্ধ চলাকালে গৃহবন্দী থাকা অবস্থায় ১৯৭১ সালের ২৭ জুলাই শেখ হাসিনার প্রথম সন্তান সজীব ওয়াজেদ জয়ের জন্ম হয়। ১৯৭২ সালের ৯ ডিসেম্বর জন্ম নেন তার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল।

রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে গতকাল এক বাণীতে তাকে প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও উষ্ণ অভিনন্দন জানিয়ে বলেছেন, পিতার মতোই শেখ হাসিনা গণমানুষের নেতা। তার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, বিচক্ষণতা, গতিশীল নেতৃত্ব, মানবিক মূল্যবোধ দিয়ে তিনি শুধু দেশেই নন, বহির্বিশ্বেও অন্যতম সেরা রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।

অপরদিকে জন্মদিন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ভারতের হাইকমিশনার শ্রী বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে নরেন্দ্র মোদির শুভেচ্ছা হিসেবে পাঠানো একটি চিঠি ও একটি ফুলের তোড়া হস্তান্তর করেন।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.