নিষেধাজ্ঞা শেষে জেলেদের জালে রুপালি ইলিশ

নিষেধাজ্ঞার ২২ দিন পর লক্ষ্মীপুরের মেঘনা নদীতে মাছ ধরা পুরোদমে শুরু হয়েছে। মাছঘাটগুলোতে ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলে ও আড়ৎতদাররা। নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর জাল ফেলা ও মাছ শিকারে নদীতে ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলেরা। জেলেদের জালে ইলিশ ধরা পড়ছে বলে জানিয়েছেন জেলা মৎস্য কর্মকর্ত মো. আমিনুল ইসলাম।

তিনি জানান, এবার সিত্রাংয়ের কারণে নদীতে প্রচুর পরিমাণ পানি বাড়ছে। এতে করে সাগর থেকে মেঘনার মোহনায় ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ আসতে শুরু করেছে। ফলে নিষেধাজ্ঞা শেষে জেলেদের জালে ধরা পড়ছে ইলিশ। তবে প্রচুর পরিমাণ মা ইলিশ ডিম ছেড়েছে। এছাড়া মাছের আকার অনেক বড়। দুই থেকে তিন কেজি ওজনের মাছও পাওয়া যাচ্ছে। প্রশাসন, পুলিশ, কোস্টগার্ড ও মৎস্য বিভাগের যৌথ অভিযানে এবারের অভিযান সফল হয়েছে।

গত বছরের চেয়ে এবার ইলিশের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২৮ হাজার টন। যা গত বছরের চেয়ে তিন হাজার টন বেশি হবে আশা মৎস্য বিভাগের।

জেলেরা জানান, ২২দিন মাছ ধরা বন্ধ ছিল। মধ্যরাত থেকে নিষেধাজ্ঞা উঠে যাবার পর নদীতে মাছ শিকারে নামছেন। জালেও ধরা পড়ছে প্রচুর পরিমাণ ইলিশ। তবে মাছের পেটে প্রচুর ডিম রয়েছে। মা ইলিশ পুরোপুরি ডিম ছাড়তে পারেনি। মাছের আকার অনেক বড়। দামও ক্রেতার নাগালের ভিতরে। এতে তারা অনেক খুশি। আজকের মতো যদি সব সময় এইভাবে ইলিশ পাওয়া যায়, তাহলে কিস্তির টাকা ও সংসার চালাতে আর কোন কষ্ট হবে না।

জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষায় লক্ষ্মীপুরের রামগতির আলেকজান্ডার থেকে চাঁদপুরের ষাটনাল এলাকার ১শ’ কিলোমিটার পর্যন্ত মেঘনা নদীর ইলিশের অভয়াশ্রম ঘোষিত এলাকায় ৭ অক্টোবর থেকে ২৮ অক্টোবর ২২ দিন ইলিশসহ সকল প্রকার মাছ ধরা নিষিদ্ধ ছিল। এসময় সব রকমের ইলিশ সংরক্ষণ, আহরণ, পরিবহন, বাজারজাত করণ ও মজুদকরণ বন্ধ ছিল। এই জেলায় ৫২ হাজার জেলে রয়েছে।

সবাই মেঘনা নদীতে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করে। এই নিষেধাজ্ঞার সময় জেলেদের মধ্যে ১ হাজার টন ভিজিএফের চাল বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া ২২দিনে মেঘনায় ৩শ বেশি অভিযান পরিচালনা করে প্রায় ২৫ লাখ মিটার কারেন্ট জাল, ২১ জেলেকে কারাগারে ও এক হাজার কেজি মা ইলিশ জব্দ করা হয়। জেলায় প্রায় ত্রিশটি ছোট-বড় মাছঘাট রয়েছে। প্রত্যেকটি ঘাটে ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলে ও মৎস্য ব্যবসায়ীরা। প্রতিটি ঘাটে সরগরম রয়েছে।

মজুচৌধুরীরহাট ঘাটের জেলে কালাম, মারফত উল্যাহ বলেন, নিষেধাজ্ঞা শেষে মেঘনায় জালে ধরা পড়ছে রুপালি ইলিশ। দীর্ঘ ২২দিন অলস সময় কাটিয়েছি। এখন মাছ শিকারে ব্যস্ত সময় কাটাতে হচ্ছে। তবে জালে মাছ ধরা পড়ায় খুশি লাগছে। আজকে যে মাছ পাওয়া গেছে, সেটা গত কয়েক বছরের তুলনায় আকারে অনেক বড়।

মতিরহাটের আড়ৎদার লিটন বলেন, মাছ পাওয়া যাচ্ছে। দামও তুলনামূলক ক্রেতা ও বিক্রেতার নাগালের ভিতরে রয়েছে। এ হাটে সকাল ১০টায় পর্যন্ত প্রায় ২০ লাখ টাকার মাছ আমদানি ও রপ্তানি হচ্ছে। প্রতিদিন কোটি টাকার মাছ বিক্রির আশা করেন তিনি।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.