তামাকমুক্ত দেশ গড়ার শপথ সহস্রাধিক শিক্ষার্থীর

তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে শপথ নিয়েছেন সহস্রাধিক শিক্ষার্থী। মঙ্গলবার বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি মিলনায়তনে তারা এ শপথ নেন।

শপথের মাধ্যমে ধূমপানমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত এবং সব ধরনের তামাকজাত পণ্যের ব্যবহার থেকে নিজেদের মুক্ত রাখার পাশাপাশি অন্যদেরও তামাকপণ্য ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করার অঙ্গীকার করেন শিক্ষার্থীরা। একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশের বাস্তবায়নে একাত্মতা জানান তারা। শপথে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শিক্ষকরাও অংশ নেন।

বাংলাদেশ শিশু একাডেমি মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফোরাম ফর হেলথ অ্যান্ড ওয়েলবিং’ আয়োজিত “তামাক: পরিবেশের জন্য হুমকি” শীর্ষক আলোচনা সভা ও শপথ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে পুরুষদের চেয়ে নারীরা ধোঁয়াবিহীন তামাকপণ্য বেশি ব্যবহার করেন। শুধু তাই নয়, ইদানিং তরুণ-তরুণীদের মধ্যেও ধূমপানের হার বাড়ছে। যা স্বাস্থ্য ব্যবস্থার জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। বাস, লঞ্চ ও ট্রেনের টার্মিনালগুলোর মতো পাবলিক প্লেস এবং পাবলিক ট্রান্সপোর্ট, বাসাবাড়ি ও রেস্টুরেন্টসহ সবখানে আমাদের নারী-শিশুরা পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হচ্ছেন।

তিনি জানান, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তামাক নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন প্রশিক্ষণে তামাকের বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি করা হচ্ছে। পাশাপাশি, সারাদেশে আমাদের যে কিশোর-কিশোরী ক্লাবগুলো রয়েছে, তাদের মাধ্যমেও আমরা তামাক নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে সচেতনতা তৈরি করবো।

ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪০ সালের মধ্যে দেশকে তামাকমুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছেন। এ ঘোষণা বাস্তবায়নে সম্মিলিত উদ্যোগ অত্যন্ত জরুরি। সরকার তামাক নিয়ন্ত্রণে বহুমাত্রিক পদক্ষেপ নিয়েছে। জাতিসংঘ ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা’য় (এসডিজি) সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে অসংক্রামক রোগজনিত অকালমৃত্যু এক-তৃতীয়াংশ হ্রাস এবং এফসিটিসি’র বাস্তবায়নকে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এসডিজির প্রায় প্রতিটি উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য তামাক নিয়ন্ত্রণের ওপর গুরুত্ব রয়েছে। সরকারের অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় তামাক নিয়ন্ত্রণকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। প্রয়োজনে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন করতে হবে।

অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, ধূমপানের মধ্যে কোনো ভালো কিছু নেই। এটা খুবই কষ্টদায়ক একটা ব্যাপার। তাই তোমরা কখনো ধূমপান করবে না, অন্য কোনো তামাকপণ্যও ব্যবহার করবে না। তামাকমুক্ত বাংলাদেশ আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ আমাকে অনুপ্রাণিত করছে। এর মধ্য দিয়েই তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়া সম্ভব হবে।

ডা. বর্ধন জাং রানা বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফোরাম ফর হেলথ এন্ড ওয়েলবিংয়ের এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, তামাক নির্মূল করার মাধ্যমেই টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে।

সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শারিতা মিল্লাত সিআইপি। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা, তামাকবিরোধী সংস্থার প্রতিনিধি, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, অধ্যাপক, ক্যাম্পেইন ফর ট্যোবাকো-ফ্রি কিডস ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধিরা।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.