টিকাদান কর্মসূচির পরিধি বাড়াতে নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

টিকাদান কর্মসূচির পরিধি বাড়াতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, টিকাদানের নিবন্ধনের বিষয়ে স্বাস্থ‌্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ‌্যের পরিচালককে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (৮ ফেব্রুয়ারি) মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে সভাপতিত্বকালে সভার প্রারম্ভিক আলোচনায় এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি গণভবন থেকে এবং মন্ত্রিপরিষদ সদস্যরা সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ কক্ষ থেকে ভার্চুয়ালি বৈঠকে অংশ নেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। মাস্ক পরা, হাত ধোয়া অব্যাহত রাখতে হবে, মানে টিকা যারা নিয়েছে তাদেরকেও। এটা মনে করলে হবে না যে, আমি টিকা নিয়েছি, তাই, একদম নিরাপদ। সবাইকে সাবধানে থাকতে হবে।

বাইরে বের হলে মাস্ক ব্যবহার এবং কিছুক্ষণ পরপর হাত ধোয়া অব্যাহত রাখার জন্য দেশবাসীর প্রতি তার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ভ্যাকসিন নিলেও সবাইকে এই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।

নিবন্ধনকৃতরা যাতে টিকাদান কেন্দ্রে নিজেদের পরিবার পরিজন নিয়ে আসতে পারেন সেরকম একটি ব্যবস্থা চালু করার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব পরে বৈঠকের বিষয়ে সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে বলেন, টিকা নিয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন, গতকাল থেকে শুরু হওয়া টিকাদান কর্মসূচি আরেকটু রিল্যাক্স করতে হবে।

তিনি বলেন, ৪০ বছর পর্যন্ত রেজিস্ট্রেশন করা যাবে। গতকাল ৫৫ বছরের কম হলে কিন্তু টিকা দেওয়া হচ্ছিল না। সেজন্য আজ বলে দেওয়া হয়েছে ৪০ বছর পর্যন্ত হলে টিকা দেওয়া যাবে। এটা আজ থেকেই কার্যকর হবে।

প্রধানমন্ত্রীর উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি আরও বলেন, তরুণ যারা আছেন ধীরে ধীরে তাদের ওপেন করে দিতে হবে। যারা ফ্রন্টলাইন ফাইটার প্রয়োজন হলে তাদের ফ্যামিলিকেও ধীরে ধীরে রেজিস্ট্রেশন করে টিকা দিয়ে দিতে হবে।

খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, কেউ যদি রেজিস্ট্রেশন করতে ব্যর্থ হন, তিনি জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে টিকাদান কেন্দ্রে গিয়ে রেজিস্ট্রেশন করে টিকা দিতে পারবেন, সেই ব্যবস্থা করতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তবে, চেক করা হবে তিনি কেন রেজিস্ট্রেশন করেননি।

প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে টিকা প্রদানকে আরও সহজ করার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, ‘এখন আমার মনে হয় একটু ওপেন করে দিয়ে তাড়াতাড়ি দেওয়া যেতে পারে। কারণ, একবার দিয়ে আবার নেক্সট ডোজের জন্য তৈরি হতে হবে।’

তিনি টিকা গ্রহণকারীদের পরিচয়পত্র দেওয়ার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, একটা আইডি কার্ডের মতো থাকতে হবে, কারা করোনাভ্যাকসিন নিলো। এটা দেখিতে দ্বিতীয় ডোজটা নিতে হবে এবং সেই আইডেনটিটি তাদের কাছে থেকে যাবে। তাহলে কেউ বিদেশে গেলে তিনি যে করোনাভ্যাকসিন নিয়েছেন তার প্রমাণ থাকবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, টিকা নেওয়ার বিষয়ে গ্রামাঞ্চলে মানুষের মাঝে এখনও একটু দ্বিধা থাকলেও সেটা চলে যাবে ইনশাল্লাহ।

তিনি বলেন, করোনা টিকার সেকেন্ড ডোজের জন্য ৮ থেকে ১২ সপ্তাহ সময় লাগতে পারে। লন্ডনে সেভাবেই করা হচ্ছে এজন্য ১৫ দিনের মধ্যে সেকেন্ড ডোজের টিকা যে নিতে হবে তা নয়, অন্তত তিন মাস পর্যন্ত এ কার্যকাররিতা থাকে, সেকেন্ড ডোজ নেওয়া যায়। আমরা চাচ্ছি দ্রুতই সেকেন্ড ডোজটা দিয়ে দেওয়ার। আমি বলেছি একমাস বা দুই মাসের মধ্যে সেকেন্ড ডোজ দিয়ে এগুলো শেষ করার। কারণ, ভ্যাকসিনের যেন ডেট পেরিয়ে না যায় সেটাও দেখতে হবে।

তিনি বলেন, আমাদের বিভিন্ন বাহিনী এবং পরিচ্ছন্নকর্মীদের জন্য টিকা দেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যারা ফ্রন্ট লাইনার তাদের আগে দিতে হবে। এর মধ্যে চিকিৎসক বা চিকিৎসার সঙ্গে সম্পৃক্ত যারা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ অন্যান্য বাহিনীগুলো এবং যারা এই কোভিড মোকাবিলায় সক্রিয় ছিল তাদের আগে দিচ্ছি।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.