গ্লোব বায়োটেকে বৈঠকে তথ্যমন্ত্রী, ভ্যাকসিন আবিষ্কারে উপমহাদেশে দ্বিতীয় দেশ বাংলাদেশ

উপমহাদেশের দ্বিতীয় দেশ হিসেবে বাংলাদেশ বঙ্গভ্যাক্স নামে একটি করোনা ভ্যাকসিন আবিষ্কার করেছে বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

বৃহস্পতিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে বাংলাদেশের গ্লোব বায়োটেক এর গবেষণাগারে করোনাভাইরাসের সিঙ্গেল ডোজ ভ্যাকসিন আবিষ্কারক দলের প্রধান দুই বিজ্ঞানি কাকন নাগ ও নাজনীন সুলতানার সঙ্গে বৈঠকে শেষে এ কথা জানান তিনি।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমি কাকন নাগ ও নাজনীন সুলতানাকে অভিনন্দন জানাই। তারা একটি মৌলিক গবেষণা করে বঙ্গভ্যাক্স নামে করোনা ভ্যাকসিন আবিষ্কার করেছেন। যেটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) লিস্টেড করেছে। বাংলাদেশ মেডিক‌্যাল কাউন্সিলের চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।

‘উপমহাদেশে আমরা দ্বিতীয় দেশ হিসেবে এই করোনা ভ্যাকসিন আবিষ্কার করেছি। পৃথিবীতে খুব বেশি দেশ এই ভ্যাকসিন আবিষ্কার করতে পারেনি। মাত্র হাতেগোনা কয়েকটি দেশ আবিষ্কার করেছে, এর মধ্যে বাংলাদেশ একটি। এজন্য আমি খুব গর্বিত। কাকন নাগ ও নাজনিন সুলতানার এই সাফল্যে আমিসহ সারা বাংলাদেশ গর্বিত,’ বলেন হাছান মাহমুদ।

বৈঠকে স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদ, তথ্যসচিব খাজা মিয়া, সাবেক মুখ্যসচিব ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই অ‌্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট আবদুল করিম, গ্লোব বায়োটেকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভ্যাকসিন আবিষ্কারক দলের প্রধান কাকন নাগ, ভ্যাকসিন আবিষ্কারক দলের বিজ্ঞানী নাজনীন সুলতানা উপস্থিত ছিলেন।

বঙ্গভ্যাক্সের সর্বশেষ অবস্থা জানতে চাইলে গ্লোব বায়োটেকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভ্যাকসিন আবিষ্কারক দলের প্রধান কাকন নাগ বলেন, প্রায় তিন সপ্তাহ হয়েছে আমরা বিএমআরসিতে জমা দিয়েছি এথিক্যাল ক্লিয়ারেন্সের জন্য। এর আগে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যে উচ্চ পর্যায়ের টিম গঠন করেছিল সায়েন্টিফিক রিভিউ কমিটি, ওনারা একাধিকবার আমাদের ডাটা অ্যানালাইসিস করেছেন, অডিট করে সবকিছু সন্তোষজনক পাওয়া সাপেক্ষে আমাদের জিএমপি (গুড ম্যানুফ্যাকচারিং পলিসি) লাইসেন্স দিয়েছেন এই ভ্যাকসিন ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের জন্য, উৎপাদন করার জন্য। তার মানে হচ্ছে টেকনোলজিক্যালি ও সাইন্টিফিক্যালি এটা কার্যকরি এবং নিরাপদ এইটুকু প্রমাণ আমরা পেয়েছি, সেই স্বীকৃতি পেয়ে গেছি সরকারের কাছ থেকে।

‘এখন যেটুকু দরকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের শুরু হবে এজন্য ভলান্টিয়ার আছেন, এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করলে ভলান্টিয়ারদের ম্যানেজমেন্ট কী রকম হবে, এজন্য একটি পারমিশন দরকার বিএমআরসির এথিক্যাল রিভিউ কমিটির কাছ থেকে। সেটা এখনও হয়নি। বরং এটি মডার্নার ক্ষেত্রে মাত্র চারদিন লেগেছিল, আমাদের এখানে কিন্তু তিন সপ্তাহ হতে চলল, আমরা এখন পর্যন্ত কোনো রেসপন্স জানি না কখন আপডেট বা অনুমোদন পাবো। এটা পাওয়ার পরপরই আমরা ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু করতে পারবো,’- বলেন কাকন নাগ।

তিনি বলেন, ভ্যাকসিনটি সর্বাধুনিক পদ্ধতিতে তৈরি। এখন আমরা শুধু কপি ড্রাগ তৈরি করি। এটা আমাদের জন্য গৌরবের বিষয় যে এই প্রথম আমরা মৌলিক গবেষণার মাধ্যমে মৌলিক ডিজাইনের ভ্যাকসিন আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছি। এটি কোনো কপি ড্রাগ নয়। এটি পুরো দেশবাসীর গর্বের ব্যাপার।

‘ভ্যাকসিনের দুটো বৈশিষ্ট্যের কথা আমরা বলব, এটি খুব সম্ভবত সিঙ্গেল ডোজ ভ্যাকসিন হতে যাচ্ছে। এটি পৃথিবীর সবচেয়ে নিরাপদ ভ্যাকসিন হবে। এটা আমরা বলছি ডাটা সাপেক্ষে। আমরা যে ট্রায়ালগুলো করেছি সেটার সাপেক্ষেই এই কথাগুলো বলছি। আমরা আশা করছি, দ্রুত সময়ের মধ্যে এই মুজিববর্ষেই এটি দেশবাসীর কাছে নিয়ে যেতে পারবো,’- বলেন তিনি।

নাজনীন সুলতানা বলেন, ভারতের বায়োকোন থেকে একজন সিনিয়র ডিরেক্টর আমাদের ফোন করে বলেছেন, তারা বঙ্গভ্যাক্স নিতে চায়। আমরা পাবলিকেশনের জন্য জমা দিয়েছি, সেগুলো ওনারা দেখেছেন, পড়েছেন, বলেছেন, তোমরা এতো সূক্ষ্মভাবে ডাটা কাজ করিয়েছো, আমরা বিশ্বাস করতে বাধ্য। বঙ্গভ্যাক্স পৃথিবীতে সুপরিচিতি পাবে। বাংলাদেশ যে এতো এগিয়ে গেছে, নিকটবর্তী দেশ হিসেবে আমার গর্ব বোধ করি।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.