‘কেরানি নয়, দক্ষ ও স্মার্ট নাগরিক তৈরি করবে নতুন শিক্ষাক্রম’

কেরানি নয়, দক্ষ ও স্মার্ট নাগরিক তৈরি করতে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

সোমবার সকালে রাজধানীর সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজে বঙ্গবন্ধু সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ ২০২৩- এর জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এ কথা জানান।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, ঔপনিবেশিক শাসন ব্যবস্থায় শিক্ষা ব্যবস্থা হলো কেরানি তৈরি শিক্ষা ব্যবস্থা। স্বাধীন দেশের নাগরিকের জন্য সেটি নয়। কেরানি তৈরির শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে প্রতিটি মানুষের সৃজনশীলতার পরিপূর্ণ বিকাশ অনেক সীমিত করে। কাজেই আমরা এখন বঙ্গবন্ধুর সেই দেখানো পথে শিক্ষা ব্যবস্থায় একটা আমূল পরিবর্তন আনার চেষ্টা করেছি। বঙ্গবন্ধু ড. কুদরৎ-ই-খুদা শিক্ষা কমিশন করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর সেই সময় ড. কুদরৎ-ই-খুদা একটি শিক্ষা নীতি তৈরি করেছিলেন। সেই শিক্ষা নীতিটি বাস্তবায়ন করে যেতে পারেননি বঙ্গবন্ধু। ২০১০ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যার হাতে আরেকটি শিক্ষা নীতি করেছি, সেটি ড. কুদরৎ-ই-খুদার সেই শিক্ষানীতির অনুসরণ করেই।’

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষাকে এখন রুপান্তর ঘটিয়ে যে জায়গায় যাওয়ার চেষ্টা হচ্ছে, সেই রুপান্তর ঘটবার জন্য নতুন শিক্ষাক্রম তৈরি করেছি। সারাবিশ্ব এখন শিক্ষায় রুপান্তর ঘটিয়ে নতুন শিক্ষাক্রম তৈরির চেষ্টা করছে, বাংলাদেশ সেখানে অগ্রগামী অবস্থানে রয়েছে। আমরা ২০২৩ সালে নতুন শিক্ষাক্রমের বাস্তবায়ন শুরু করে দিতে পেরেছি। এ বছর মাধ্যমিকে ষষ্ট ও সপ্তম শ্রেণিতে এবং প্রাথমিকে প্রথম শ্রেণিতে এর বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। ২০২৫ সাল নাগাদ আমরা প্রাক-প্রাথমিক থেকে পুরো শিক্ষাক্রমটি বাস্তবায়ন করবো। নতুন শিক্ষাক্রমের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা সৃজনশীলতার চর্চা করতে শিখবে। এর মধ্যদিয়ে আমরা দক্ষ ও স্মার্ট নাগরিক তৈরি করতে পারবো।’

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আগের সেই ব্যবস্থায় একটি কারখানা থেকে যেনো একই রকম মানুষ তৈরি হচ্ছিল। যে শিক্ষার্থীর যেদিকে মেধা আছে, সৃজনশীলতা আছে সেই শিক্ষার্থীকে সেদিকে আরেকটু যত্ন নিয়ে পুরোপুরি বিকশিত করবার সুযোগ আছে নতুন এই শিক্ষাক্রমে। আমাদের জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পারবো, এ দেশটিকে নিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন আমরা বাস্তবায়ন করতে পারবো।’

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বঙ্গবন্ধু সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ২০২৩-এ সারাদেশের আটটি বিভাগ এবং ঢাকা মহানগরী থেকে ১৩৫ জন শিক্ষার্থী নির্বাচিত হয়েছে। এসব শিক্ষার্থীরা আজ জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে। পাঁচটি ক্যাটাগরিতে প্রত্যেকটিতে তিন জন করে ১৫ জন সেরা মেধাবী নির্বাচিত হবে।

বঙ্গবন্ধু সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ ২০২৩ এর উদ্বোধী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান। অনুষ্ঠানে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. কামাল হোসেন, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) অধ্যাপক শাহেদুল খবির চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

এক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী জানান, চলমান এসএসসি ও সমমানের তত্ত্বীয় পরীক্ষা শেষ হলেই স্থগিত পরীক্ষা নেওয়া হবে।

ঘূর্ণিঝড় ‘মোকা’ উদ্ভূত পরিস্থিতিতে রোববার চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড, কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড, বরিশাল শিক্ষা বোর্ড, বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড ও বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীন অনুষ্ঠিতব্য পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। আর সোমবার অনুষ্ঠিতব্য দেশের সব বোর্ডের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়।

প্রসঙ্গত, আগামী ২৩ মে নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের এসএসসির তত্ত্বীয় পরীক্ষা শেষ হবে। একই দিন শেষ হবে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের দাখিল তত্ত্বীয় পরীক্ষা। এ ছাড়া কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের এসএসসি (ভোকেশনাল) ও দাখিল (ভোকেশনাল) তত্ত্বীয় পরীক্ষা শেষ হবে।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.