‘এক আসনে জয়ী দলের নেতা প্রধানমন্ত্রী ও প্রেসিডেন্ট’

তীব্র গণবিক্ষোভের মুখে গত ১১ মে শ্রীলঙ্কার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দ রাজাপাকসে পদত্যাগ করতে বাধ্য হলে দেশটিতে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন অনিবার্য হয়ে যায়। কিন্তু, কে হবেন নতুন প্রধানমন্ত্রী তা নিয়ে বিভক্ত হয়ে পড়ে সেখানকার রাজনৈতিক দলগুলো। এমতাবস্থায় সদ্য সাবেক (তৎকালীন) প্রেসিডেন্ট গোটাবাইয়া রাজাপাকসের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টির (ইউএনপি) নেতা রণিল বিক্রমাসিংহে।

কিন্তু, অর্থনৈতিক সংকটের মুখে গণ–আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিলেন দেশটির সাধারণ মানুষ। মঙ্গলবার রাতে প্রেসিডেন্ট গোটাবাইবায়া রাজাপাকসে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহেকেই শ্রীলঙ্কার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে জানিয়ে দেশটির পার্লামেন্টের স্পিকার বলেন, প্রেসিডেন্ট গোটাবাইয়া তাকে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহেকে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট নিয়োগ দিতে। সংবিধানের ৩৭ ধারার ১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী এই নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

কিন্তু, রনিল বিক্রমাসিংহকে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিয়োগের ব্যাপারে সরাসরি কিছু বলেননি গোটাবাইয়া। তাছাড়া, বর্তমান পার্লামেন্টে নিজ দল ইউএনপি-র একমাত্র প্রতিনিধি কেবল রনিল বিক্রমাসিংহে। সেই রনিলকে প্রথমে প্রধানমন্ত্রী এবং এখন আবার প্রেসিডেন্ট বানানোয় বেজায় চটেছেন সংসদে প্রধান বিরোধী দলীয় নেতা এবং সাবেক মন্ত্রী, সামাগি জন বালাবেগায়া দলের সাজিদ প্রেমাদাসা।

বুধবার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে রনিলকে নিয়োগের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি লিখেছেন, “এক আসন বিশিষ্ট একজন এমপিকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হলো। এখন সেই একই ব্যক্তিকে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এটাই রাজাপাকসের গণতন্ত্রের নমুনা। কী এক প্রহসন। কী এক ট্র্যাজেডি।”

এর কিছুক্ষণ আগে দুটি ভিন্ন টুইটে তিনি লিখেন, “প্রধানমন্ত্রী তখনই ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হতে পারেন যখন প্রেসিডেন্ট তাকে এই পদে নিয়োগ করেন, অথবা প্রেসিডেন্ট পদটি শূন্য থাকে, অথবা যদি প্রধান বিচারপতি স্পিকারের সাথে পরামর্শ করে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে প্রেসিডেন্ট নিজ দায়িত্ব পালমে অক্ষম। এসব কারণের যে কোনো একটি ছাড়া প্রধানমন্ত্রী প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবেন না এবং কারফিউ বা জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে পারবেন না।”

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.