রাশিয়ায় অস্ত্র পাঠালে উত্তর কোরিয়াকে ‘মূল্য’ দিতে হবে

রাশিয়া-উত্তর কোরিয়ার মধ্যে অস্ত্র সরবরাহ চুক্তির বিষয়ে কঠোর সতর্কবার্তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। রাশিয়ায় অস্ত্র বিক্রি না করতে পিয়ংইয়ংকে সতর্ক করে যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, উত্তর কোরিয়া যদি ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য রাশিয়ার কাছে অস্ত্র বিক্রি করে তবে তার জন্য দেশটিকে ‘মূল্য’ দিতে হবে। মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান এ কথা বলেছেন। খবর-আলজাজিরা

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বাস করে উত্তর কোরিয়া ও রাশিয়ার মধ্যে অস্ত্র সরবরাহের আলোচনা ‘সক্রিয়ভাবে এগিয়ে চলেছে।’ হোয়াইট হাউসের শীর্ষস্থানীয় এ কর্মকর্তা বলেন, একটি সার্বভৌম রাষ্ট্রের কোনো অঞ্চল দখলের জন্য রাশিয়াকে অস্ত্র সরবরাহ করা উত্তর কোরিয়ার জন্য ভালো কিছু বয়ে আনবে না। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে এজন্য মূল্য দিতে হবে।

এর আগে সোমবার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসনের অপর একজন কর্মকর্তা বলেন, ওয়াশিংটন মনে করছে, উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করবেন।

তবে রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্রের দাবির বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। দেশটি জোর দিয়ে বলছে যে, দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের মধ্যে সম্ভাব্য সরাসরি আলোচনার বিষয়ে কিছু বলার নেই।

সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের এক কর্মকর্তা সম্প্রতি জানান যে, উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং-উন চলতি মাসে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দেখা করতে রাশিয়ায় যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন। ইউক্রেন যুদ্ধের সমর্থনে মস্কোকে উত্তর কোরিয়ার অস্ত্র সরবরাহের সম্ভাবনা নিয়ে দুই নেতা আলোচনা করবেন বলে তিনি জানিয়েছেন। তবে বৈঠকটি কোথায় হবে তা নিয়ে নিশ্চিত কোনো তথ্য জানা যায়নি।

এই খবর অন্যান্য মার্কিন গণমাধ্যম ফলাও করে প্রচার করলেও কোনো প্রতিবেদনে তাৎক্ষণিকভাবে উত্তর কোরিয়া বা রাশিয়ার পক্ষ থেকে মন্তব্য পাওয়া যায়নি। এক সূত্রের বরাত দিয়ে নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, কিম সম্ভবত সাঁজোয়া ট্রেনে ভ্রমণ করতে পারেন। হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দুই দেশের মধ্যে অস্ত্র সমঝোতা ‘অগ্রসর’ হওয়ার বিষয়ে তারা তথ্য পেয়েছেন। এরপরই রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে সম্ভাব্য বৈঠকের বিষয়টি সামনে আসে।

ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের মুখপাত্র জন কিরবি জানিয়েছেন, রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু সম্প্রতি উত্তর কোরিয়া সফরের সময় ‘পিয়ংইয়ংকে রাশিয়ার কাছে গোলাবারুদ বিক্রি করার বিষয়ে সম্মত করার’ চেষ্টা করেছিলেন। সভায় প্রদর্শন করা অস্ত্রের মধ্যে ‘হাসং’ নামের আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) অন্তর্ভুক্ত ছিল। কোভিড মহামারির পর ওই প্রথম কিম বিদেশি অতিথিদের জন্য তার দেশের দরজা খুলে দিয়েছিলেন।

করবি বলেন, পুতিন ও কিম তখন থেকে ‘তাদের দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে চিঠিপত্র আদান-প্রদান করছেন। আমরা উত্তর কোরিয়াকে রাশিয়ার সাথে তার অস্ত্র আলোচনা বন্ধ করতে আহ্বান জানিয়েছি এবং পিয়ংইয়ং রাশিয়াকে অস্ত্র সরবরাহ বা বিক্রি না করার ব্যাপারে সাধারণ মানুষকে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তা মেনে চলার আহ্বান জানাই।

তিনি তার বিবৃতিতে উত্তর কোরিয়াকে ডিপিআরকে হিসেবে উল্লেখ করেন। যার পূর্ণাঙ্গ রূপ হলো ডেমোক্রেটিক পিপলস রিপাবলিক অব কোরিয়া অর্থাৎ গণতান্ত্রিক গণপ্রজাতন্ত্রী কোরিয়া। উত্তর কোরিয়া রাশিয়াকে অস্ত্র সরবরাহ করলে যুক্তরাষ্ট্র দেশটির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে বলে তিনি হুঁশিয়ারি দেন।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.