জন্মদিনে গভীর শ্রদ্ধা ও শুভেচ্ছা আকরম স্যারকে

ড. আবেদিন কাদের, নিউ ইয়র্ক থেকে

আজ অধ্যাপক সৈয়দ আকরম হোসেনের জন্মদিন। তাঁকে এই দিনে গভীর শ্রদ্ধা জানাই। প্রার্থনা করি তিনি দীর্ঘায়ু হন। তিনি আমার ক্লাসরুমের শিক্ষক নন, কিন্তু তিনি আমার নমস্য শিক্ষক হিসেবে, বিশ্ববিদ্যালয় পাড়ায় তাঁর বাসভবনের ড্রয়িংরুমে বক্তৃতারত শিক্ষক হিসেবে। অনেকদিন আমি সেখানে আশির দশকের গোড়ায় তন্ময় হয়ে তাঁর কথা শুনতাম ঘণ্টার পর ঘণ্টা! অনেক শিখেছি তাঁর কাছে, বিশেষ করে রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে। একদিক থেকে আমার মতো হতভাগা খুব বেশি নেই, আমার তেমন বেশি সংখ্যক প্রিয় শিক্ষক নেই স্কুল বা কলেজ ছাড়ার পর। কারণ আমি বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে, মানে জাহাঙ্গীর নগর বা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, কোথাও ক্লাসরুমে খুব একটা যাই নি। অনেক পণ্ডিত শিক্ষক আমার ছাত্রজীবনে ছিলেন, কিন্তু আমি তাঁদের বক্তৃতা শুনতে ক্লাসরুমে যাই নি, আমার আলস্য আর আড্ডা-প্রিয়তার কারণে। সেদিক থেকে অধ্যাপক আকরম হোসেনকে ভীষণ মনে পড়ে তাঁর কাছে অনেক শিখেছি বলে। তাঁর মাত্র একটি বই, অবশ্যই খুব উল্লেখযোগ্য বই, তাঁর পি এইচ ডি র অভিসন্দর্ভ পড়ে মুগ্ধ হয়েছিলাম এবং সংবাদ সাময়িকীতে ‘৮১ সালে দীর্ঘ রিভিউ লিখেছিলাম। স্যার খুব খুশি হয়েছিলেন। রবীন্দ্রনাথের উপন্যাস নিয়ে এটি একটি সত্যি উল্লেখযোগ্য গবেষণা কাজ। কিন্তু স্যারের বিশ্লেষণ যদিও একটু বেশি মাত্রায় মার্কসের তত্ত্ব দ্বারা প্রভাবিত, কিন্তু দারুণ ধারালো নিঃসন্দেহে! স্যার আমাকে ‘৮১ সালে একটি উপদেশ দিয়েছিলেন, ‘যেহেতু আপনি লেখেন, তাই বাংলাটা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে পড়ে নিন, এম এ টা করে নিন বাংলায়, খুব কাজে দেবে।’ জীবনে কোন অধ্যাপকের মূল্যবান কোন উপদেশই শুনি নি, এটাও শুনি নি। আজ বেশ কয়েক দশক ধরে কথাটা ভীষণ মনে পড়ে! কী মারাত্মক ভুলই করেছি! আসলে কিছুই শেখা হল না জীবনে, কিছুই করা হল না, একমাত্র অসংখ্য ভুল ছাড়া! আজ জন্মদিনে গভীর শ্রদ্ধা ও শুভেচ্ছা জানাই আকরম স্যারকে। আমার গভীর শ্রদ্ধেয় শিক্ষকদের একজন!

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.