×

  • নিউজ ডেস্ক

    প্রকাশিত : তারিখ - ২০২৫-০৪-০৮, সময় - ০৮:২৪:১৮

যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি শুল্ক বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের অর্থনীতিতে নতুন করে চাপ তৈরি হয়েছে। আন্তর্জাতিক ক্রেডিট রেটিং সংস্থা মুডিসের এক বিশ্লেষণে বলা হয়, এই সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশের মতো রপ্তানিনির্ভর অর্থনীতিবিশিষ্ট দেশগুলোর ব্যাংক খাত সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ, ভিয়েতনাম ও থাইল্যান্ডের ব্যাংকগুলোতে ঋণমানের অবনতি, ঋণপ্রবাহে স্থবিরতা এবং আর্থিক খাতে অস্থিরতা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে তৈরি পোশাক খাত এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর এই চাপ বেশি পড়বে। এমন পরিস্থিতি মোকাবিলায় ব্যাংক খাত ও অর্থনীতিকে চাঙা করতে নীতিনির্ধারকদের আরও সক্রিয় হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে সংস্থাটি।

২ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অধিকাংশ বাণিজ্য অংশীদারের জন্য আমদানি শুল্কে ব্যাপক বৃদ্ধির ঘোষণা দেন। মুডিসের গতকাল (৭ এপ্রিল) প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে (এপিএসি) এই শুল্ক বৃদ্ধির প্রভাব ব্যাংকগুলোর জন্য নেতিবাচক, যদিও ক্ষতির মাত্রা দেশভেদে ভিন্ন। এতে বিনিয়োগকারী ও ভোক্তাদের মধ্যে অনিশ্চয়তা বাড়বে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড ও বাংলাদেশের অর্থনীতি আমেরিকান রপ্তানির ওপর বেশি নির্ভরশীল হওয়ায় এ তিন দেশের ব্যাংক সবচেয়ে বেশি নেতিবাচক প্রভাবের মুখোমুখি হবে। এই দেশগুলোর যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি কমে গেলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ব্যাহত হবে, যার প্রভাব ব্যাংকঋণের প্রবৃদ্ধি ও গুণগত মানের ওপর পড়বে।

বাংলাদেশের অর্থনীতি ব্যাপকভাবে তৈরি পোশাক (আরএমজি) রপ্তানির ওপর নির্ভরশীল, যা দেশের মোট রপ্তানির ৮৫ শতাংশের বেশি। যুক্তরাষ্ট্রে আরোপিত উচ্চ শুল্কের ফলে বাংলাদেশের পোশাক খাত ভারতের মতো প্রতিদ্বন্দ্বী দেশের তুলনায় প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়বে। এরই মধ্যে রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতার কারণে বাংলাদেশের পোশাক খাতে সরবরাহ ব্যবস্থায় বিঘ্ন ও শ্রমিক সমস্যা তৈরি হয়েছে। প্রায় ২০ শতাংশ ব্যাংকের ঋণের ওপর দাঁড়ানো আরএমজি ও সংশ্লিষ্ট খাত এখন ঝুঁকিতে রয়েছে।

মুডিস জানিয়েছে, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড ও বাংলাদেশের পণ্যের ওপর বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে শুল্কহার অত্যন্ত বেশি। এর মধ্যে ভিয়েতনাম ও থাইল্যান্ড অভ্যন্তরীণ মূল্য সংযোজনের অনুপাতে রপ্তানির জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ওপর অধিক নির্ভরশীল। ফলে এই দুই দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে বড় ধাক্কা লাগবে এবং এর প্রভাব ব্যাংক খাতে গিয়ে পড়বে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা।

এমনিতেই বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতের পরিবেশ দুর্বল। এর ওপর শুল্ক বৃদ্ধির কারণে চলমান অর্থনৈতিক মন্থরতা আরও প্রকট হবে, যা ব্যাংক খাতের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করবে।

নিউজটি শেয়ার করুন



এ জাতীয় আরো খবর..
ইউটিউবে আমরা...
ফেসবুকে আমরা...