নতুন ভবন পাচ্ছে ১০ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এতে শ্রেণিকক্ষ থাকবে ৯৫ হাজার। আর নতুন এই শ্রেণিকক্ষের সুবিধা পাবে ৯ লাখ ১৩ হাজার ৫৭০ শিক্ষার্থী। এছাড়া ১২৩টি নতুন ছাত্রাবাস, ৫৫৮টি ছাত্রীনিবাসও পাবে শিক্ষার্থীরা। এছাড়া অধ্যক্ষের জন্য বাসভবন, শিক্ষার্থীদের জন্য জিমনেশিয়াম, অডিটোরিয়ামও থাকবে। ২০২৩ সালের মধ্যেই এসব কাজ সমাপ্ত হবে বলে জানিয়েছে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর (ইডিই)।
শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, মাধ্যমিক শিক্ষায় ভৌত অবকাঠামোর উন্নয়নে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নতুন ভবন জরুরি। প্রয়োজন বিবেচনা করে এসব প্রতিষ্ঠানের তালিকা করা হয়েছে। স্থানীয় সংসদ সদস্যরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে নতুন ভবন প্রয়োজন এমন তালিকা দিয়েছেন। এছাড়া শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকেও সরেজমিনে গিয়ে প্রতিষ্ঠানের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এসব তালিকার ভিত্তিতেই ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে।
তথ্য অনুযায়ী, এ কাজের জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের আওতায় ৩১টি প্রকল্প ও পাঁচটি কর্মসূচি চলমান রয়েছে। এতে ব্যয় হবে ৩৯ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা। আর কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের আওতায় ৯টি প্রকল্প ও পাঁচটি কর্মসূচি রয়েছে। এতে ব্যয় হবে ৩৯ হাজার ২৯১ কোটি টাকা। দুই বিভাগের এসব অবকাঠামো নির্মাণে সরকারের ব্যয় হবে ৭৮ হাজার ৫৩৮ কোটি টাকা।
৫০টি প্রকল্প ও কর্মসূচির আওতায় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগে ৮৪ হাজার ৬৪৪টি ক্লাসরুম, ৯৩টি ছাত্রাবাস, ১৫১টি ছাত্রীনিবাস, ছয়টি ডরমেটরি, আর কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগে ৯ হাজার ৪৪৯টি ক্লাসরুম, ৩০টি ছাত্রাবাস, ৪০৭টি ছাত্রীনিবাস, ৩৬৩টি ডরমেটরি, আটটি টিচার্স কোয়ার্টার, ৩৮টি স্টাফ কোয়ার্টার রয়েছে।
শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী বুলবুল আখতার বলেন, বর্তমান সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভবন নির্মাণ ও আসবাবপত্র সরবরাহকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। দেশে আর কোনো জরাজীর্ণ ভবন থাকবে না এমন লক্ষ্য নিয়েই কাজ করছে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর। এরই অংশ হিসাবে আগামী ২০২৩ সালের মধ্যেই চলমান ১০ হাজার ভবনের কাজ সমাপ্ত হবে। ভবনের কাজ শেষ হলে শিক্ষার্থীরা সুন্দর পরিবেশ পাবে। তিনি জানান, করোনায় ভবন নির্মাণে সমস্যা হয়নি। ২০১৯-২০ অর্থবছরে কাজের গড় খরচের শতকরা হার প্রায় ৯৮ ভাগ।
তথ্য অনুযায়ী, প্রতি বছর রাজস্ব খাত বিবেচনায় স্থানীয় সংসদ সদস্যদের কাছ থেকে তালিকা নিয়ে ভবন নির্মাণ ও সংস্কার করা হচ্ছে। প্রতি বছর ১ হাজার ৫০০ নতুন ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন সময় জরুরি ভিত্তিতেও ভবন নির্মাণ ও সংস্কার কাজ করা হচ্ছে।
তথ্য অনুযায়ী, যথাসময়ে কাজ শেষ করতে নানামুখী পদক্ষেপও হাতে নেওয়া হয়েছে। সৃষ্টি করা হয়েছে নতুন পদ। আরো জনবল নিয়োগের মাধ্যমে শূন্যপদ পূরণ করা হয়েছে এবং হচ্ছে। এছাড়া মাঠ পর্যায়ের কাজের তদারকিও বাড়ানো হয়েছে।
পাবলিক সার্ভিস কমিশন থেকে নন-ক্যাডার হিসাবে ইতিমধ্যে ৮৫ জন সহকারী প্রকৌশলী নিয়োগ চূড়ান্ত হয়েছে। এছাড়া আরো সমপর্যায়ের ৫৬ জন প্রকৌশলী নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। আর উপসহকারী প্রকৌশলী নিয়োগ হচ্ছে ৩৫০ জন। এছাড়া তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির পর্যায়ের প্রায় ১ হাজার ২০০ কর্মচারী নিয়োগের সার্কুলার দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, দেশের প্রতিটি জেলায় নির্বাহী প্রকৌশলীর অফিস চালু করা হয়েছে। পদসংখ্যাও বৃদ্ধি করা হয়েছে। এর আগে ২৭ জেলায় নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় ছিল। নতুন করে আরো ৩৮ জেলায় নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় চালু হয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কার্যালয় পাঁচটি থেকে ৯টি করা হয়েছে।